চড়াই পাখী

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

গৃহচটক শব্দের অর্থ হল চড়ুই পাখী চটক> চড> চডাই> চড়াই চটকী> চডহ> চডুই> চড়ুই  । বাঙলায় চটই ও চড়ুই দুটি শব্দই চলে । আমাদের পশ্চিমরাঢ়ের গ্রামের মানুষ অনেকেই চটইবলে থাকে । চটই শব্দটি চটক শব্দ থেকে এসেছে । চড়ই কে বিহারের মগহী ভাষায় বলা হয় গর্বৈয়া, মৈথিলী ভাষায় গর্বৈয়াও চলে ফুদ্দিও চলে । ভোজপুরীতে বলা হয় ফুরগুদ্দি ।অঙ্গিকা ভাষায় টিকটিকিকে বলে টিকটিকিয়া ।

চটক পাখী দুইভাগে বিভক্ত  যারা পাকা বাড়িতে কার্নিশে ঘর বানায়।  তারা হল গৃহচটক বা চড়ুই পাখী । চড়ুই পাখী পায়রার মতো খড়কুটো দিয়ে ভালো ঘর তৈরী করতে পারে না কিন্তু অধিকাংশ পাখী পারে ।

মানুষের লালসার শিকার বন-চড়ুই ঃ চড়ুই পাখীর যে প্রজাতিটি ঘরে থাকে না, তারা বাস করে ছোট ছোট গাছে ধানক্ষেতের কাছে পিঠে । এদের প্রধান কাজ হল ধান বা প্রধান ফসল কর্ত্তিত হয়ে যাওয়ার পর জমিতে পড়ে থাকা শস্যকনাগুলি খঁুটে খঁুটে খাওয়া । বাঙলায় এই জাতীয় চড়ুই খুবই কম । পশ্চিম দেশ থেকে কিছু আসে শীত কালে বাঙলায় ধান কাটা হয়ে যাওয়ার পরে । থাকে ধান ক্ষেতের কাছাকাছি ছোট ছোট গাছে । দিন পনেরো-বিশ এদেশে থাকে, তারপর পশ্চিম দেশে চলে যায় । বাঙলার গ্রামের মানুষ এদের বলে বন চড়ুই । লোভী লোকেরা বলে থাকে, এদের মাংস নাকি সুস্বাদু।  তাই আড়াল থেকে জাল ফেলে ধরে  এদের হত্যা করে । এদের সংখ্যা ক্রমশঃ কমে আসছে । এরা এতই ছোট যে ১০০টা পাখী মারলেও একটা মানুষের পেট ভরবে না । মানুষের হাত থেকে এদের বাঁচানো দরকার । উত্তর ভারতে এই পাখীটিকে বলা হয় বৈগরী ।ভোজপুরী ভাষাতেও বৈগরীই চলে ।

জৈসন ডরেলী বাজ সে বৈগরী

(---শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের আমাদের প্রতিবেশী পশু ও পক্ষী গ্রন্থ থেকে)