ঋগ্বেদীয় ভাষায় ‘ডপ’ একটি প্রাচীন ধাতু৷ সংস্কৃতে এর মানে জড়ো করা, জমিয়ে রাখা, স্তূপাকার করা প্রভৃতি৷ যে বিরাট পুরুষের মধ্যে গুণ-সমাবেশ দেখে মানুষ অবাক বিস্ময়ে বিস্ফারিত নেত্রে তাকিয়ে থাকত---লত, এঁর গুণের শেষ নেই, এঁর এত গুণ যে এঁকে গুণাতীত লাই সঙ্গত, ত্রিভুবনের সব গুণের এই একের মধ্যে সমাবেশ ও সমাহার ঘটেছে---তাই এই বিরাট পুরুষের জন্যে ‘ডপ্’ ধাতু +‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ড’ শব্দ পাচ্ছি তার মানে শিব৷ কবি পদ্মদন্ত’ লছেন---
‘‘অসিতগিরিসমং স্যাৎ কজ্জলং সিন্ধুপাত্রে৷
সুরতরুবরশাখা লেখনীপত্রমুর্বী৷৷
লিখতি যদি গৃহীত্বা সারদা সর্বকালম্৷
তথাপি তব গুণানামীশ পারং ন যাতি৷’’
যদি হিমালয় পর্বতের মত বিরাটাকার একটি কালির ড়ি ink-tablet) হয়, আর মহাসাগরের মত বিরাটাকার একটি মস্যাধার (দোয়াত) হয় আর কল্পনার স্বর্গলোকের সুবিশাল পারিজাত তরুশাখা যদি লেখনী (কলম) হয়, আর এই সুৃহৎ ধরাপৃষ্ঠ Lithosphere) যদি কাগজ হয়, আর এই দোয়াত, কালি,কলম, কাগজ নিয়ে সরস্বতী যদি অনন্ত কাল ধরে লিখতে থাকেন তবুও হে শিব, তোমার গুণরাজি লিখে শেষ করা যাবে না৷
শঙ্করাচার্য লেছেন---
‘‘প্রভুমীশমনীশ মশেষগুণং৷
গুণহীন মহেশগণাভরণম্৷৷’’
‘‘হে প্রভু তুমি ঈশ, কিন্তু তোমার কোন ঈশ নেই অর্থাৎ তুমি অনীশ৷ তোমার গুণের শেষ নেই৷ তোমার গুণের পরিমাপ করতে পারছি না লে বলছি তুমি গুণহীন৷ হে প্রভু, তুমি বিশ্বের সমস্ত অবহেলিত জীবের মর্যাদাবোধের প্রতীক---অবহেলিত জীবকুল তোমার অলঙ্কার ---তোমার আভরণ৷’’
তাহলে ঝলে ‘ডপ’ ধাতুর উত্তর ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ড’ শব্দ পাচ্ছি সেই ‘ড’ এর একটি অর্থ শিব কেন হ’ল! (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘু নিরক্ত থেকে সংগৃহীত)