কার্ত্তিক সম্বন্ধে অনেকের অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে৷ লোকের ধারণা কার্ত্তিক গঙ্গা নদীর পুত্র৷ জন্মের পর শিশু কার্ত্তিককে ছটি নক্ষত্র স্তন্য পান করিয়েছিলেন বলে তার নাম হয় ষড়ানন৷ অর্থাৎ কার্ত্তিকের ছটি মুখ৷ পুরাণের উল্লেখ আছে তার ছটি মুখ দিয়ে ছটি নক্ষত্রের স্তন্য পান করেছিলেন৷ মোদ্দা কথা কার্ত্তিকের ছটি মুখ৷ কেউ বলেন কার্ত্তিক পাবর্তীর পুত্র আবার কেউ ভাবেন কার্ত্তিক দুর্গার সন্তান৷ এ প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি তাঁর ‘‘নমঃ শিবায় শান্তায়’’গ্রন্থে পরিষ্কার বলেছেন---‘‘কার্ত্তিক শিবের ছেলে কিন্তু পার্বতীরও কেউ নয়, আর পুরানোক্ত দুর্গাদেবীরও কেউ নয়৷ তবে শিবের স্ত্রী গঙ্গার পুত্র ও সে নদী গঙ্গার পুত্রও নয়, ও তার মানবীয় আধারে ছয় মুখ হতে পারে না৷ সে ষড়ানন হতে পারে না এক মুখই হবে তার৷’’ অনেকের ধারণা কার্ত্তিক অবিবাহিত৷ এ প্রসঙ্গে আনন্দমূর্ত্তিজী বলেছেন---‘‘একথা ভুল৷ কার্ত্তিকের স্ত্রীর নাম ছিল দেবসেনা৷ কার্ত্তিক হচ্ছে তা হলে দেবসেনার পতি৷ লোকে ভুল করে ভাবে দেবসেনা পতি মানে দেবতাদের সেনাপতি৷ ...স্ত্রীর নাম দেবসেনা৷ কার্ত্তিক সেনাপতি নয়, দেবতাদের সেনাপতিও নয়৷’’
এবার জানা যাক কে ছিলেন এই দেবসেনা৷ অনেকে বলেন, কার্ত্তিকের স্ত্রী হলেন ষষ্ঠী৷ এখানেও একটু গোলমেলে ধারণা আছে৷ বরাহপুরাণে বলা হয়েছে ষষ্ঠী তিথিতে কার্ত্তিক দেবসেনাকে বিবাহ করেছিলেন৷ তাই ষষ্ঠী ও দেবসেনা অভিন্ন হয়ে দেবসেনা ষষ্ঠীদেবীতে পরিগণিত হলেন৷ সব পুরাণেই ষষ্ঠী দেবীর অপর নাম দেবসেনা৷ নিঃসন্তান দম্পত্তি সন্তান কামনায় কার্ত্তিক মাসের সংক্রান্তিতে কার্ত্তিকের পুজো করে থাকেন৷ কার্ত্তিক বালক ও শিশুর রক্ষক ও পুত্রদাতা হিসেবে পূজিত হন৷ কার্ত্তিকের কৃপায় অপুত্র পুত্র লাভ করে, নির্ধন ধনলাভ করে--- একথার উল্লেখ আছে বরাহপুরাণে৷ শুধু তাই নয় যারা স্তুতি পাঠ করেন তাদের ঘরে বালকদের কল্যাণ হয় ও আরোগ্য বিরাজ করে৷
জেনে রাখা ভাল, চীন ও জাপানেও কার্ত্তিক হানা দিয়েছিলেন৷ জাপানে কার্ত্তিকের নাম কুমার-তেন৷ তাঁর আরেকটি জাপানী নাম ইদা-তেন৷
- Log in to post comments