জাপানী সরস্বতী

লেখক
প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

জাপানীদের ধমকর্ম আচার অনুষ্ঠান শিক্ষাদীক্ষা দেবদেবীর  রূপ কল্পনায় ভারতীয় প্রভাব যথেষ্ট৷ ভারতের দেবদেবীরা চীন দেশের মধ্য দিয়ে জাপানেও কেউ কেউ প্রবেশ করেছেন৷ হিন্দুদের মতো জাপানীরাও ব্রহ্মার পূজা করেন৷ তাদের ব্রহ্মার নাম বেন-তেন৷ জাপানে দ্বিভূজ ব্রহ্মার মন্দির অনেক আছে৷ ব্রহ্মা চীন দেশের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে জাপানে প্রবেশ করেছিলেন৷

জাপানে আমাদের ব্রহ্মা যেমন আছেন তেমনি ব্রহ্মানী অর্থাৎ সরস্বতীও আছেন৷ জাপানে সরস্বতীর নাম ‘বেন-জই-তেন’৷ জাপানে অনেক সরস্বতী মন্দির ও আছে৷ জাপানী প্রথা অনুসারে সরস্বতী মন্দির সাধারণতঃ পুকুর, নদী বা সমুদ্রের ধারে নির্মিত হয়৷ জাপানী সরস্বতী নরমুখ বিশিষ্ট ড্রাগনের ওপর সুন্দর ভঙ্গীতে দণ্ডায়মান৷ সম্মূখে থাকেন নৃত্যরত উপাসক৷ দেবীর হাতে আমাদের সরস্বতীর মতই বিউয়া অর্থাৎ বীণা থাকে৷ দেবীর কেশ বিন্যাস চমৎকার৷ দেবী সাধারণতঃ দ্বিভূজা৷ তবে অষ্টভুজা সরস্বতী ও জাপানে দেখা যায়৷ জাপানে অনেক মন্দিরেই বীণাহস্তা সরস্বতীকে দেখলে ভারতীয় কোন অপ্সরা বলে মনে হবে৷ দ্বিভুজা সরস্বতী দুই হাতেই বীণা ধারণ করে থাকেন৷ আর অষ্টভুজা সরস্বতী হাতে থাকে বজ্র, তরবারী, চক্র, পাশ, পরশু, ধনু ও শর৷ জাপানী সরস্বতীর সাথে একটি শ্বেতবর্ণের স্পর্শ সর্বদাই থাকে৷

হিন্দুদের সরস্বতী মতো জাপানী সরস্বতীকে নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে৷

একটি কাহিনী এখানে উল্লেখ করছি৷ প্রাচীনকালে একগুহায়  এক প্রকাণ্ড ড্রাগণ বাস করতো৷ সেই গুহার চার পাশে অনেক জনবসতি ছিল৷ ড্রাগনটি রোজ ছোট ছোট বাচ্চাদের ধরে খেয়ে নিত৷ ড্রাগনের ভয়ে সবাই ছিল তটস্থ৷ একদিন ভয়ানক ভূমিকল্প হয়৷ আকাশের মেঘলোকে আবির্ভূতো হলেন বেন-জই-তেন৷ আর হঠাৎ জল থেকে মাথা তুললো একটি দ্বীপ? দ্বীপের নাম এনোশিমা৷ দেবী বেনতেন এনোশিমা দ্বীপে অবতীর্ণা হন ও ড্রাগনকে বিয়ে করেন৷ সেই থেকে এনোসিমা দ্বীপে ড্রাগনের উৎপাত প্রশমিত হয়৷ জনজীবনে ফিরে আসে শান্তি৷