আমি একটি খেজুর গাছ
তোমাদের কাছে ব্রাত্য আজ
চাষীর বাগানে, প্রমোদ উদ্যানে,
আমারে ধরে না কাহারো মনে৷
তাচ্ছিল্য সহকারে কেউ
বীজ ছুঁড়ে ফেলে,
তবু বিধির কৃপায় জনম নিলাম
এই ধরনীর কোলে৷
শিশু তরুতে জল সিঞ্চনে
নাইকো কাহারো দায়,
প্রকৃতির দেওয়া বৃষ্টির জলে
বছর কাটিয়া যায়৷
রাজপথ ধারে, রেলপথ ধারে
আমার দেহটি ধীরে ধীরে বাড়ে,
তাও যদি কারো কুনজরে পড়ে
ডাল কেটে আমা. পঙ্গু করে৷
যে পাতা যোগায় প্রাণবায়ু জীবে
সে পাতায় চাঁটাই, মাদুর,
কেহ কি কখনো সুধায় আমায়?
ক্ষমা চাওয়া বহুদূর৷
নবযৌবন প্রাপ্তির আগে
কন্ঠে চালায় ছুরি
কোনো অনুনয় মানে না ঘাতক
চলিবেনা জারিজুরি৷
আমার দেহের শ্বেত রক্ত,
কত মহার্ঘ্য কত না ভক্ত,
সবার চোখে বালি হয়ে আমি
সম্পর্কটা আজ বেজায় তিক্ত৷
আট থেকে আশি খোঁজে খেজুর রস
মালিক, শ্রমিক, বশীভূত বস,
রস থেকে হয় কাঙ্খিত গুড়
যার খেজুর গুড় বাঙলার ঘরে
চির আশ্রিত প্রেমে সমাদরে৷
পরমান্ন থেকে পুলিপিঠে খ্যাত
রসগোল্লা, সন্দেশ যে গুড় জাত,
সবার হৃদয়ে সেতো আদৃত
তবে আমি কি পারিনি করিতে প্রীত?
উপাদেয় ফল সবার প্রিয়
জনপ্রিয় নাম খেজুর,
মরুভূমির রুক্ষ মাটিতে
ফল মোর সুমধুর৷
তালগাছ মোর জ্যেঠতুতো দাদা
নারকেল খুড়তুতো,
তাদের মতো এক পায়ে দাঁড়িয়ে
আমি কেন অনাহুত?
জনমে বরনে মরনে স্মরণে
চিরকাল আমি ব্রাত্য,
তবু ভালো লাগে আমারই অংশ,
অসাধারণ তার মাহাত্ম!
- Log in to post comments