খোল/খোলক/খোলা

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

 ‘খোল’ ধাতু + ‘অল্‌’ প্রত্যয় করে ‘খোল’ শব্দ পাচ্ছি৷ খো+ ‘ণ্বুল্‌’ (মতান্তরে ‘ক’) প্রত্যয়ের সাহায্যে ‘খোলক’ শব্দ পাচ্ছি৷ ‘খোলক’ শব্দের তদ্ভবে ‘খোলা’ শব্দ পাচ্ছি৷ ‘খোল্‌’ ধাতুর অর্থ খুঁড়িয়ে চলা৷ তাই ‘খোল’ মানে খোঁড়া (খঞ্জ বাlame)

‘খুড্‌’ ধাতুর সঙ্গে ‘ঘঞ্‌’ প্রত্যয় করে ‘খোল’ শব্দ পাচ্ছি! এতে ‘ড’-এর স্থলে ‘ল’-এর আগম হয়েছে৷ এক্ষেত্রেও ‘খোল’ শব্দের মানে খোঁড়া৷ ৰাংলা ‘খোড়া’ শব্দটি ‘খুড্‌’ ধাতু থেকে এসেছে৷ ‘খোলক’ শব্দের অর্থ---যুদ্ধে ব্যবহৃত বর্ম, শিরস্ত্রাণ প্রভৃতি অর্থাৎ যা শরীরের আবরণ হিসেৰে ব্যবহৃত হয়৷ ‘খোলক’ শব্দ থেকে তৈরী হয়েছে ৰাংলা ‘খোলা’ শব্দটি৷ এরও মানে আবরণ৷

মফঃস্বলের ৰাংলায় ফল বা শাক-সবজি কঠোর আবরণকে ‘খোসা’ ৰলা হয়৷ ‘খোলা হচ্ছে তদ্ভব শব্দ আর ‘খোসা’ হচ্ছে দেশজ ৰাংলা ৷ সংস্কৃতে ‘খোলা’ শব্দটিও ব্যবহার করা যেতে পারে--- স্ত্রীলিঙ্গে ‘লতা’ শব্দের রূপে৷ সেই বিচারে ‘খোলা’ শব্দটি হয়ে দাঁড়ায় তৎসম৷ কলকাতার বাংলায় আমরা ফল-মূল-তরিতরকারীর কঠোর আবরণকে খোলা তো ৰলিই, কোমল আবরণকেও (যেমন কলার খোলা, আঁৰের খোলা) ‘খোলা’ ৰলে থাকি৷

‘খোল’ শব্দের অপর অর্থ মৃদঙ্গ৷ বৈষ্ণব মহাজনেরা সম্মানে ‘শ্রীখোল’ শব্দটিও ব্যবহার করে থাকেন৷ এটি একটি বিশুদ্ধ সংস্কৃত অর্থাৎ তৎসম শব্দ কেউ যেন না ভাবেন যে ‘মৃদঙ্গ’ শব্দটি সংস্কৃত আর ‘খোল’ শব্দটি দেশজ ৰাংলা৷

‘খাপ’ অর্থেও ‘খোল’ শব্দের ব্যবহার আছে৷ ৰাংলায় আমরা সাধারণতঃ চশমার খাপ ৰলে থাকি কিন্তু উত্তর ভারতে এই অর্থে ‘খোল’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷

            (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)