মূর্ত মূর্তি আনন্দমূর্তি

লেখক
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য

পাহাড়, জঙ্গল, বনভূমি,

লতা-গুল্মাদির স্বর্গীয় শোভা---

পরিবৃত অরুণরাজ্য প্রভাতে

অরুণিম, অনিন্দ্যসুন্দর

দেবশিশু এলেন নতুন দর্শনের সংজ্ঞা নিয়ে

ঊনিশশো একুশের বৈশাখী বুদ্ধ পূর্ণিমায়

আকাশের নীল নীলিমায় উড়ে গেল

এক ঝাঁক প্রশান্তির শুভ্র বলাকা

দূরে বহু দূরের নীলাকাশ

নেমে এল আদিবাসীর কুটিরে

দিগন্তে অরুণ আলোয় উদ্ভাসিত হল

আভা মায়ের কোল৷

পিতা লক্ষ্মীনারায়ণের মনোবাঞ্ছা পূরণ

বড় হতে থাকলেন দেবশিশু প্রভাতরঞ্জন৷

সনাতন ধর্মের আদর্শ প্রচার, সাম্যবাদ, সমদর্শন,

জাতিভেদ প্রথার বিলুপ্তি

অনার্য আদিবাসীদের উত্তরণ মাতৃভূমির

সমস্ত সন্তান নতুন আলোর দিশায়

আলোকিত হতে লাগল

আনন্দমূর্ত্তিজীর দৈবিক কৃপায়

তন্ত্র, প্রাণায়াম, যোগ,ধ্যান,

 ন্যাস, ঈশ্বরতত্ত্বের সন্ধান

নিয়ে এলেন এই পবিত্র

দেহ ভাণ্ডারে সেই শুভ সন্ধিক্ষণ৷

মন্দির, মসজিদ, গীর্জায় ঈশ্বরের অন্বেষণ

বৃথা খোঁজের প্রচেষ্টায় পর্যটন,

আনন্দমূর্ত্তিজী মূর্ত হয়ে উঠলেন

দিব্যদর্শনের ফলিত মানব কল্যাণে

তাঁর প্রবর্তিত প্রাউট,

নব্যমানবতাবাদ মাইক্রোবাইটাম

হয়ে উঠল সবার সারস্বত সাধনার উদগম৷

সুরের মন্দাকিনী স্রোতধারায়

তাল লয়, ছন্দ, তানে

প্রবাহিত হল হাজার হাজার

প্রভাত সঙ্গীতের কলতানে,

ভাসা বিজ্ঞান, বাংলা সাহিত্যে

ধ্রুপদী ভাষার উৎস ও বুৎপত্তি

তার প্রতিভা যেন বাঙালীর ভবিষ্যৎ

সাধনার সীমাহীন সম্পত্তি

মহাসিন্ধুর মহা কল্লোলে দেশ

বিদেশের আনন্দমার্গের সন্ধানে

উত্তাল জোয়ার পৌঁছে গেল ঘরে ঘরে,

অধ্যাত্মবাদ প্রতিষ্ঠার তরে৷

নতুন সমাজ বিজ্ঞানের দার্শনিক,

ভাষা বিজ্ঞানের অনন্ত দিশারী

মার্গগুরুর মানব জীবনের

মহানির্বাণ সত্তরের মণিকোঠায়

আকাশের অন্তরালে নীল নীলিমায়৷