প্রবন্ধ

গাজনে মড়া খেলা

প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

 এককালে চৈত্রমাসের গাজন ছিল সারা বাংলার একটি জনপ্রিয় উৎসব৷ গাজনের নায়ক হচ্ছেন শিব৷ ভূত প্রেত নিয়ে শিব শ্মশানে থাকেন৷ তাই তাঁর উৎসবে একটু ভৌতিক ব্যাপার স্যাপার থাকবে এ আর আশ্চর্য কি৷

এখন গাজন উৎসব অনেক পরিচ্ছন্ন হয়েছে৷ সেকালের মত গাজনে মড়াখেলার অনুষ্ঠান আর হয় না৷

মেদিনীপুরে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন

পূর্ব মেদিনীপুর ভুক্তির উদ্যোগে কাকগেছিয়া সুপার স্টার ক্লাবের পরিচালনায় তমলুক উপভুক্তিতে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী জন্ম শতবর্ষ উদ্‌যাপন করা হয় গত ৪ঠা এপ্রিল , রবিবার৷ অনুষ্ঠান শুরু হয় ভোর ৪টায় প্রভাতফেরী দিয়ে৷ এরপর ৬ঘন্টা ব্যাপী ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ অখণ্ড কীর্ত্তনে নারী-পুরুষ ভেদ ব্যতিরেকে সমস্ত গ্রামবাসীরা- -উৎসাহের সঙ্গে যোগদানের মাধ্যমে কীর্ত্তনের আনন্দ উপভোগ করেন৷ এরই ফাঁকে একটি বর্ণাঢ্য নগর কীর্ত্তনের মাধ্যমে গ্রাম পদক্ষিণ করে আনন্দমূর্ত্তিজীর শিক্ষা মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়৷ এই অনুষ্ঠানে শতাধিক মার্গী ছাড়াও কাকগেছিয়া ভাণ্ডারবেড়িয়া , উদয়পুর, যোগীখোপ  ও গৌরাঙ্গপুর গ্রামের ৪০০০ এর উপর গ্রাম

চাই ‘‘আমরা বাঙালী’ ভাবাবেগ

আনন্দমোহন দেব

‘‘যে কোনো সমাজে বা সমাজ সংরচনায় সদস্যদের মধ্যে একতা একান্ত অপরিহার্য৷  তা না হলে সামাজিক সংরচনা বিপর্যস্ত হতে বাধ্য৷ সমাজ সদস্যদের অত্যধিক বৈয়ষ্টিক স্বার্থকেন্দ্রিকতার ফলে একতার  অভাব অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তিক দল সৃষ্টি, অন্যের কার্যধারা বোঝার মত মানসিক উদারতার  অভাব --- এগুলো শুধু কোন সমাজের  অধঃপতনেরই  সূচনা করে না, এগুলো ওই সমাজকে  ধরা পৃষ্ঠ থেকে  একেবারে নিশ্চিহ্ণ করে দেয়৷ এই  পৃথিবীর ইতিহাসে বহুদল ও সাম্রাজ্যের  অবলুপ্তির দৃষ্টান্ত বিরল নয়৷’’ (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার) তাই সুষ্ঠু সমাজ বা সমাজ ব্যবস্থার জন্য সদস্যদের একতা অপরিহার্য৷ বর্ত্তমানে আমাদের বাঙলায় এই একতার অভাব৷ এইভাবে চলতে দিত

শফরী ফড়ফড়ায়তে

হরিগোপাল দেবনাথ

  বিগত  ২০১৩ এর লোকসভা নির্বাচনে  আমাদের ‘‘স্বচ্ছ ভারতের অচ্ছা দিন’’ আনবার অগ্রদূত মোদীজী সরকারের প্রতিভূরা দেশবাসীদের উদ্দেশ্যে যে-সব প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছিলেন সে-সবের ছিটে ফোঁটাও রক্ষা করতে পারেন নি বরং দিনে দিনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অভাব অভিযোগ, দুর্র্যেগ, দুর্ভোগ ও নানাবিধ সমস্যা বেড়েছে বৈ কমেনি৷ তদুপরি, গত বছরটি গেছে  করোনা-বাইরাস-কবলিত এক দুর্র্যেগপূর্ণ কাল, যারফলে  আপামর ভারতবাসীর জীবন-জীবিকার  উপর চরম আঘাতও নেমে এসেছিল৷  শুধু ২০১৪ নিয়েই কেন বলব?

বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে

মনোজ দেব

পরিবেশগত ভাবে বাঙালী মুক্ত–চিত্তের অধিকারী৷ জাত–পাতের লড়াই গৌড়বঙ্গে বড় একটা ছিল না৷ তন্ত্র–ভিত্তিক শৈব সংস্কৃতি বাঙালীর চেতনা–মননকে পুষ্ট করেছে৷ পেশাভিত্তিক সামাজিক–র্থনৈতিক জীবন শুরু হবার বহু পূর্ব থেকেই সকল বাঙালীর সাধারণ পেশা ছিল তিনটে – মাছ ধরা, তাঁত বোনা ও চাষ করা৷ তাই উঁচু–নিচু–জাত–পাত ছিলনা৷ কাল হল আর্যাবর্তের ব্রাহ্মাণ্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ৷ পরবর্তীকালে বল্লাল সেনের বল্লালী দাওয়াই–কৌলিন্য প্রথা ও ‘বিভেদ কর, শাসন কর’ নীতি বাঙালীর মুক্ত চিত্তের মেরুদন্ড ভেঙে দিল৷ আরো পরবর্তী কালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ‘বিভাজন ও শাসন’ নীতি বাঙালীর অনৈক্যকে সুদূর প্রসারী করেছে৷ স্বাধীনোত্তর কালে অচেতন

প্রকৃত আত্মবিকাশের পথ আধ্যাত্মিকতা

সত্যসন্ধ দেব

আজ একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল ভারতেও অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে আবদ্ধ মানুষ ভাবে গঙ্গাস্নানে পাপক্ষয়  ও পুণ্য সঞ্চয় হবে বা গোরুর লেজ ধরে ভববৈতরণী পার হওয়া যাবে  এখন দেখা যাক্, পাপ–পুণ্য কী? ব্যাসদেব বলেছেন, ‘‘অষ্টাদশ পুরাণেষু ব্যাসস্য বচনাদ্বয়ম্, পরোপকারায় পুণ্যায় পাপায় পরপীড়নম্৷’’ অষ্টাদশ পুরাণে ব্যাসদেবের শিক্ষা হ’ল পরোপকার পুণ্য ও পরপীড়ন পাপ৷

মুনীঋষিরা এও বলেছেন কর্মের ফল ভুগতেই হয়৷ সৎকর্মের সুফল ও অসৎকর্মের কুফল – দুইপ্রকার ফলেরই ভোগ হয়৷

অর্থনৈতিক শোষণ থেকে বাঁচাতে পারে প্রগতিশীল সমাজতন্ত্রের প্রাউট দর্শন

প্রভাত খাঁ

দীর্ঘ ৭৩ বছর পরেও আমাদের ভাবতে হচ্ছে স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে দেশের সিংহভাগ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে পাঁচটি জিনিষের অত্যধিক প্রয়োজন, তারা পাচ্ছে না৷ আজও অনেকের ক্ষুধা নিয়ে জন্ম হচ্ছে পথে ঘাটে, আর মরতে হচ্ছে সেই পথে ঘাটে অবহেলিত পশু- পক্ষীদের মত৷  পাশাপাশি ভারতের মত বিরাট দেশে যৎসামান্য মুষ্টিমেয় কিছু ধনী ভাগ্যবানরা দেশের সম্পদের সিৎহভাগের মালিক৷

দিন দিন তাদের সম্পদ ফুলে ফেঁপে উঠছে৷ এমনকি করোনা লকডাউনের সময়ও সম্পদ বাড়িয়ে নিয়েছে, যখন কোটি কোটি  মানুষ দরিদ্র সীমার নীচে নেমে গেছে৷

গ্রন্থ পরিচয়

আনন্দমার্গ ডিগ্রি কলেজ, আনন্দনগরের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শ্রীতপন কুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা---‘‘বাঙলা বাঙালী সেকাল একাল’’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে৷’’ শ্রী তপন কুমার চ্যাটার্জীর বাংলার ওপর আরও অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে, যে বইগুলি পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলিতে বিশেষভাবে সমাদৃত ও পাঠ্যসূচীর অন্তর্গত৷ যারফলে আমাদের গ্রাম্য কলেজটির নাম সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে তথা মহাবিদ্যালয় গুলিতে পরিচিত হয়ে উঠেছে৷ উনার লেখা বর্ত্তমান ‘‘বাঙলা-বাঙালী---সেকাল একাল’’ বইটিকে  লেখার প্রেরণা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের লেখা‘‘ সভ্যতার আদি বিন্দু রাঢ়’’ বইটি থেকে পেয়েছেন৷ সভ্যতার আদিবিন্দু বইটিকে ভিত্তি কর

নববর্ষের অঙ্গীকার

বীরেশ্বর মাইতি

দেখতে দেখতে একটা গোটা বছর আমরা কাটিয়ে ফেললাম৷ বিদায় নিচ্ছে ১৪২৭৷ অন্যদিকে নোতুনের গান গেয়ে এসে গেছে ১৪২৮৷ আপামর বাঙ্গালীর কাছে ১লা বৈশাখ দিনটি একটি বিশেষ মাত্রা নিয়ে আসে৷ যদিও পরিতাপের বিষয় যে ইংরেজী নববর্ষকে নিয়ে বিশ্ববাসীর যে উন্মাদনা দেখা যায় তাঁর বিন্দুমাত্র বাংলা নববর্ষের কপালে জোটে না৷ জুটবেই বা কেন এ যে নেহাৎ ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পান না’র মত দশা৷ আমরা বাঙালীরা যতটা ধুমধামে ইংরেজী নববর্ষ উদযাপন করি বাংলা নববর্ষের বেলায় ততটা অবহেলা করি৷ বাঙালী আত্মবিস্মৃত জাতি হিসেবে নিজেকে দেখতে ও দেখাতে খুশি হয়৷ কিছুদিন হল আমরা ২১শে ফেব্রুয়ারীর স্মরণে নানা উৎসব অনুষ্ঠান করলাম৷ ‘বাংলা আমার প্রাণের ভাষা’ বল

পশ্চিম বাঙলার নাগরিকগণ নির্বাচনে বাঙলার গৌরবময় রাজ্যের কথাভেবে মতামত  দান করুণ

নিরপেক্ষ

আজ দেখা যাচ্ছে আগের মতো ভারতের রাজনৈতিক জগতে দেশসেবক নেই৷ তাঁরা জনসংযোগ করতেন ও জনগণকে সম্মান দিতেন৷ তাঁরা ছিলেন জনসেবক৷ আজ যারা রাজনীতিতে এসেছে তারা অধিকাংশই ধান্দাবাজ আর ধনী৷ এরা রাজনীতিতে এসে ছল-বল-কৌশলে দলে ঢুকে এম.এল.এ ও এমপি হয়ে গুছিয়ে নিয়ে ঠিক  নির্বাচনের প্রাককালে দলছুট হয়ে দলভাঙ্গাভাঙ্গী করে নিজেদের আখের গুছোয়৷ আর এই প্রবণতাটা বেড়েছে এ রাজ্যে কারণ দিল্লির বিজেপি সরকার এই সমস্যা সংকূল পশ্চিম বাংলাকে কব্জা করে বাঙলার কৃষ্টি সংসৃকতি ও বাঙলার রাজনৈতিক সচেতনতাকে চিরকালের মতো ধবংস করতে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিশেষ সাম্প্রদায়িকতাকে আমদানী করে বাঙলা৷ নিজস্ব বাঙালীয়ত্বটাকেই শেষ করে দিতে চায় বাংলা