ছোটবেলা থেকেই দাঁত দুর্বল থাকলে, আর কিশোর–যুবা বয়সে দাঁতের যত্ন না নিলে, দাঁতের এনামেল ও দাঁতের ভেতরের অংশ ক্ষয়ে গিয়ে পরবর্ত্তীকালে গর্তের ন্তুত্র্লন্ব্ধম্ভগ্গ সৃষ্টি হয়৷ সেখানে খাদ্য–কণা জমে রোগ ৰীজাণুর জন্ম হয় ও তীব্র প্রদাহ–যন্ত্রণার সৃষ্টি করে৷ বয়স্কদের ক্ষেত্রে তখন দাঁতের ডাক্তারের কাছে দৌড়নো ছাড়া কোন উপায় থাকে না৷ টুথৰ্রাশের ব্যবহার ঠিকমত না জানার কারণে অর্থাৎ জোরে জোরে ৰ্রাশের ব্যবহার করলে দাঁতের এনামেল দ্রুত উঠে যেতে বাধ্য৷ কোন বহুল বিজ্ঞাপিত টুথপেস্টের ব্যবহারেও তা আটকানো যাবে না৷ পেয়ারা পাতার ঘন ক্কাথ তৈরী করে তা দিয়ে নিয়মিত ভাবে মুখ ধুলে বা দাঁত মাজলে দাঁতের রোগে ভাল ফল পাওয়া যায়৷ এতে দাঁতের পায়োরিয়া রোগেও ভাল ফল পাওয়া যায় ৰ
কৃমি দন্ত কন্ ঞ্চ কৃমিদন্তক৷ ভাবারূঢ়ার্থে যে দাঁতে পোকা লেগেছে৷ যোগারূঢ়ার্থে দন্তশূল বা দাঁত–ব্যথা বা দাঁতে–পোকা৷ মনে রাখা দরকার অধিক অম্ল বস্তুর (এই ‘অম্ল’ থেকেই আম্ল, আম্র, আমলা শব্দগুলি এসেছে৷ বেশী টক খেলেই দাঁত যে কেমন কেমন হয়ে যায়, তাকে কথ্য ৰাংলায় বলি ‘দাঁত আমলে গেছে’) সংস্পর্শে এলে অথবা অন্য কোন কারণে দাঁতের মিনে ন্দ্বুত্রপ্পন্দ্বপ্তগ্গ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে সেখানে জল লাগলে দাঁতে অসহনীয় যন্ত্রণা হয়৷ প্রাচীনকালে লোকেরা ভাবতেন (এখনও কেউ কেউ ভাবেন) দাঁতে বুঝি পোকা লেগেছে৷ সেই পোকা কামড়াচ্ছে ৰলেই যন্ত্রণা হচ্ছে৷ আসল ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়৷ কচি ছেলের দুধে–দাঁতের মিনে সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়৷ তাই এই তথাকথিত দাঁতে পোকা–লাগা ছোট ছেলেদেরই বেশী হয়৷ কাঁচা আঁৰ, কাঁচা তেঁতুল, কাঁচা আমড়া, কাঁচা কুলের প্রতি আকর্ষণ ছোটদেরই বেশী৷ ছোটবেলায় দেখতুম এই তথাকথিত দাঁতে পোকা লাগাকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণীর বেদে ৰর্গীয় মানুষ দু’পয়সা করে নিতেন৷ উত্তর কলকাতায় সেকালে একজন ঘটকী ছিলেন (বিবাহের সম্বন্ধ যাঁরা স্থির করে দিতেন তাঁদের বলা হত ‘ঘটক’, স্ত্রীলিঙ্গে ‘ঘটিকা’ কিন্তু কলকাতার কথ্য ভাষায় আমরা বলতুম ‘ঘটকী’–উচ্চারণ ‘ঘোট্কী’৷ বৈয়াকরণিক বিচারে শব্দটি শুদ্ধ নয়) আমার এক মাসতুতো ভাইয়ের বয়স তখন ৭/৮ বছর৷ তার দাঁতে পোকা লেগেছিল৷ তার জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ৷ কাঁচা আঁৰ, কাঁচা আমড়া, কাঁচা তেঁতুল, কাঁচা কুল তো দূরের কথা, দাঁতে জল লাগলেই সে চীৎকার করে কেঁদে উঠত৷ মাসিমা সেই ঘট্কীর শরণাপন্ন হলেন৷ ঘট্কী ৰললে, ‘‘এ আর এমন কী ব্যাপার মা৷ আমি সারিয়ে দোব৷ তোমার সোণাদানা ৰড়, না সোণার খোকা ৰড় আমাকে একশ’টি টাকা দিও৷ আমি নিখুঁত ভাবে সারিয়ে দোব৷’’
ঘট্কী এল৷ তার থলেতে নানান গাছগাছড়া..... জরিৰুটি..... শেকড় ৰাকড়.....৷ ঘট্কী খানিকটা তুলো আমার মাসতুতো ভাইয়ের মুখের ভেতর দাঁতের গোড়ায় লাগিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে একটা লম্বা শেকড় দিয়ে আস্তে আস্তে আঘাত করতে লাগল৷ আর বলতে লাগল–
‘‘ভাসুর, ভাতারের মন্তর/ মামাশ্বশুরের মন্তর
কালীঘাটের মন্তর/বদ্যিনাথের মন্তর/ তারকনাথের মন্তর/ বিশ্বনাথের মন্তর/ পোকা লাগার মন্তর/ পোকা সারার মন্তর’’৷খানিকক্ষণ পর তুলোগুলো তার মুখ থেকে বার করে দিয়ে দেখালে তুলো পোকায় বিজ্ বিজ্ করছে৷ দ্বিতীয় বার আরো কিছুটা তুলো তার গালে ভরে দিয়ে একই
ভাবে মন্ত্র পাঠ করতে লাগল৷ এবার দেখা গেল পোকা একটু কমে এসেছে৷ তৃতীয়বার আরও কিছুটা তুলো ভরে দিয়ে একই মন্ত্র পাঠ করতে লাগল৷ এবার দেখা গেল তুলোয় পোকা নেই৷ তা দেখিয়ে ঘট্কী বললে, ‘‘মা, তোমার ছেলের পোকা সেরে গেল’’৷ আমার মাসিমা ঘট্কীকে মোটা দক্ষিণা তো দিলেনই, তার সঙ্গে একটা নোতুন শাড়ীও দিলেন৷
আসলে ঘট্কী প্রথমবারের তুলোতে বেশী করে পোকা ভরে দিয়েছিল৷ দ্বিতীয় বারের তুলোতে একটু কম৷ আর তৃতীয় বারের তুলোতে কোন পোকাই রাখা ছিল না৷ ধাপে ধাপে পোকা কমে যাচ্ছে দেখে মাসতুতো ভাইয়ের মনোবল ৰেড়ে যাচ্ছিল৷ তারপর যখন দেখলে পোকা একেবারেই নেই তখন তার মনোবল আরও ৰেড়ে গেল৷ সে ঘট্কীর কথায় সায় দিয়ে ৰললে–না, আর ব্যথা করছে না৷
ঘটকী চলে যাবার একটু পরেই দাঁতে জল লাগতেই আবার সেই যন্ত্রণা৷ ঘট্কীর মন্ত্র আসলে ছিল একটা ভাঁওতা৷
স৷তের মাধ্যমে রোগারোগ্য – ত্তব্ভব্দন্ন্তু ব্ধড়ন্দ্বব্জ্ত্রহ্মম্ভ (সঙ্গীতের আবাজ) কাণের মধ্যে দিয়ে স্নায়ুকোষে ত্ব্ব্জ্ত্রনুগ্গ পৌঁছায়৷ সেখান থেকে এই তরঙ্গ ন্ত্ব্ব্জ্ত্রব্ধন্প্সুগ্গ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ও বিশেষ চক্রকে প্রাণবন্ত ন্তুব্ধন্লন্ব্দন্দ্বগ্গ করে দেয় (এর ফলে রোগ দূরীকরণে সহায়তা হয়)৷
প্রভাত সঙ্গীতের মাধ্যমে নিম্নলিখিত রোগগুলির উপশম হয় ঃ–
১) মৃগীরোগ ২) শোকে খুব বেশী অভিভূত হয়ে যাওয়া–গাওয়া, শোনা দু’টিই এক্ষেত্রে কার্যকরী ৩) হিস্টিরিয়া ৪) বিষাদবায়ু ৫) বাতরোগ ৬) পিঠের শিরদাঁড়ার একটু নীচের দিকে ব্যথা ৭) ২২–২৩ বছরের মধ্যে মূত্রদ্বারের উভয় পার্শ্বে টনটনানি ব্যথা ৮) পায়ের তলায় বা পায়ের চেটোতে টনটনে ব্যথা –সকাল ৮টার মধ্যে একক গান ৯) হাতের ওপরের দিকে যে অংশটার পরেই ঘাড় শুরু হয়ে যায়, সেই জায়গায় ভোরে ওঠার সময় ব্যথা–সমবেত সঙ্গীত ১০) মৃতবৎসা নারীকে প্রসবের আগে, রাতে শোবার সময় গান শোনানো–এতে স্নায়ুতন্তু, স্নায়ুকোষ দুই–ই কাঁপতে থাকে৷ ফলে রোগী প্রাণশক্তি পেয়ে যায় ১১) ধাতুদৌর্বল্যে ও সুপ্তিস্খলনে –২/৩টি তাণ্ডব নাচের (বীররসাত্মক) গান ১২) রোগে ভুগে ভুগে চুল উঠে গেছে – বিশেষ করে দেশরাগিনী ভিত্তিক গান৷