বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও অচেতন মনের ভূমিকা

লেখক
শ্রী সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

যে কোন মৌলিক আবিষ্কার করতে হলে আবিষ্কারের জন্য উপাদান ও যন্ত্রপাতির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হ’ল মানব মন৷ কারণ, মানবমনই করে এই আবিষ্কার৷ বৈজ্ঞানিক গবেষনায় যা কিছু আবিষ্কার হয় এই মনের দ্বারা, সুতরাং এই মনকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ঠিক ঠিকভাবে দক্ষতা অর্জন করতে হবে৷ আর এই দক্ষতাকে খুঁজে পেতে হলে আমাদের এই সাধারন মনকে চেতন মনের স্তর ও অবচেতন মনের স্তর অতিক্রম ক’রে নিয়ে যেতে হবে অচেতন মনের স্তরে৷ কারণ,আবিষ্কারের যে বীজ বা উৎস তা লুকিয়ে রয়েছে এই গভীর গহন অচেতন মনের স্তরে Layer of superconcious mind)৷ মনের তৃতীয় স্তরকে বলা হয় অচেতন মনের স্তর৷ আজ পর্যন্ত যত মৌলিক আবিষ্কার হয়েছে তা এইfloating mind -এ হয়েছে৷ সাধারণ চেতন মনে অর্থাৎ এইSuper concious mind  দ্বারা কোন আবিষ্কার হয়নি৷ তাই  আবিষ্কারের নেপথ্যে আছে-এর প্রভাব৷

অনেকে হয়ত বা ভাবতে পারেন, এই তো বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন হঠাৎ আপেল পড়াকে কেন্দ্র ক’রেfloating mind-এ অভিকর্ষ ও মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার ক’রেছেন৷ কিন্তু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পিছনে কি কারণ লুকিয়ে রয়েছে তা যদি আমরা ঠিকভাবে পর্যবেক্ষন করি তা হ’লে দেখতে পাবো, হঠাৎ আপেল পড়তে দেখামাত্রই অভিকর্ষ বা মহাকর্ষ আবিষ্কার হ’য়ে গেল তা ঠিক নয়৷ কারণ এর পূর্বে নিউটনের আপেল বাগানে বহু আপেল পড়েছে কিন্তু এই আপেল পড়া লক্ষ্য ক’রেও তিনি পূর্বে এই আবিষ্কারের ধারনা করতে পারেননি৷ যদি আপেলটি সামনে না পড়ে নিউটনের পিছনে অর্থাৎ দৃষ্টির অগোচরে পড়ত বা অভিকর্ষ বা মহাকর্ষ আজও অনাবিষৃকত থাকত৷ আসলে এই আবিষ্কারের নেপথ্য ঘটনা কি ছিল তা হয়ত অনেকের অজানা৷ এই আবিষ্কারের পিছনে বা নেপথ্যে ছিল টাইকোব্রাহে, কেপলার, গ্যালিলিও প্রভৃতি বিজ্ঞানীদিগের বিশেষ প্রভাব৷ এই প্রভাবই নিউটনের মনকে পরিশীলিত করে পড়ন্ত বস্তুর পতনে প্রকৃত কারণের ধারনা৷

আবার আর্কিমিডিস স্নানাগারে স্নান করতে গিয়ে চৌবাচ্চায় উপচে পড়া জল দেখে, রাজা হিরোর মুকুট না ভেঙে ঐ মুকুটটিতে কত খাদ আছে তা নির্ণয় ক’রে ফেললেন, তা বিজ্ঞানসম্মত নহে৷ আসলে এই বিষয়ের প্রতি আর্কিমিডিস অনেক দিন হ’তে চিন্তা ক’রে মনকেSuper concious mind -এর স্তরে এনে চিন্তায় নিমগ্ণ ছিলেন৷ হয়ত বা বহুবারই দিশেহারা হ’য়ে ঠিক উত্তর খুঁজে পাননি৷ তারপর এই স্তরের মানসপটে কোন একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ উপচে পড়া চৌবাচ্চার জল দেখে তাঁর মনে ফুটে উঠেছিল স্বজ্ঞার আলো intuition), যা উঠে আসে মনের অচেতন স্তর থেকে বিজলী ঝলকের মত৷ অর্থাৎ পরিশীলিত মন তৈরী না হ’লে আবিষ্কার হওয়া সম্ভব নয়৷ ঠিক এমনিভাবেই আইজ্যাক নিউটনও যখন পরিশীলিত মন নিয়ে আপেল বাগানে বসেছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে গাছ থেকে আপেলটি মাটিতে খসে পড়ে৷ আর এই আপেল পড়ার ঘটনাটি নিউটনের মনে স্বজ্ঞার ঝলকানীintuition মুহূর্তের মধ্যে অভিকর্ষ বা মহাকর্ষ রহস্যের সমাধান করতে সাহায্য করেছে৷

মানব মনের বিভিন্ন স্তর গুলি ঠিক মত বিশ্লেষন করলে বিভিন্ন ধরনের মৌলিক আবিষ্কারের উৎস খুঁজে পাওয়া যাবে মানব মনের তিনটি বিভাগ হল---

১) চেতন মন Conscious mind)

২) অবচেতন মন Subconscious mind)  ও

৩) অচেতন মন Super concious mind)

এই Super concious mind-এর তিনটি স্তর আছে৷ এরা হ’ল---Super concious mind--i First layer ii second layer  iii Third layer