ছীতল অইয়া জায়

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

গুপ্তযুগের সবচেয়ে ৰড় রাজা ছিলেন সমুদ্রগুপ্ত৷ কিন্তু গুপ্তযুগের কথা বলতে গিয়ে যে নামটি প্রথমেই ভেসে ওঠে তিনি চন্দ্রগুপ্ত৷ যদিও সমুদ্রগুপ্ত দিগ্বিজয়ী বীর হিসেবে প্রসিদ্ধি অর্জন করেছিলেন, ....ভারতে এক অতি  ৰৃহৎ সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিলেন....সাংস্কৃতিক জীবনে বিরাট পরিবর্ত্তন এনেছিলেন কিন্তু গুপ্তযুগের অনল–পুরুষ ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত৷ তাঁর প্রজা–প্রীতি ছিল ইতিহাসপ্রসিদ্ধ৷ তাঁর প্রেরণা ও প্রচেষ্টাতেই সংস্কৃত ভাষা নবজীবন লাভ করেছিল৷

চন্দ্রগুপ্তের কথা বলতে গিয়ে  একটা মজার গল্প মনে পড়ে গেল৷ কালিয়া নামে ৰাঙলায় একটি গ্রাম আছে৷ গ্রামটি অত্যন্ত শিক্ষিত৷ এমন গ্রাম পৃথিবীতে আর দু’টি আছে কিনা সন্দেহ৷ কালিয়ার কাছাকাছি গ্রাম ৰাদিয়া৷ সে গ্রামটিও ৰেশ শিক্ষিত৷ একবার কালিয়ার ছেলেরা কোনো এক উৎসব উপলক্ষ্যে ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক মঞ্চস্থ করবার তোড়জোড় চালাচ্ছিল৷ বিভিন্ন ভূমিকার জন্যে উপযুক্ত অভিনেতা/অভিনেত্রীর খোঁজ চলছিল৷ এমন সময় দূর গাঁয়ের একজন অপরিচিত মানুষ ..... নাম তাঁর সম্ভবতঃ দশমিকরঞ্জন দাশগুপ্ত ....ঝড়ের কাকের মত অথবা ভগ্ণদূতের মত এসে কর্মকর্তাদের বললে–‘‘আমারে এ্যাকডা পার্ট দ্যাৰা না?’’

কর্মকর্তারা শুধোলেন–কেমন পার্ট চান? দশমিক বললে–ক্যাৰোল রাজার পার্ট করমু৷ স্যানাপতি কিংবা সাকর–নফরের পার্ট করমু না৷...কোন্ নাটক অইত্যাসে?

কর্মকর্তারা বললেন–‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক হচ্ছে৷ এ নাটকে দু’জন রাজা আছেন–চন্দ্রগুপ্ত ও আলেক্জাণ্ডার৷

দশমিক বললে–‘‘আলেক্সাণ্ডার নামডা উস্সারণ করা শক্ত৷ আমারে সন্দ্রগুপ্তের পার্টডা দ্যাৰানি?’’

কর্মকর্তারা বললেন–‘‘আচ্ছা, তাই হবে৷ আপনি পারবেন তো’’

দশমিক বললে–‘‘হ, পারমু৷ আমি পারমু না তো পারৰ ক্যাডা? আমারে পার্টডা লিখায়ে দ্যাবানি৷ রিহার্স্যালের দরকার পরৰ না৷ এক্কেরে ষ্ট্যাজে আইস্যা দিখায়ে দিমু এ্যাক্টিং কারে কয়৷’’

*      *      *

নাটকের পুরোদমে রিহার্স্যাল চলছে৷ আলেক্জাণ্ডারের ভূমিকায় যিনি নাৰছেন তাঁকে স্মারক ত্নব্জপ্সপ্পহ্মব্ধন্দ্ বলছেন–বলুন, ‘‘সত্যই সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ’’৷ এমন সময় হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে দশমিক এসে হাজির৷ সে বললে–‘‘এ্যাডা কতা জিগাই৷ সন্দ্রগুপ্ত কোন দ্যাশের রাজা সিল?’’

কর্মকর্তারা বললেন–‘‘মগধের৷’’

দশমিক শুধোলে–‘‘মগধ আমাগো কাইল্যা–ৰাইদ্যা তাইক্যা ৰর না সোট?’’

কর্মকর্তারা বললেন–‘‘দেখুন, আমাদের কালিয়া–ৰাদিয়া তো গ্রাম .....আর মগধ একটা দেশ–প্রকাণ্ড দেশ’’

দশমিক বললে–‘‘হ ৰুসসি৷ পার্টডা ৰালোই৷’’

খানিকক্ষণ নিস্তব্ধ৷ স্মারক চুপ করে বসে আছেন৷ অভিনেতা /অভিনেত্রীরাও চুপ করে বসে আছেন দশমিক কী বলছে তা শোনবার জন্যে৷

দশমিক বললে–‘‘সন্দ্রগুপ্ত ....... সন্দ্র........... গুপ্ত............ সন্দ্র............. গুপ্ত.............. সন্দ্রগুপ্ত৷ আচ্ছা, সন্দ্রগুপ্ত স্যানগুপ্ত না দাশগুপ্ত?’’

কর্মকর্তারা বললেন–‘‘সেনগুপ্তও নয়, দাশগুপ্তও নয়, কেবল গুপ্ত৷’’

দশমিক বললে–‘‘ক্যাৰোল গুপ্ত তবে তো নীস্ বৈদ্য......ক্যাৰোল গুপ্ত অইলে তো নীস্ বৈদ্য অয়.....তবে ও পার্ট করমু না.......করমু না.....করমু না৷ আমারে আলেক্সাণ্ডারের পার্টডা দ্যাৰা৷’’

‘‘কী সুন্দর পার্ট আহাহাহাহা কী সুন্দর কতা আহাহাহাহা হইত্তোই ছেলুকাছ, কি ৰিসিত্র এই দ্যাশ হুইন্যা মন–প্রাণ ছীতল অইয়া জায়’’