গুণগত কারণে গ্রামের নাম

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

গ্রামের নাম অনেক সময় গুণগত কারণেও হয়ে থাকে৷ ৰাঙলার গ্রামেগঞ্জে প্রচুর সাপ রয়েছে৷ রাঢ়ে গোখরো সাপের সংখ্যা প্রচুর৷ রাঢ়ী ৰাংলায় এদের নাম ‘খরিস’৷ যাই হোক, যে গ্রামে সাপের সংখ্যা খুব বেশী তার নাম রাখা হয়েছিল সর্পলেহনা (বীরভূম)৷ এইরূপ মানভূম জেলায় রয়েছে ‘মণিহারা’, বাঁকুড়া জেলায় ‘মুকুটমণিপুর’ ইত্যাদি৷

আগেকার দিনে মানুষের পৌরুষব্যঞ্জক নাম রাখা হ’ত৷ আজকাল মিষ্টি নাম রাখার দিকে প্রবণতা বেশী৷ আগেকার মেয়েদের নাম রাখা হত ছয়/সাত অক্ষর দিয়ে৷ যেমন–বীরেন্দ্রমোহিনী, শতদলবাসিনী ইত্যাদি৷ তারপর কমতে কমতে চার অক্ষরে দাঁড়ায়৷ যেমন–বীণাপাণি, সৌদামিনী ইত্যাদি৷ তারপর তিন অক্ষরে, বর্তমানে দুই অক্ষরে দাঁড়িয়েছে৷ যেমন–বীণা, রীণা, ঋতা ইত্যাদি৷ আগেকার দিনে লম্বা লম্বা নামগুলো ডাকতে অসুবিধা হত বলে ছোট করে ডাক নাম রাখার প্রবণতা গড়ে উঠেছিল৷ যে মহিলার নাম ছিল কিরণশশী, সবাই তাকে ডাকত ‘কেন্না’ বলে৷ এখন ছোট নাম রাখা হয়, তাই ডাক নামের প্রয়োজন আর নেই বললেই চলে৷ নাম ছোট করতে করতে কোনদিন না এক অক্ষরে দাঁড়ায়৷ এক অক্ষরের নাম কিন্তু আমাদের ভাঁড়ে খুব বেশী নেই৷ দু’চারটে মনে পড়ছে–আঃ, উঃ, কি, ছিঃ, থুঃ, চ, খা৷ আমি আশা করি, ভবিষ্যতে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এক অক্ষরেরও অনেক অর্থবহ শব্দ তৈরী হবে আর তখন সেই ধরনের নাম রাখলেও কেউ হাসাহাসি করবে না৷