যে মানুষ হিন্দী ও ইংরেজী দু’য়ের কোনোটাই জানে না সে হিন্দী শুনে ভাবতে পারে ওটা ৰুঝি ইংরেজী৷ আবার ইংরেজী শুনে ভাবতে পারে ওটা ৰুঝি হিন্দী৷ বাঙলা–হিন্দীতে ‘গদি’ ও ‘গদ্দী’ নিয়ে এ রকম গণ্ডগোল হলেও হতে পারে৷ ‘‘মালিক গদ্দীমে হঁৈ ’’ বললে একজন ৰাংলাভাষী ভাবতে পারে মালিক ৰুঝি খাটের গদিতে শুয়ে আছে আর ৰাংলায় ‘মালিক গদিতে শুয়ে আছে’ শুনে বাংলা–না–জানা লোক ভাবতে পারে, ‘মালিক বোধ হয় দোকানের খাটে শুয়ে রয়েছে৷’ সেই যে গল্প জানো না৷ একবার একজন উৎকট রাষ্ট্রভাষাপ্রেমী পটনা ইষ্টিশানে পৌঁছলেন৷ তাঁকে যেতে হবে পটনা সেক্রেটারিয়েটে৷ কিন্তু তিনি তো ইংরেজীতে ‘সেক্রেটারিয়েট’ বলবেন না৷ এমনকি ‘ইংরেজী’ শব্দটাও তিনি উচ্চারণ করবেন না৷ তিনি ইষ্টিশানে রিক্সাওয়ালাকে বললেন–‘‘সচিবালয় লে চলো জী’’৷ রিক্সাওয়ালাও খুব রাষ্ট্রভাষাপ্রেমী৷ সে তখনই বললে –ক্যা সাহাৰ, আপ আংরেজীমে ‘সচিবালয়, সচিবালয়’ কর রহে হেঁ, হিন্দী মেঁ ৰোলিয়ে৷ ম্যাঁয় আংরেজী নেহীঁ সমঝ্তা হুঁ৷
রাষ্ট্রভাষাপ্রেমী নেতাটি ফ্যাসাদে পড়লেন৷ তিনি তখন ঘুরিয়ে নাক দেখাবার মত করে বললেন–‘‘সচিবালয় জী সচিবালয়, জিসকো কুছ্লোগ ভুলসে সেক্রেটারিয়েট (ইংরেজী তো তিনি বলবেন না) বী কহতে হেঁ৷’’
রিক্সাওয়ালা বললে–বহী ৰোলিয়ে–হিন্দীমে ৰোলিয়ে–সেক্রেটারিয়েট৷ আপ্ আংরেজীমে কিঁউ ‘সচিবালয়’ ‘সচিবালয়’ কহ্তে হেঁ
রাষ্ট্রভাষাপ্রেমী ভদ্রলোকটির মুসকিল–আশান হ’ল৷ তিনি যেন হাতে পূর্ণিমার চাঁদটি পেলেন৷
বাপ–বেটাকে নিয়ে সংসার৷ বাপ হাটে গেছে৷ বেটা বাপের জন্যে ভাত–ডাল–তরকারী রেঁধে রেখেছে৷ ৰাৰা খেতে বসে বলছে–রামচন্দ্র, রামচন্দ্র, ওরে রাউজা, দাইলনিতে কয় গণ্ডা মরিস্ দিস
বেটা বললে–সয় গণ্ডা৷ বাপ–দিৰারে কইসিলাম কয় গণ্ডা
বেটা–আজ্ঞা, আষ্ট গণ্ডা৷ বাপ–দিস কত
বেটা–আইজ্ঞা সয় গণ্ডা৷ বাপ–এ অন্ন কাউম্ না, এ অন্ন কাউম্ না৷
বেটা–এ্যাবার এ্যাডা ক্ষমা করেন, মাপ করেন৷ এক্কেরে কতা দিত্যাসি, এ্যামনডা আর অইবো না৷
বাপ–ত্র্যাতাযুগে যে রামচ ন্দ্র আসিল হ্যা পিতৃসত্য পালনের লাইগ্গা ১৪ বৎসর বনবাস গ্যাসিল৷ তুমি কলিযুগের রামচন্দ্র পিতৃ–আজ্ঞা লঙঘন করস্৷ দিবারে কইসিলাম কয় গণ্ডা মরিস
বেটা–আইজ্ঞা, আষ্ট গণ্ডা৷ বাপ–দিস কত
বেটা–সয় গণ্ডা৷ বাপ–তুমি পিতৃ–আজ্ঞা লঙঘন কর্স৷ এ অন্ন কাউম না, লাতি মাইর্যা তালা ৰাইঙ্গা ফ্যালাই দিমু৷