নদীর নাম ও বৈশিষ্ট্য

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

যে নদীর যে বৈশিষ্ট্য তা’ থেকে প্রাচীনকালে নদীর নামকরণ করা হ’ত৷ যেমন, যে নদীর জল কপোত অর্থাৎ পায়রার চোখের মত স্বচ্ছ তার নাম কপোতাক্ষ৷ যে নদীর জল ময়ূরের চোখের মত তার নাম ময়ূরাক্ষী যে নদীর উদরে দাম আছে তার নাম দামোদর৷ দামোদরের নীচে অঙ্গার বা কয়লার খনি থাকায় অগ্ণিবাচক ‘দাম’ শব্দটি ব্যবহূত হয়েছে৷ যে নদী হঠাৎ বন্যা এনে নিষ্ঠুরের মত জনপদের প্রভুত ক্ষতি সাধন করে তার নাম কসাই (ত্ব্ব্ভব্ধন্তুড়ন্দ্বব্জ)৷ এই ভয়ানক হিংস্রস্বভাব কসাই নদীকে বর্তমানে বেনারসী শাড়ী পরিয়ে দস্তুরমত বিবি সাজিয়ে ‘কংসাবতী’ নাম দেওয়া হয়েছে৷ মনে রাখা উচিত, কাঁসার সঙ্গে এই নদীর কোন সম্পর্ক নেই৷ ত’ ছাড়া কাঁসার সংস্কৃত হচ্ছে ‘কাংস্য’ বা ‘ভরণ’, ‘কংস’ বা ‘কংসা’ নয়৷ যে নদী পশ্চিম মেদিনীপুরে সৃষ্ট হয়ে তুলনামূলক বিচারে কিছুটা কালো জল বহন করে এনেছে তার নাম কালিয়াঘাই (কেলেঘাই)৷ এই কেলেঘাই নদী মেদিনীপুর শহরের কিছুটা ভাটিতে কাঁসাই নদীর সঙ্গে মিলেছে৷ মিলিত হবার পর তাদের যুগ্ম স্রোতধারার নাম দেওয়া হয়েছে হলদী নদী৷ এই হলদী নদী ভাগীরথীর মোহানায় অল্প একটু উজানে ভাগীরথীতে মিশেছে৷ এই সংযোগস্থলে সেকালে হলদিয়া নামে যে ছোট গ্রামটি ছিল, তার সঙ্গে দীয়া বা দ্বীপের কোন সম্পর্ক নেই৷ হল্দী নদীর তীরস্থিত গ্রাম এই অর্থেই গ্রামটির নাম হলদিয়া৷