সংবাদ দর্পণ

পাপশক্তির ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে নীলকন্ঠ হলেন আনন্দমূর্ত্তিজী - আনন্দমার্গের অত্যুৎকৃষ্ট আদর্শ অনির্বাণ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

১৯৭৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী তারিখে পাপশক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে মার্গগুরুদেব শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আধ্যাত্মিক শক্তিবলে মারাত্মক বিষকে আত্মস্থ করেছিলেন৷ পৌরানিক কাহিনী অনুসারে সমুদ্রোত্থিত মারাত্মক বিষকে শিব কন্ঠে ধারণ করে ওই মারাত্মক বিষের বিষক্রিয়াকে ব্যর্থ করে’ ‘নীলকন্ঠ’ রূপে পরিচিত হয়েছিলেন৷ তেমনি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী হত্যা করার জন্যে বিহারের পটনা বাঁকীপুর সেন্ট্রাল জেলে তাঁর প্রতি প্রয়োগ করা বিষের মারাত্মক বিষক্রিয়াকে আধ্যাত্মিক শক্তি বলে ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন৷ পরাজিত হয়েছিল পাপশক্তি৷ প্রমাণ করেছিলেন অত্যুৎকৃষ্ট আদর্শের অনির্বাণ দীপশিখা আনন্দমার্গকে ধবংস করা যাবে না৷ সারাবিশ্বের আনন্দমার্গীরা এইদিনটি নীলকন্ঠ দিবস হিসেবে পালন করে৷ গত ১২ই ফেব্রুয়ারী কলকাতায় আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রম সহ বিশ্বের সর্বত্র মহাসমারোহে ‘নীলকন্ঠ দিবস’ পালিত হয়৷

এই উপলক্ষ্যে এদিন কলকাতা ও পাশ্ববর্তী এলাকার আনন্দমার্গীরা কেন্দ্রীয় আশ্রমে মিলিত হয়ে বিকেল ৩টে থেকে ৬টা পর্যন্ত অখণ্ড কীর্ত্তন করেন৷ এর পর মিলিত সাধনা ও স্বাধ্যায়ের পর আচার্য বিকাশানন্দ অবধূত কীভাবে মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী বারে বারে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল তার বিস্তারিত ইতিহাস বর্ণনা করেন৷ নীলকন্ঠ দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী যে সমাজের সমস্ত প্রকার অন্যায় ও শোষণের অবসান ঘটিয়ে ন্যায়, সত্য ও ধর্মের প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী, তা জানতে পেরে কায়েমী স্বার্থবাদীরা বারে বারে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে৷ ১৯৬৭ সালে আনন্দনগরে,১৯৭০ সালে কোচবিহারেও তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল৷ এতে ব্যর্থ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সিবি আই-এর মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ও পটনা বাঁকিপুর সেন্ট্রাল জেলে আটক করে রাখা হয়৷ এখানে তাঁর সঙ্গে আনন্দমার্গের অন্য যে সব কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের অন্য জেলে স্থানান্তরিত করে প্রথমে মার্গগুরুকে ওখানে একাকী করে দেওয়া হয়, তারপর ১৯৭৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী ওষুধের নাম করে জেলের ডাক্তারের মাধ্যমে তাঁর ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ এই বিষের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় তাঁর চোখ মুখ ফুলে যায়, চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তে থাকে৷ পরে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর ঐশী শক্তির সাহায্যে এই বিষের ক্রিয়াকে নষ্ট করে দেন৷ তিনি তাঁর ওপর ওষুধের নাম করে বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেন৷ সরকার এই দাবী মানে নি৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন আইন মন্ত্রী অমর প্রসাদ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এক বেসরকারী তদন্ত কমিশন গঠিত হয়৷ এই কমিশন যথারীতি সাক্ষীসাবুদ নেয় ও শেষে রায় দেয়, যথার্থই শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর ওপর বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল৷ এরপর আন্তর্জাতিক পর্যায় মার্গগুরুর ওপর বিষ প্রয়োগের তদন্ত হয়৷ রাণী এলিজাবেথের উপদেষ্টা এইচ.জি.ওয়েলস নিরপেক্ষ তদন্ত করে রায় দেন শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর ওপর বাঁকীপুর সেন্ট্রাল জেলে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল৷ শ্রীশ্রী আনন্দমূত্তিজী এই বিষপ্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে ১৯৭৩ সালের ১লা এপ্রিল থেকে ৫ বছর ৪মাস ১দিন অনশন করেন৷ অবশেষে উচ্চআদালতের রায় তিনি সম্পূর্ণ নির্র্দেষ প্রমাণিত হয়ে ১৯৭৮ সালের ২রা আগষ্ট মুক্তি লাভ করেন৷ প্রমাণ হ’ল আনন্দমার্গের অতুৎকৃষ্ট আদর্শের অনির্বাণ দীপশিখা পাপশক্তির পক্ষে নির্বাপিত করা সম্ভব নয়৷ এই ‘নীলকন্ঠ দিবস’ স্মরণ করিয়ে দেয় অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে সংগ্রামে ন্যায়, সত্য ও ধর্মের চিরকালীন জয় হয়৷

আনন্দমার্গের সেমিনার্

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৯,১০ ও ১১ই ফেব্রুয়ারী উঃ ২৪পরগণার, বনগাঁ ও অসমের হোজাই আনন্দমার্গ আশ্রমে আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ তিনদিনের এই আলোচনা সভায় আলোচ্য বিষয় ছিল --- আদর্শ মানুষের জীবনচর্চা কেমন হওয়া উচিত, বুদ্ধির মুক্তি, প্রত্যাহার যোগ ও পরমাগতি, পাপস্য কারণত্রয়ম্‌৷ বনগাঁর আলোচনা সভায় মুখ্য প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য সুধাক্ষরানন্দ অবধূত, সহযোগিতায় ছিলেন আচার্য অমৃতবোধানন্দ অবধূত৷

হোজাই সেমিনারে প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য সুপ্রভানন্দ অবধূত ও আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত তিনদিনের এই সেমিনারের উভয় স্থানেই ৯ই ফেব্রুয়ারী সকালে তিনঘন্টা অখণ্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর প্রত্যহ দার্শনিক তত্ত্ব আলোচনার পাশাপাশি কীর্ত্তন, মিলিত সাধনা, আসন অভ্যাস, কীর্ত্তন পরিক্রমা, শোভাযাত্রা সহকারে পথ পরিক্রমার মাধ্যমে আনন্দমার্গের আদর্শ বাহিরে সমাজে পৌঁছে দেওয়া হয়৷

হোজাইতে মার্র্শল আর্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল৷ বিশিষ্ট মানুষজনদের হাতে শীতবস্ত্র দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়৷ এখানে সংঘটক হিসেবে ছিলেন আচার্য প্রমোথেশানন্দ অবধূত ও স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাই বোনেরা৷

সর্বনেশে মোবাইল!

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

মোবাইল! হাতের মুঠোয় কয়েক ইঞ্চির একটি যন্ত্র, কেউ কেউ বাংলা নামে ডাকে মুঠো ফোন৷ এই মুঠোর মধ্যে আজ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড৷ চুষি কাঠি মুখে দিয়ে ছেলে ভোলানোর দিন আগেই চলে গেছে৷ রঙ বেরঙের খেলনা, দোলনা সে দিনও শেষের পথে৷ কর্মরতা মা দুধের শিশুকে ভুলিয়ে রাখতে হাতে তুলে দিচ্ছে এই মুঠো ফোন৷ তার মারাত্মক পরিণতির শিকার আজ শিশু, বালক, কিশোর, যুবক সবাই৷ এই মুঠো ফোনের দৌলতে ছল চাতুরীর কালো ফাঁদে পড়ছে অনেকেই৷ আণবিক বোমা যত শক্তিই বিস্তার করুক তার পরিধি সীমাবদ্ধ৷ কিন্তু মুঠো ফোন! সীমানা ছাড়িয়ে....৷

এখন প্রশ্ণ বিজ্ঞানের এই বিস্ময়কর আবিষ্কার কি অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে! প্রত্যেক জিনিসেরই ভালো মন্দ দুটো দিক থাকে৷ মুঠো ফোন তার ব্যতিক্রম নয়৷ ভালো ব্যবহারটাই শিখতে হয়৷ কিন্তু শেখাবে কে?

বিজ্ঞানের অগ্রগতি সভ্যতার মাপকাঠি নয়৷ যদি না তার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন ঘটে৷ মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর ‘সভ্যতা বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক প্রগতি’ প্রবচনে বলেছেন --- ‘‘সভ্যতার সঙ্গে বিজ্ঞানের একটা ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে, একই সঙ্গে এ দু’য়ের উন্নতি হয়৷ কিন্তু যেখানে বৈজ্ঞানিক উন্নতি সভ্যতার উন্নতিকে পিছনে ফেলে যায় সেখানে সভ্যতার ভরাডুবি ঘটে... যেখানে সভ্যতার উন্নতি দেখবে সেখানেই লক্ষ্য করবে বৌদ্ধিক উন্নতিও এর সঙ্গে রয়েছে আবার যেখানে বিজ্ঞানের চর্চা রয়েছে সেখানে বৌদ্ধিক বিচার বিশ্লেষণও প্রয়োজন, তাই সভ্যতা ও বিজ্ঞান উভয়ক্ষেত্রে বৌদ্ধিক জ্ঞান অপরিহার্য৷’’

এই বৌদ্ধিক জ্ঞানের অভাবই বিজ্ঞানকে অভিশাপে পরিণত করে৷ খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক মণি ভৌমিক তাঁর ‘ব্রহ্ম সত্য জগৎ সত্য’ উপনিষদ বিজ্ঞান রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থে লিখেছেন ---‘‘প্রগতিশীল বৈজ্ঞানিক বিশ্ববোধকে আমরা ক্রমশ মেনে নিতে স্বাগত জানাতে বাধ্য হচ্ছি৷ সুতরাং বৈদিক ঋষিদের প্রাচীন প্রজ্ঞার সঙ্গে আজকের বিজ্ঞানের মেল বন্ধন যদি করতে পারি,তবে সে মিলিত আলো আমাদের দেবে নব বিশ্বচেতনা.....বেদ উপনিষদ কোয়ান্টাম ফিজিক্স যেন মিশে আছে এক সমবেত ও সমকালীন বিশ্ববোধের অপূর্ব রসায়নে...৷ এমন হিরন্ময় মিশ্রণের দহন দানে পূর্ণ হোক আমাদের জীবন এই জগতের কাজের মধ্যে আর নিরাসক্ত ভোগের মধ্যে আমরা যেন হতে পারি অমৃততীর্থযাত্রী৷’’ বিজ্ঞানের বিরোধিতা নয়, বিজ্ঞানের গবেষণা ও চর্চা চলতেই থাকবে কিন্তু পাশাপাশি প্রয়োজন আধ্যাত্মিক অনুশীলন৷ তবেই বিজ্ঞান মানুষের কল্যাণ করবে৷

গোবরডাঙ্গায় সাহিত্য সভা

সংবাদদাতা
গোবিন্দ বিশ্বাস
সময়

গোবরডাঙ্গা সেবা ফার্মাস সমিতির উদ্যোগে এক সাহিত্যসভা অনুষ্ঠিত হয় সমিতির তৃতীয় তলের সভাঘরে গত ২৭শে জানুয়ারী,২৪ বৈকাল ৩টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত৷ সাহিত্য সভায় পৌরহিত করেন প্রবীন সাহিত্যিক ‘ঋতুপর্ণা বিশ্বাস’৷ উপস্থিত ছিলেন কবি ও সাংবাদিক পাঁচুগোপাল হাজরা, সাংবাদিক গোবিন্দচন্দ্র বিশ্বাস, নীরেশ ভৌমিক, পলাশ মণ্ডল৷ ধীরাজকান্তি রায়, সুধীন গোলদার, প্রবীর হালদার সহ অনেকে৷ প্রায় ৭০ জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন সভায়৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন কথাবার্র্ত পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক পাঁচুগোপাল হাজরা৷

ভাতিণ্ডার সরকারি ‘স্মার্ট’ স্কুলে একজন ছাত্র, একজন শিক্ষক! তবু বন্ধ হয়নি স্কুল

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

মহা সমারোহে চালু হয়েছিল ‘স্মার্ট স্কুল’৷ রঙিন ঝলমলে টেবিল-চেয়ার, প্রজেক্টর মেশিন, পড়াশোনার অন্য সরঞ্জাম সবই রয়েছে৷ এমনকি, অত্যাধুনিক লাইব্রেরিও রয়েছে৷ আছে মিড ডে মিলের ব্যবস্থাও৷ তবু নেই ছাত্রছাত্রী৷ এক জন মাত্র পড়ুয়া, কিন্তু তা বলে স্কুল তো আর বন্ধ করে দেওয়া যায় না! পড়ুয়া কিংবা শিক্ষিকা, কারওরই উৎসাহের কোনও কমতি নেই৷ তাই সবেধন নীলমণি একটি ছাত্রকে নিয়েই রমরমিয়ে চলছে পাঞ্জাবের ভাটিণ্ডার প্রত্যন্ত গ্রাম কোঠে বুধ সিংহের সরকারি স্মার্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ লোয়ার কেজি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করার পরিকাঠামো রয়েছে স্কুলটিতে৷ বিদ্যালয়ের ঘরের দেওয়ালে শিশুদের উপযোগী করে আঁকা হয়েছে রঙিন ছবি৷ খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রও রয়েছে৷ সেখানেই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে ভিন্দর সিংহ৷ সে-ই এই স্কুলের একমাত্র পড়ুয়া৷ তার জন্য রোজ নিয়ম করে যথাসময়ে স্কুলে আসেন স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা সর্বজিৎ সিংহ৷ আসেন মিড ডে মিলের রাঁধুনিও৷ ভিন্দরের জন্য সরকারি বরাদ্দ কাঁচামাল দিয়ে রান্না হয়৷ তার খাওয়ার ব্যবস্থা করা থেকে পড়ানো, সবটাই একা হাতে সামাল দেন সর্বজিৎ৷ কিন্তু কেন এই অবস্থা স্কুলের? সর্বজিৎ জানিয়েছেন, আগে স্কুলে ২০ জনের বেশি পড়ুয়া ছিল, কিন্তু তারা সবাই অন্য স্কুলে চলে গিয়েছে৷ সূত্রের খবর, গ্রামের জনসংখ্যা ৪২৫৷ তাঁদের মধ্যে নথিভুক্ত ভোটদাতা রয়েছেন ৩০০ জন৷ গ্রামে প্রায় ৮০টি পরিবার রয়েছে, যে সব পরিবারের সকলেই তুলনামূলক ভাবে সচ্ছল৷ তাঁরা বাড়ির বাচ্চাদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করেছে৷ সর্বজিৎ জানিয়েছেন, প্রায় ন’মাস আগে তিনি এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন৷ তখন তিন জন ছাত্র ভর্তি হয়েছিল৷ কিন্তু ভিন্দর ছাড়া বাকিরা খাতায়কলমে স্কুলের পড়ুয়া হলেও কেউই স্কুলে আসত না৷ সেই কারণে অন্য দুই ছাত্রের নাম কেটে দিতে হয়েছিল৷ তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম প্রথম অবাক লাগলেও এখন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি৷’’ স্কুলের জন্য পড়ুয়া জোগাড় করতে কার‌্যত গ্রামবাসীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন সর্বজিৎ৷ পঞ্চায়েতের কাছেও দরবার করেছিলেন, যাতে এই সরকারি স্কুলে আরও ছাত্র ভর্তি করানো হয়৷ কিন্তু বিশেষ লাভ হয়নি৷ ক’দিন পর পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করলে প্রাথমিকের পড়াশোনার পাট চুকবে ভিন্দরেরও৷ তার পর কী ভাবে স্কুল চলবে, সেটাই এখন চিন্তার কারণ শিক্ষিকা সর্বজিতের৷

পরলোকে শৈলেন রায়

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২রা জানুয়ারী ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির প্রাক্তন সচিব শৈলেন রায় পরলোক গমন করেন৷ তিনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন৷ তিনি দীর্ঘদিন ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ কমিউনিষ্ট জমানায় বাঙালী জনগোষ্ঠীর ওপর আঘাতের বিরুদ্ধে যখন ‘আমরা বাঙালী’ রুখে দাঁড়িয়েছিল শ্রী শৈলেন রায়ও তাঁদের সক্রীয়ভাবে সহযোগিতা করতেন৷ তিনি একজন নিষ্ঠাবান ও আদর্শবান আনন্দমার্গী ছিলেন৷ কোনরকম কুসংস্কার ও ভাবজড়তাকে প্রশ্রয় দিতেন না৷

কাশ্মীরে তুষারধস

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

বাঙলা থেকে শীত বিদায় নিতে চলেছে৷ তবে উত্তর ভারতে এখনও ব্যাটিং চালিয়ে যাচ্ছে কনকনে আবহাওয়া৷ চলছে তুষারপাতের মরসুম৷ গত সোমবারও উত্তরের তিনটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টি এবং ভারী তুষারপাতের সতর্কতা জারি করেছিল ৷ জম্মু ও কাশ্মীরে হতে পারে তুষারধস৷ মৌসম ভবনের তরফে সেখানকার বাসিন্দাদের খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে৷ মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গত সোমবার হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং সিকিমের উঁচু এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে৷ সেই সঙ্গে ভারী তুষারপাতের সম্ভাবনাও ছিল ৷ তিন রাজ্যে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ এ ছাড়া, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত ভাবে বরফ পরে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায়৷ কাশ্মীরে গত কয়েক দিন ধরেই বরফ পড়ছে৷ রাস্তাঘাট সাদা বরফের চাদরে ঢেকে গিয়েছে৷ বাড়ি, গাড়ির উপরেও বরফের আস্তরণ পড়তে দেখা গিয়েছে৷ এর মাঝে গত সোমবার আরও তুষারপাতের কারণে তুষারধস হয়েছে উপত্যকায়, মৌসম ভবনের পূর্বাভাসে সেই ইঙ্গিত রয়েছে৷ তবে আবহবিদেরা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার থেকে কাশ্মীরে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে গত রবিবারও অত্যধিক তুষারপাতের কারণে কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়েছে৷ বাতিল হয়েছে অনেক বিমান৷ জাতীয় সড়ক-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বরফের পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ পর্যটকেরা যার ফলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন৷ অনেকে পাহাড়ে আটকে পড়েছেন৷ দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যে আবার অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে৷ উত্তরাখণ্ডের নিচু এলাকাতেও বৃষ্টি হয়েছে গত রবিবার৷ বৃষ্টির কারণেই এই রাজ্যগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রয়েছে৷ তবে দিনের তাপমাত্রা বেশ কমেছে৷ আবহাওয়ার কারণে বিমান পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে৷ বিভিন্ন বিমান সংস্থা ইতিমধ্যে তা নিয়ে যাত্রীদের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করেছে৷ ভাল করে খোঁজখবর নিয়ে যাত্রা শুরু করতে বলা হয়েছে৷

বিধবংসী: দাবানল চিলিতে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

গত দু’দিন ধরে দাবানল ছড়িয়েছে মধ্য চিলির ভালপারাইসো এলাকায়৷ সেই আগুন সর্বগ্রাসীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের শহরগুলিতে৷ ইতিমধ্যে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের৷ দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা বলছিলেন, ‘‘রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা ৫টি দগ্দ দেহ উদ্ধারের পরেই বুঝেছিলাম আসলে সংখ্যাটা অনেক বেশি৷ এ বার তা হুহু করে বাড়তে চলেছে৷’’ মধ্য চিলির শান্ত সৈকত শহর ভিনিয়া দেল মার৷ এখানকার বিখ্যাত মিউজিক ফেস্টিভ্যালের সময় ছাড়াও সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনা লেগে থাকে৷ সম্প্রতি চিলির সেই শান্ত শহর জ্বলছে দাবানলে৷

চিলিতে দাবানল নতুন কিছু নয়৷ ২০১৭ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছরই গরমের সময় কোথাও না কোথাও দাবানল লাগে৷ গত বছর দাবানলে মৃত্যু হয়েছিল ২৭ জনের৷ প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টর জমি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছিল৷ এ বছর এখনও পর্যন্ত ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগুন লেগেছে৷ কিন্তু এ বার দাবানল ছড়াচ্ছে অনেক দ্রুত গতিতে৷ মাত্র দু’দিনে ৩০ হাজার হেক্টর থেকে ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে৷ ফলে ভয়াবহতা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন৷ গত শুক্রবার ভিনিয়া দেল মারের বাড়িতে বসে টিভিতে দাবানলের খবর শুনছিলেন রডরিগো পুলগার৷ হঠাৎ খেয়াল করলেন, আগুন এসে পড়েছে তাঁর আশপাশের বাড়িতেও৷ আগুন থেকে বাঁচতে কাঠের ছাদে জল ছড়াতে শুরু করেন তিনি৷ তাতে নিজের বাড়িটি রক্ষা পেলেও সকলেই তাঁর মতো সৌভাগ্যবান নন৷ পুলগার জানান, এলাকায় প্রায় ১৩ হাজার প্রতিবেশী দাবানলের জেরে ছাদ হারিয়েছেন৷ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বহু বাড়ি৷ খানিক দূরেই থাকেন ৬১ বছরের এল অলিভার৷ তিনি বললেন, ‘‘আমাদের ছোট্ট শান্ত শহরটা নরক হয়ে গিয়েছে৷ পাশের বাড়িতে আগুন লেগেছিল৷ আমি ওদের সাহায্য করছিলাম৷ কিন্তু তার পর আমার বাড়িতেও আগুন লাগল৷ গায়ের উপরে উড়ে এসে পড়ছিল গরম ছাই৷ এই এলাকায় বেশির ভাগই বয়স্ক লোকের বাস৷ প্রতিবেশী এক বৃদ্ধাকে আমরা বার করে আনতে পারলাম না৷ চোখের সামনে অগ্ণিদগ্দ বাড়িতেই মারা গেলেন তিনি৷’’ ভালপারাইসোর বহু এলাকা এখন ঘন কালো ধোঁয়ার চাদরে ঢাকা৷ তবে নিকটবর্তী বসতি এলাকাগুলি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের৷ ট্রাক আর হেলিকপ্ঢারে করে দমকল বাহিনী উদ্ধার কাজে নেমেছে৷ চিলির প্রেসিডেন্ট এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক৷’’ চিলিতে দাবানলের প্রকোপ দিনে দিনে বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ণ পরিবেশবিদেরাও৷ তাঁদের মতে, এ বছর এল নিনো, খরা আর তাপপ্রবাহের প্রভাবে দাবানল এত অল্প সময়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে৷ তা ছাড়া, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব তো আছেই৷

গণতন্ত্র রক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া প্রতিক্রিয়া

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল৷ স্বয়ং রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছিল৷ এই নিয়ে বিরোধীপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়৷ গত ৫ই ফেব্রুয়ারী সুপ্রিমকোর্টে এই মামলার শুনানী ছিল৷ সুপ্রিম কোর্ট এইদিন মেয়র নির্বাচন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেয়৷ মেয়র নির্বাচনে ব্যালট পেপার নষ্ট করে দিয়েছিলেন স্বয়ং রিটার্নিং অফিসার৷

এদিন প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন প্রিসাইডিং অফিসার যে ক্যামেরার দিকে ফেরার অপরাধীর মতো তাকিয়ে ব্যালট পেপার নষ্ট করেছে তা ভিডিওতে দেখা গেছে৷ প্রধান বিচারপতি বলেন এত গণতন্ত্রকে হত্যার করার সামিল, আমরা স্তম্ভিত! এটা কি একজন রিটার্নিং অফিসারের ব্যবহার৷ ওই অফিসারের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি৷

 

মেমারি ও শিলচরে সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২,৩ ও ৪ঠা ফেব্রুয়ারী বর্ধমান জেলার মেমারি আনন্দমার্গ স্কুলে ও অসম শিলচরে আনন্দমার্গ আশ্রমে আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ তিনদিনের এই আলোচনা সভায় আলোচ্য বিষয় ছিল---আদর্শ মানুষের জীবনচর্চা কেমন হওয়া উচিত, বুদ্ধির মুক্তি, প্রত্যাহার যোগ ও পরমাগতি, পাপস্য কারণত্রয়ম্‌৷ আলোচনা সভায় মুখ্য প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত, সহযোগিতায় ছিলেন আচার্য কৃষ্ণপ্রসুনানন্দ অবধূত৷

শিলচর সেমিনারে মুখ্য প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য বিকাশানন্দ অবধূত ও এছাড়াও ছিলেন প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব আচার্য সুপ্রভানন্দ অবধূত ও শিলচর ডি.এস.(এল) অবধূতিকা আনন্দ অরুন্ধুতি আচার্যা প্রমুখ৷ তিনদিনের এই সেমিনারে দার্শনিক তত্ত্ব আলোচনার পাশাপাশি প্রত্যহ কীর্ত্তন, মিলিত সাধনা, আসন অভ্যাস করার পাশাপাশি কীর্ত্তন পরিক্রমা, শোভাযাত্রা সহকারে পথ পরিক্রমার মাধ্যমে আনন্দমার্গের আদর্শ বাহিরে সমাজে পৌঁছে দেওয়া হয়৷