সংবাদ দর্পণ

মহাকুম্ভের গল্প ফেঁদে ব্যবসা উঠছে নানা প্রশ্ণ

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

১৪৪ বছর পরে একবার মহাকুম্ভ৷ সব মানুষের জীবনে এই অমৃত লাভের সুযোগ আসবে না৷ যারা সুযোগ পাবে তাও জীবনে একবারই৷ যে দেশে শিক্ষিত অশিক্ষিত অর্ধশতাংশের বেশী মানুষ এখনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে তথাকথিত ধর্মীয় আবেগে ছুটে চলে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে---সেই মানুষকে সুচতুর কৌশলে মহাপুণ্য সঞ্চয়ের লোভ দেখিয়ে লক্ষ কোটির ব্যবসা করার সুযোগও হয়তো ১৪৪ বছরে একবার আসে৷ তাই ব্যবসাদার ব্যবসা ফেঁদে বসেছে, মানুষ ছুটছে অমৃতের আশায় মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিয়ে মানবতাকে পদপিষ্ট করে৷

অমৃতলাভের আশায় অন্ধ আবেগে ছুটছে উদ্‌ভ্রান্ত মানুষ মরছে পদপিষ্ট হয়ে৷ মহাকুম্ভে অমৃতলাভের আশায় জনস্রোত নয়াদিল্লি রেলস্টেশন থেকে প্রয়াগরাজ৷ ধর্মের নামে ব্যবসায় মত্ত উত্তরপ্রদেশ সরকার, কেন্দ্র সরকার সেদিকে দৃষ্টি নেই৷ সরকারের লক্ষ্য সেই সব কোটিপতিদের দিকে৷ তাদের জন্যে লাখো টাকার তাঁবু আসা যাওয়ার ভি.আই.পি ব্যবস্থা৷ আর পদপিষ্ট হয়ে যারা অকালে ঝরে গেল তাদের প্রকৃত হিসাব কি সরকারের কাছে আছে৷ যদিও সরকারী হিসেবে মহাকুম্ভের বলি ৫৫ জন৷ কিন্তু সরকারী তথ্য বিশ্বাস করে ক’জন!

যে মহাকুম্ভের গল্প ফেঁদে এত মানুষকে আবেগে ভাসিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল সেই মহাকুম্ভের সত্যতা নিয়েই এখন প্রশ্ণ উঠছে৷ ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভের গল্প ফেঁদে৷ মানুষকে টেনে আনার আসল উদ্দেশ্য কি ব্যবসা করা! বিজেপি সাংসদ খাণ্ডেলওয়ালার দাবি ব্যবসা তিন লক্ষ কোটি ছাড়িয়ে যাবে৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভের দাবী বিশ্বাসযোগ্য নয়৷ আমি এ বিষয়ে অজ্ঞ তবে যাঁরা গবেষণা করেন তারাই আসল সত্য বলতে পারবেন৷ অধ্যাপক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন--- যদি ১৪৪ বছর আহে মহাকুম্ভ হয়ে থাকে তবে সাল তারিখ জানাক৷ বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার পুরোহিত কমলেশ ভট্টাচার্য বলেন ১৪৪ বছর এই প্রথম এমন যোতত্ত্ব কতটা গ্রহণযোগ্য সন্দেহ আছে৷ যারা মহাযোগ তত্ত্বের প্রচার করছে তাদের কাছেও কোন প্রামান্য তথ্য নেই৷ সুকৌশলে একটা মিথ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ব্যবসার লক্ষ্যে৷ অর্দ্ধ শতাধিক লাসের উপর দাঁড়িয়ে যোগীর সরকার সেই লক্ষ্যে সফল৷

কলিকাতায় সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ডায়াসিস স্তরের সেমিনার৷ গত ২১,২২,২৩শে ফেব্রুয়ারী কলিকাতা ভি.আই.পি নগরের আনন্দমার্গ আশ্রমে আনন্দমার্গ দর্শন নিয়ে চর্চার জন্যে তিনদিনের এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল৷

এই আলোচনা সভায় আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়৷ আলোচনার আধ্যাত্মিক বিষয় ছিল ‘তন্ত্র ও সাধনা’ চতুবর্গ ও ভক্তি৷ এছাড়া সামাজিক বিষয় ছিল--- আমাদের সমাজ শাস্ত্র ও প্রাউটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের ওপর আলোচনা হয়৷ সেমিনারের আয়োজক ছিলেন কলিকাতার ভুক্তিপ্রধান সুনন্দা সাহা, তাঁকে সহযোগিতা করেন স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাইবোনেরা৷ আলোচনায় প্রশিক্ষণ ছিলেন আচার্য অভিব্রতানন্দ অবধূত ও আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত৷

ভারতীয় ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য অনুদান দিতে চাইছে না আমেরিকা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য আমেরিকার অনুদান প্রসঙ্গে যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, প্রায় প্রতি দিনই তাতে ইন্ধন জুগিয়ে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রতি দিন এ বিষয়ে কিছু না কিছু মন্তব্য করছেন তিনি৷ এ বার জানালেন, আমেরিকার থেকে অনেক সুযোগসুবিধা নেয় ভারত৷ বরং এখন ভারতের উচিত, আমেরিকাকে সাহায্য করা৷ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর আমেরিকার অনুদান নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে৷

গত রবিবার ভারতের ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৮২ কোটি টাকা) অনুদান বন্ধের কথা ঘোষণা করে আমেরিকার সংশ্লিষ্ট দফতর৷ আন্তর্জাতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশকে অর্থসাহায্য করে থাকে আমেরিকা৷ অভিযোগ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সেই (ইউএসএইড) অনুদান আসত ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধি করার জন্য৷ ট্রাম্প জানান, ভারতকে এই অর্থসাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই৷ শনিবার (স্থানীয় সময়) একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতকে তাদের নির্বাচনের জন্য আমরা এত টাকা কেন দেব? বরং ওরা আমাদের সাহায্য করুক৷ সেটা কেমন হবে? ভারতের কোনও টাকার প্রয়োজন নেই৷’’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘‘ভারত আমাদের থেকে প্রচুর সুযোগসুবিধা নেয়৷ ওদের করের পরিমাণ অনেক বেশি৷ আমরা ওখানে কিছু বিক্রি করতে চাইলে ২০০ শতাংশ কর নেওয়া হয়! আর ওদের ভোটের জন্য আমরা টাকা পাঠাচ্ছি? কেন?’’ উল্লেখ্য, ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের ২৫২ কোটি টাকার (২ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার) অনুদানও বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ সেই অনুদানকেও একই ভাবে অপ্রয়োজনীয় বলেছেন তিনি৷

আমেরিকার অনুদান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও করেছেন ট্রাম্প৷ তিনি বলেন, ‘‘ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২.১০ কোটি ডলার ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে যাচ্ছে! কিন্তু কেন আমরা এই টাকা ভারতকে দেব? আমাদেরও তো ভোটের হার বৃদ্ধি করা দরকার৷’’ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রক থেকে বিবৃতি এসেছে৷ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের তরফে তহবিল সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷ বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে৷ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ হচ্ছে, যা উদ্বেগের৷’’ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘ট্রাম্পের প্রশাসনের আধিকারিকেরা কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন এবং অবশ্যই তা উদ্বেগের৷ ইউএসএইড নিয়ে আমরা কাজ করি কি না, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ণ নেই৷ ইউএসএইড-কে ভারতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ বছরের পর বছর ধরে ওই সংস্থা এখানে কাজ করছে৷ কিন্তু ওদের কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল সরল বিশ্বাসে, ভাল কাজের জন্য৷ এখন কথা উঠছে, আমেরিকার অনুদান খারাপ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে৷ ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার৷ যদি এই অভিযোগ সত্যি হয়, দেশের মানুষের এটা জানার অধিকার আছে যে, কারা সেই খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত৷’’ গত শনিবার ট্রাম্প আবার এই অনুদানের বিতর্ক উস্কে দিলেন৷

মহাকাশ গবেষণায় মোড় ঘোরাতে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে হাজির রাশিয়া

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

দূরত্ব প্রায় সাড়ে ২২ কোটি কিমি৷ অথচ সেখানে পৌঁছোতে লাগবে মাত্র ৩০ দিন৷ ২১ শতকে এ ভাবেই চোখের পলকে লাল গ্রহ জয়ের স্বপ্ণ দেখা শুরু করেছেন রুশ মহাকাশ গবেষকেরা৷ তার জন্য তৈরি হয়েছে অতিশক্তিশালী অত্যাধুনিক ইঞ্জিন৷ মস্কোর মিশন সফল হলে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)যে বড় ধাক্কা খাবে,তা বলাই বাহুল্য৷

সম্প্রতি মঙ্গল অভিযানের দিকে নজর দিয়েছে রুশ প্রশাসন৷ সেই লক্ষ্যে একটি অতি শক্তিশালী প্লাজমা ইঞ্জিন তৈরি করেছেন সেখানকার মহাকাশবিজ্ঞানীরা৷ তাঁদের দাবি, এর সাহায্যে মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে পৌঁছোনো যাবে লাল গ্রহে৷ ইঞ্জিনটির নির্মাণকারী সংস্থা রোসাটম ট্রয়েটস্ক ইনস্টিটিউটের দাবি, তাঁদের যন্ত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করবে৷ রোসাটমকে যাবতীয় সাহায্য করছে রাশিয়ার সরকারি মহাকাশ সংস্থা রসকসমস৷

রোসাটমের ইঞ্জিনের চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ১৪ মিটার লম্বা এবং ৪ মিটার চওড়া একটি ভ্যাকুয়াম চেম্বার তৈরি করেছেন রুশ ইঞ্জিনিয়রেরা৷ চেম্বারটির ভিতরে কৃত্রিম ভাবে এক টুকরো মহাকাশকে রেখেছেন তাঁরা৷ পাল পর্যায়ক্রমিক মোডে সেখানে ইঞ্জিনটি ৩০০ কিলোওয়াট শক্তিতে কাজ করেছে৷ টানা ২,৪০০ ঘণ্টা সচল ছিল ওই ইঞ্জিন৷ মঙ্গলযাত্রার পক্ষে এই সময়সীমা যথেষ্ট৷ তা সত্ত্বেও ইঞ্জিনটির আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ মহাকাশ গবেষণায় প্লাজমা প্রপালশান পদ্ধতি নতুন নয়৷ তা সত্ত্বেও রোসাটমের ইঞ্জিনটিকে ‘খেলা ঘোরানো’ আবিষ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে৷ তার একমাত্র কারণ হল, রুশ ইঞ্জিনটির গতিবেগ৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ইঞ্জিনটির সাহায্যে নভোচারীরা মাত্র ৩০ দিনে মঙ্গলে পৌঁছে যেতে পারবেন৷ সেই মাইলফলককে অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে৷

সূত্রের খবর, ২০৩০ সালের মধ্যেই রোসাটম সংশ্লিষ্ট প্লাজমা ইঞ্জিনের একটি ফ্লাইট মডেল তৈরি করবে৷ এর পর সেটিকে মহাকাশে পাঠাবেন রুশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা৷ সে ক্ষেত্রে সৌরজগতের বাইরে অভিযানের দরজাও খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এ ছাড়া দূরবর্তী গ্রহগুলিতে নভোচারী প্রেরণ এবং গ্রহাণু অনুসন্ধানের কাজ বেশ সহজ হবে বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন দুনিয়ার তাবড় মহাকাশবিজ্ঞানীরা৷ সূত্রের খবর, ২০২৬ সালের মধ্যে ক্যাটাপল্টের সাহায্যে একগুচ্ছ কৃত্রিম উপগ্রহ মহাশূন্যে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার৷

পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাটিয়ে মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ বা মহাকাশযান নিয়ে যেতে লক্ষ লক্ষ পাউন্ড জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি সঞ্চয় করে রকেট৷ ক্যাটাপল্টের প্রযুক্তি এর থেকে একেবারে ভিন্ন৷ স্পিনলঞ্চ পেলোড (ওজন) উৎক্ষেপণের জন্য এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে বিশুদ্ধ গতিশক্তি৷ সংস্থার তৈরি যন্ত্রটিতে বিশাল ভ্যাকুয়াম সিলড সেন্িন্টফিউজ রয়েছে৷

ক্যাটাপল্ট উৎক্ষেপণের জন্য বিশেষ ধরনের একটি টিউব ব্যবহার করছে স্পিনলঞ্চ৷ এর সাহায্যে পেলোডগুলিকে অস্বাভাবিক গতিতে ঘুরিয়ে শক্তি সঞ্চয় করা হচ্ছে৷ সেই শক্তিই কৃত্রিম উপগ্রহ বা মহাকাশযানকে পৌঁছে দিচ্ছে অন্তরীক্ষে৷ পেলোডগুলিকে দুরন্ত গতিতে ঘোরাতেও বিদ্যুতের ব্যবহার করছে স্পিনলঞ্চ৷

পুঁজিবাদী শোষণ ও দুর্নীতির জাল ছিন্ন করতে সমবায় ব্যবস্থাকে সফল করে তুলতে হবে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

প্রবীন আমরা বাঙালী নেতা শ্রী মনতোষ মণ্ডল তাঁর বোকারো বাস ভবনে এক আলোচনায় বলেন--- সারাদেশে পুঁজিবাদী শোষণ ও দুর্নীতির জাল বিস্তার করেছে৷ এর থেকে শোষিত জনগণকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে একমাত্র সমবায় আন্দোলন৷ এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশনা আছে শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের সামাজিক অর্থনৈতিক তত্ত্ব যা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব বা সংক্ষেপে প্রাউট নামে পরিচিত৷

শ্রী মণ্ডল বলেন পুঁজিবাদী শোষকরা তাদের শোষণ কায়েম রাখতে কখনই সমবায় ব্যবস্থাকে সফল হতে দেবে না৷ কারণ সমবায় সফল হলে আর্থিক ক্ষমতা স্থানীয় মানুষের হাতে চলে যাবে৷ প্রাউটের বিকেন্দ্রিত আর্থিক ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলি গড়ে উঠবে একই অর্থনৈতিক সমস্যা, একই ধরণের সম্পদ ও সম্ভাবনা, জাতিগত সাদৃশ্য, সাধারণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, একই সাধারণ সামাজিক সাংস্কৃতিক বন্ধন--- যেমন ভাষা সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য সাংবেদনিক উত্তরাধিকার প্রভৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে৷ এই জনগোষ্ঠীর ওপর থাকবে আর্থিক ব্যবস্থা পরিচালনার দায়িত্ব৷ এখানে বহিরাগতের স্থান হবে না৷ তাই প্রাউটের সমবায়-ব্যবস্থা গড়ে উঠবে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থানীয় জনমণ্ডলীর শ্রমে ও বুদ্ধিতে একই অর্থনৈতিক কাঠামোয় একই প্রয়োজনের তাগিদে ও হাতের কাছে থাকবে উৎপন্ন বস্তুর বাজার৷

ঠিকপথে পরিচালিত হলে সমবায় ব্যবস্থা ব্যষ্টি মালিকানার ত্রুটি থেকে মুক্ত হবে৷ এ ব্যাপারেও প্রাউট তিনটি তত্ত্বের উল্লেখ করেছে সমবায় ব্যবস্থাকে সফল করতে নৈতিকতা, শক্তিশালী প্রশাসন ও জনগণের দ্বারা আন্তরিকভাবে সমবায়কে গ্রহণ করা৷ শ্রী মণ্ডল পরিশেষে বলেন তাই সমবায় ব্যবস্থা সফল করতে প্রয়োজন সৎনীতিবাদী নেতৃত্বের৷ সেই সঙ্গে জনগণকে শিক্ষিত সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা সমবায়ের উপকারিতা বুঝতে পারে৷

কিন্তু ভারতের মতো পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক কাঠামোয় সমবায়-ব্যবস্থা কখনই সফল হবে না৷ কারণ পুঁজিবাদী শোষক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রের দালাল ফোড়েরা কখনই আর্থিক ব্যবস্থাকে সফল হতে দেবে না৷ তাই প্রথমেই প্রয়োজন ধনতান্ত্রিক আর্থিক নীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও রাষ্ট্রের আর্থিক কাঠামোয় আমূল পরিবর্তন৷ তবেই সমবায় ব্যবস্থার সফল রূপায়ন সম্ভব হবে৷

পান্তা ভাতে নুন যোগাতে সময় চলে যাচ্ছে--- সামাজিকতা হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

সম্প্রতি ইণ্ডাসভ্যালির এক সমীক্ষার বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে দেশের প্রায় ১০০কোটি মানুষ বেঁচে থাকার রসদ যোগাড় করতেই উপার্জনের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে৷ সঞ্চয় বা অন্য ভোগ্যপণ্য কেনার মতো সামান্য অর্থ সাধারণ মানুষের হাতে থাকছে না৷ আচ্ছা দিনের ভারতে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ দেশের ৫৭ শতাংশ সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে৷ দিন দিন তাদেরই বিকাশ ঘটছে৷ তারাই ধনী থেকে ধনীতর হচ্ছে৷ চরম মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের কবলে পড়ে আমজনতা পান্তা ভাতে নুন যোগাতেই হিমসিম খাচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক টাইম ইউজ সার্ভের প্রতিবেদনে ২০১৯ ও ২০২৪ সালের পার্থক্য তুলে ধরে দেখিয়েছে ২০১৯ সালে যেখানে ৬ঘন্টার কিছু বেশী সময় কাজ করলেই অন্নের সংস্থান হয়ে যেত, ২০২৪ সালে সেখানে সাড়ে সাত ঘন্টা কাজ করতে হচ্ছে৷ তাতেও হেঁসেল সামলানো যাচ্ছে না৷ অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে, ফলে পারিবারিক জীবনে সময় দিতে পারছে না, আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে লৌকিকতা বজায় রাখতে সময় পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ৷ জীবন থেকে সামাজিকতা হারিয়ে যাচ্ছে৷

আচ্ছা দিনের স্বপ্ণ দেখিয়ে মোদি ক্ষমতায় বসেছেন৷ সবকা সাথ সবকা বিকাশের কথাও মোদির মুখে প্রায় শোণা যায়৷ অথচ মোদি জমানায় বিকাশ মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের৷ ১১বছর মোদি জমানায় কর্ম হারিয়ে বেকার হয়েছে ২০ লক্ষ মানুষ৷ মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ের হার গত ৫০ বছরে সর্বনিম্ন৷ সরকারই প্রতিবেদনই প্রমাণ করছে মোদি সরকার ধণিক শ্রেণীর বিকাশের জন্যে৷

থেমে গেল বাঙলার মায়াভরা পথে হাঁটা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

না ফেরার দেশের চলে গেলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়৷ থেমে গেল বাঙলার মায়াভরা পথে হাঁটা৷ তবে কোন দিন থামবে না প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠের সেই গান ‘আমি বাঙলায় গান গাই, আমি বাঙলার গান গাই৷’

১৫ই ফেব্রুয়ারী সকালে এস.এস.কে.এম হাসপাতালে পরলোক গমন করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর৷ তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন৷ তাঁর প্রয়াণে শিল্প সংস্কৃতির জগতের মানুষ শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন৷ দুই বাঙলার সাধারণ মানুষও তাঁর প্রয়াণের খবরে শোক বিহ্বল৷ প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গান চেক পোষ্টের বেড়া পেরিয়ে ওপারেও সমান জনপ্রিয়৷

১৯৪২ সালে ২৫শে জুন অবিভক্ত বাঙলার বরিশালে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম৷ এটা ভারত ছাড় আন্দোলনের বছর৷ তাই হয়তো প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের রক্তেও মিশেছিল আন্দোলন৷ তাঁর গানে গানেই ছড়িয়ে পড়েছিল আন্দোলনের সুর৷ সেই সুরে ভেবেছেন ডান-বাম সব দলের অনুগামীরা৷

বাঙালী জাতির চরম সংকটময় সময়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায় চলে গেলেন৷ ওপারের অস্থিরতার ঢেউ এপারেও৷ ৭৭ বছরে ধরে দিল্লির বঞ্চনায় স্বাধীনতা পূর্ব ভারতের সব থেকে সমৃদ্ধশালী রাজ্যটি আজ নিঃস্ব, রিক্ত৷ শুধু ধন সম্পদে নয়, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির দিক থেকেও৷ এই সময়ই প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষের বড় প্রয়োজন বাঙলার৷ কিন্তু বয়সতো কোন বাধা মানে না৷ ৮৩ বসন্ত ছুঁয়ে চলা থেমে গেল বাংলার সঙ্গীত জগতের অন্যতম প্রাণপুরুষের৷ গায়ক লেখক প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের চলা থেমে গেলেও বাঙালীকে যেতে হবে অনেকদুর৷ আর সেই চলার সঙ্গী হবে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে---আমি বাঙলায় গান গাই---এপার ওপার সব পারে৷‘আমরা বাঙালী’ দলের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব তপোময় বিশ্বাস রবীন্দ্র সদনে তাঁর শবদেহে পুষ্প স্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷

গঙ্গায় দূষণ বাড়ছে ফিসাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ায় স্নানের অনুপযুক্ত প্রয়াগরাজের গঙ্গা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

মানবিক মূল্যবোধহীন অন্ধ আবেগের কাছে হার মানছে মর্মান্তিক মৃত্যু৷ মহাকুম্ভেই পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছে বহু৷ নয়াদিল্লি রেলষ্টেশনে তীর্থযাত্রীদের ভীড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মারা যায় ১৮ জন৷ এখানেও অনেকে আহত৷ তবু অমৃত লাভের আবেগে ভেসে ছুটে যাচ্ছে মানুষ মহাকুম্ভে৷

এদিকে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড আর এক আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে৷ প্রয়াগ রাজে গঙ্গার জল স্নানের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে৷ ১২, ১৩ই জানুয়ারী জল পরীক্ষা করে জানা যায় ওই জল স্নানের অনুপযুক্ত৷ জলে ফিসাল কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়ার মাত্রা নির্দ্ধারন করে জল ব্যবহারের উপযুক্ত কি না৷ ১২,১৩ই জানুয়ারী পরীক্ষার পরও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পূর্ণ্যার্থী প্রয়াগ রাজের গঙ্গায় স্নান করছে৷ লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগমে মলমূত্র নিষ্কাসনের ব্যবস্থা থাকলেও গঙ্গার জলেও মিশছে ব্যাক্টেরিয়া বাড়ছে৷ এখনও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগমে মল মূত্র নিষ্কাসনের ব্যবস্থা থাকলেও গঙ্গার জলেও মিশছে পয়ঃবর্জ৷ তারফলেও জলে ফিসাল কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া বাড়ছে৷ এখনও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ স্নান করছে৷ ফলে এই ব্যাক্টেরিয়া আরও বাড়ার সম্ভাবনা৷

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এই প্রতিবেদনে মোদির নমামি গঙ্গে কর্মসূচী নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর মোদি সরকার এই প্রকল্প ঘোষনা করে৷ গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত ও সংরক্ষণ খাতে প্রতি বাজেটে বিপুল টাকা বরাদ্দ হচ্ছে৷ তারপরেও গঙ্গার এই অবস্থা৷ আর সেটা জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারেরই একটি দপ্তর কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড৷

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এই প্রতিবেদনে উদ্বিগ্ণ ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল৷ আগেও উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছিল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল---দূষণরোধে কি ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার৷ উত্তর প্রদেশ সরকার প্রতিবেদন জমাও দেন৷ কিন্তু এখন কেন্দ্রীয় বোর্ডের প্রতিবেদন দেখে গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল উত্তর প্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডকে তলব করেছে গ্রীন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব৷ গঙ্গা দুষণ নিয়ন্ত্রণে উত্তরপ্রদেশ কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা ট্রাইবুনালের কাছে বিস্তারিত জানাতে হবে৷

যোগীর সাফাই--- উত্তরপ্রদেশ রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রতিবেদন খারিজ করে দিলেন যোগী৷ কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়াগরাজের গঙ্গা স্নানের অনুপযুক্ত৷ গত ১৯শে ফেব্রুয়ারী রাজ্য বিধানসভায় যোগী দাবী করেন সঙ্গমের জলে স্নান করাও যাবে ও এই জল পানেরও যোগ্য৷ সনাতন ধর্ম ও কুম্ভের বদনাম করতে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে৷ যোগীর দাবী ৫৬কোটি ২৫লক্ষ মানুষ প্রয়াগে স্নান করেছেন৷ যোগীর কথায় গঙ্গার জল নয়, ভুল তথ্য প্রচার করে মা গঙ্গাতাঁর দাবীর সমর্থনে রাজ্য দূষন নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রতিবেদন তুলে ধরে৷

তবে যোগীর দাবীকে মানতে নারাজ বিরোধী রাজনৈতিক মহল৷ তাঁদের দাবী জল দূষণের ফলে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ ধামা চাপা দিতে যোগী ধর্মীয় আবেগকে হাতিয়ার করছে৷ ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনালের বক্তব্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড উপযুক্ত তথ্যই এখনও দিতে পারেনি৷ যোগীর দাবী নিয়ে গ্রীন ট্রাইব্যুনাল কোন কথা না বললেও তাঁদের বক্তব্য কেন্দ্র ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এখনও পর্যন্ত গঙ্গার জলের গুণগত মান নিয়ে কোন বিস্তারিত রিপোর্ট দেয়নি৷

শিক্ষার অভাবে অন্ধ আবেগে ধর্র্মেন্মাদ মানুষ মৃত্যুর মুখে ছুটে যাচ্ছে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

মহাকুম্ভে পর পর দুর্ঘটনায় নারী শিশুসহ অনেকগুলি প্রাণ অকালে ঝরে গেল৷ সরকার দায় এড়াতে চাইছে, বিরোধীরা সরকারের ঘাড়ে দায় চাপাতে চাইছে৷ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই রাজনীতি স্বাভাবিক সে মৃত্যু নিয়ে হোক আর মসনদ নিয়ে হোক৷

প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাত খাঁ বলেন যে কোন মৃত্যুই দুঃখজনক৷ কিন্তু মহাকুম্ভে যেভাবে এতগুলো মানুষ অকালে চলে গেল, সেই মর্মান্তিক মৃত্যুর দায় সরকার অস্বীকার করতে পারে না৷ তিনি বলেন শুধু মহাকুম্ভের অব্যবস্থাই এর জন্য দায়ী নয়, মানুষের শিক্ষা সমাজচেতনা ও ধর্মবোধের অভাবের সুযোগ নিয়ে চতুর দেশনেতারা মানুষকে অন্ধ আবেগে ভাষিয়ে মহাকুম্ভে ছুটিয়ে নিয়ে গেছে৷ মানুষও শিক্ষা ও সমাজ চেতনার অভাবে অমৃত লাভের অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে ছুটে গেছে৷ পরিণতির কথা ভাবেনি৷ শ্রী খাঁ বলেন--- কিন্তু রাষ্ট্রের তো ভাবা উচিত ছিল৷ প্রয়াগে কত মানুষের পরিসর আছে আর কত মানুষ সমবেত হয়েছে, সেই তথ্য তো সরকারের কাছে থাকা উচিত৷

কিন্তু সরকার ওসব ভাবে না৷ শুধু রাজনৈতিক স্বার্থের চিন্তা করে অজ্ঞ অচেতন মানুষকে অসার উন্মাদনায় ভাসিয়ে দিয়েছে ধর্মের মোড়কে৷ শ্রী খাঁর প্রশ্ণ প্রয়াগ সঙ্গমে ডুব দিয়ে কোন অমৃত লাভ হবে? প্রয়াগ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কর্মভূমি৷ শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা ‘‘আত্মমোক্ষার্থং জগদ্বিতায় চ’’৷ জগতের হিত সাধনই মোক্ষ মুক্তির সোপান৷ আর শ্রী কৃষ্ণের কর্মভূমিতেই মানুষ ছুটে চলেছে মৃত্যুমুখে অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারে আচ্ছন্ন আবেগে৷

সমাজ সচেতনতা ও শিক্ষার অভাবই মানুষকে এই পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রের প্ররোচনায়৷ শ্রী খাঁর কথায় মনে রাখতে হবে শিক্ষার সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক গভীর৷ মানবিক মূল্য ধর্মবোধ এসবের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত শিক্ষা, উপযুক্ত শিক্ষাই মানুষকে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, ভাবজড়তা ও সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করে প্রকৃত মানুষ করে গড়ে তুলবে৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও সেই উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা আজও গড়ে উঠল না৷

শ্রী খাঁ আরও অভিযোগ করেন সংকীর্ণ স্বার্থান্বেষী রাজনীতিক ও পুঁজিবাদী শোষক কখনও চায় না মানুষ উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠুক৷ তাই দেশ জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে নিদারুণ অব্যবস্থা৷

পরিশেষে শ্রীখাঁ বলেন আনন্দমার্গ দর্শনের প্রণেতা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী সমাজ সংস্কার করতে গিয়ে আদর্শ সমাজ গড়ার পরিকল্পনা করতে গিয়ে প্রথমেই অনুভব করলেন প্রকৃত শিক্ষার অভাবই মানুষকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে, অন্ধ আবেগে ছুটিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ তাই তিনি শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে দিলেন নতুন শিক্ষানীতি--- ‘নব্যমানবতা-ভিত্তিক শিক্ষা’ মানুষকে প্রকৃত মানব ধর্মের শিক্ষা দিয়ে উপযুক্ত মানুষ করে তুলতে আনন্দমার্গ শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতবর্ষ নয়, বিশ্বের দেশে দেশে নব্যমানবতা-ভিত্তিক শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হাজার হাজার স্কুল পরিচালনা করছে৷ এই নব্যমানবতা ভিত্তিক শিক্ষাই মানুষকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনবে৷

শিপ্রা এক্সপ্রেসে বাঙলার নাট্যকর্মীরা আক্রান্ত প্রতিবাদে সরব আমরা বাঙালী

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সম্প্রতি হাওড়াগামী শিপ্রা এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরায় প্রয়াগরাজে বাঙালী যাত্রীদের ওপর দুর্বৃত্তদের আক্রমন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আর.পি.এফদের নিষ্ক্রিয়তার তীব্র প্রতিবাদ জানালো ‘আমরা বাঙালী’ সংগঠন৷ অবিলম্বে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবীতে ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব উজ্বল ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ, শুভজিৎ পাল ও ‘বাঙালী মহিলা সমাজে’র পক্ষে ভারতী কুণ্ডুর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল হাওড়া ডি.আর.এম কার্যালয়ে গিয়ে ডি.আর.এম মহাশয়ের মারফৎ ভারতবর্ষের রেলমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন ভারতবর্ষ বিভিন্ন জাতি এবং সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশ৷ ‘ভারতীয় রেল’ তাদের সবার মধ্যে এক সুন্দর সংহতি স্থাপন করেছে, প্রতিটি রাজ্যকে পারস্পরিক বন্ধনে আবদ্ধ করেছে৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করলাম সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের আহ্বানে ইন্দোর গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দমদমের একটি নাট্যসংস্থা৷ তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারি, অনুষ্ঠান শেষ করে সেই নাট্যদলের শিল্পীরা ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫, রাত ১১.৩০ মিনিট নাগাদ ইন্দোর থেকে হাওড়াগামী শিপ্রা এক্সপ্রেসে ফেরবার উদ্দেশ্যে রওনা হন, পরবর্তীদিনে সকাল ৯.৩০ মিনিট নাগাদ মধ্যপ্রদেশের পাথারিয়া স্টেশনে একদল লোক (পড়ুন দুষৃকতী) হুড়মুড় করে শিপ্রা এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরায় উঠে বেআইনিভাবে সিট দখলের চেষ্টা করে, তাদের দ্বারা বাঙলার নাট্যকর্মীরা আক্রান্ত হন, চলন্ত ট্রেন থেকে বাঙালী শিল্পীদের ব্যাগ, অনুষ্ঠানের সরঞ্জামগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় ও লুটতরাজ চলে৷ বিকেল ৪.৩০মিনিট নাগাদ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ালে, বাঙালী শিল্পীবৃন্দ সাহায্যের জন্য রেলপুলিশ তথা আর.পি.এফের দ্বারস্থ হন৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, রেলপুলিশের ক্ষেত্রেও ‘বাঙালী’ শুনেই, এককথায় বাঙালী হওয়ার অপরাধেই দুর্ব্যবহার শুরু হয়ে যায়!! অভিযোগ ওঠে আর.পি.এফের আধিকারিকরাও বাঙালী শিল্পীদের বলেন ‘‘আপলোগ বাঙালী হো? থোড়া অ্যাডজাস্ট করো’’! যাত্রী সুরক্ষার দাবী জানালে, বাঙালী শিল্পীদের উপর চড়াও হয়ে মারধোর শুরু করে আর.পি.এফের কর্মীরা৷ তিনজন বাঙালী নাট্যকর্মী আহত হন৷ বাঙালী মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে জানা যায়৷ সারারাত ধরে রেল কর্ত্তৃপক্ষকে ইমেল করেও কোন সুরাহা মেলেনি৷ সংরক্ষিত কামরা হওয়া সত্ত্বেও এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে কিভাবে ?

এই বাঙলার বুকেও তো শুধু লোকাল ট্রেন নয়, বহু এক্সপ্রেস ট্রেন বাঙলার বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে চলাচল করে, কিন্তু কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার নিদর্শন নেই,তাহলে রেলপুলিশ থাকা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশের বুকে এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় কিভাবে? বিশেষত আর.পি.এফ-এর প্রধান কাজই হল যাত্রী সুরক্ষা দেওয়া, অভিযোগ সেখানে আর.পি.এফের আধিকারিকরাই নাকি যাত্রীদের মারধর করছে! অথচ ভারতীয় রেল তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি! কাউকে গ্রেফতারও করেনি কেন? বাঙলার আপামর জনগণ জবাব চায়৷ সাম্প্রতিক অতীতে ভারতীয় রেলের সংরক্ষিত কামরায় একাধিকবার বাঙালী নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে৷ প্রশ্ণ উঠেছে আর.পি.এফের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে৷ ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের পক্ষ থেকে ভারতবর্ষের মাননীয় রেলমন্ত্রীর কাছে দাবী করা হয়---ভারতীয় রেলের সংরক্ষিত কামরায় বাঙালীদের হেনস্থা বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন৷ এছাড়া উপরিউক্ত ঘটনার তদন্ত এবং জড়িত প্রত্যেকের যথোপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাচ্ছি৷