ওপিয়াম পপির বীজকোরক সাধারণ পপি থেকে বড় ও পুষ্ট৷ এর গা চিরে দিলে এর থেকে রস বা আঠা বেরোয়৷ তাই হল কাঁচা আফিং৷ এই ওপিয়াম পপির বীজকোরকে যে বীজ থাকে তার রঙ ফিকে ঘি–রঙের, তাকে আমরা পোস্ত বলে থাকি৷ কী অদ্ভুত ব্যাপার, পোস্তর বীজকোরকের আঠা বড় রকমের নেশা ও অধিক মাত্রায় সেবন করলে বড় রকমের বিষ, অথচ ভেতরকার বীজ পোস্তর দানা, যা একটি সত্ত্বগুণসম্পন্ন বস্তু, তা শরীরের স্নিগ্ধতা বজায় রাখতে সাহায্য করে৷
তরল ভেদ–বমিতে ও উদরাময়ের বাড়াবাড়ি অবস্থায় গরম ভাতে অল্প পরিমাণ কাঁচা পোস্ত বাটা ঈষৎ লবণ সহযোগে ভক্ষণ করলে দ্রুত রোগ অপসারণে সাহায্য করে৷ বাংলার মানুষ (বিশেষ করে রাঢ়ে মানুষ) পোস্তর বড়া তো খায়–ই, আলু–পোস্ত, ঝিঙ্গে–পোস্ত, বড়ি–পোস্ত, কুঁদরী–পোস্ত, কাঁচা পোস্ত–বাটা–সবই সাগ্রহে খেয়ে থাকে৷ কথায় বলে ‘‘অতি সর্বত্র বর্জয়েৎ’’৷ খুব বেশী পোস্ত খেলে অপাক আমাশয় হতে পারে৷ তবে মাঝারী পরিমাণ পোস্ত খেলে তা স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য দু’য়ের বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে৷
পোস্ত শরীরকে পোষণ করে বলে সংস্কৃতে এর একটি নাম পোষিত (পোষিত>পোষ্ত>পোস্ত– ‘ষ’ মূর্দ্ধ বর্ণ৷ তার সঙ্গে দন্ত্য বর্ণ ‘ত’ এর সংযুক্তি হয় না৷ তাই ‘পোস্ত’ বানানে ‘ষ’এর স্থানে ‘স’এর আগম হচ্ছে)৷