তেঁতুল

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ তেঁতুল প্রায় সব গ্রীষ্মপ্রধান দেশে জন্মে থাকে৷ প্রজাতিও অনেক, অতি ৰৃহৎ থেকে অতি ক্ষুদ্র নানান ধরনের–লাল–ফিকে হলদে–বেগুনী প্রভৃতি নানা রঙের৷ কোন তেঁতুল অত্যন্ত টক, আবার কোন তেঁতুল মধুর চেয়েও মিষ্টি৷ এই মধু তেঁতুল* দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দ্বীপে জন্মে থাকে৷

সংস্কৃত শব্দ ‘আম্লিক’–যার মানে অম্ল রসযুক্ত বস্তু–এর থেকে প্রাকৃতে এসেছে আম্লি, তার থেকে আমলী৷ মধ্যপ্রদেশে, রাজস্থানের মাড়োয়ারী ভাষায় তেঁতুলকে ‘আমলী’ ৰলা হয়৷ এই আমলী বিকৃত হয়ে হিন্দোস্তানীতে ‘ইমলী’ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তেঁতুলের ইংরেজী শব্দ প্প্ত্রব্জনুস্তু এসেছে ফারসী তামর–ই–হিন্দ থেকে৷ পারস্য দেশে আম জন্মায় না৷ কিন্তু সেখানকার মানুষ প্রাচীনকাল থেকে আমের প্রশংসা শুণেছিলেন৷ ভারত থেকে জনৈক ব্যবসায়ী পারস্য দেশে তেঁতুল নিয়ে গেছলেন৷ পারস্যের লোকেরা ভেবেছিলেন এটাই ৰুঝি আম৷ তাঁরা তার নাম রাখলেন তামর–ই–হিন্দ অর্থাৎ ভারতের আম৷ এই তামর–ই–হিন্দ যখন পারস্য থেকে ইউরোপে পৌঁছল, তার ইংরেজী নাম হল ট্যামারিণ্ড৷

স্নিগ্ধতা আনা ও ৰুদ্ধিবৃত্তির সহায়ক তেঁতুল ঃ নোতুন তেঁতুলের চেয়ে পুরণো তেঁতুলের গুণ অনেক বেশী৷ যে সকল গ্রীষ্মপ্রধান দেশে গ্রীষ্মকালে শরীর শুকিয়ে যায় সে সকল দেশে তেঁতুলের ব্যবহার বিশেষ মূল্যবহ৷ শুকনো দেশে বা টানের সময় তেঁতুল না খেলে শরীর দুর্বল হতে পারে৷ পোস্ত, ৰিরি কলায়ের ডাল ও তেঁতুল বিশুষ্কতা রোগের প্রতিষেধক৷ অতি গরমে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে এই খাদ্যগুলি রোগ নিরাময় করে থাকে৷

তেঁতুল একটি সাত্ত্বিক ফল৷ মস্তিষ্ক রচনায় এর যথেষ্ট ভূমিকা আছে৷

তেঁতুল মানুষের ৰুদ্ধিবৃত্তির সহায়ক৷ ঙ্ম পুরণো তেঁতুলের চাটনি পাকা কলা সহ অল্প পরিমাণে মাঝে মধ্যে খেলে এব্যাপারে ভাল ফল পাওয়া যায়৷ এই ওষুধ আমাশয় রোগেও ভাল ফল দেয়৷ স্মরণশক্তি বাড়াতেও পুরনো তেঁতুলের এই ব্যবহার সাহায্য করে৷ এটি সুপ্তিস্খলন রোগেও সুপথ্যৰ৷ তেঁতুল ৰীজের শাঁস ও বাড়ির পুরণো তেঁতুল ঔষধ তৈরীতে ব্যবহূত হয়৷ তেঁতুলের সাহায্যে অচার, চাটনি ইত্যাদি তৈরী করা হয়৷

অন্যান্য রোগে–ম্লরোগে তেঁতুল ছাল ঃ ‘‘তেঁতুল ছাল পোড়ালে সেই ছাইয়ের যে শাদা অংশটা পাওয়া যায় তার এক আনা পরিমাণ নিয়ে শীতল জলের সঙ্গে পান করলে অম্লরোগে ঙ্মভাল ফল পাওয়া যায়ৰ৷’’