অম্বুবাচির কটা দিন হচ্ছে মাতা বসুন্ধরার ঋতুপর্ব৷ লোকের বিশ্বাস, এই সময় বসুন্ধরা ঋতুমতী অবস্থায় থাকেন৷ সারা ভারত জুড়ে এই পার্বণ পালিত হয়৷ বিধবা নারীরা সাধারণত এই পার্বণ পালন করে থাকেন৷ যেহেতু এইসময় জননী বসুন্ধরা ঋতুমতী হন সেহেতু এই সময় আগুনে রান্না করা কোন জিনিস তারা খান না৷ আগুন জ্বালেন না৷ এমন কি রান্নাও করেন না৷ মাটি খোঁড়েন না---পাছে পৃথিবীর অঙ্গে কোন আঘাত লাগে৷ সূর্যের উত্তর থেকে দক্ষিণে গমন অর্থাৎ দক্ষিণায়নের দিন থেকে (৭ই থেকে ১০ই আষাঢ়ের মধ্যে) তিন দিন এই পার্বণ পালিত হয়৷ এই অম্বুবাচির দিন থেকেই বর্ষা শুরু হয়৷ পৃথিবী জলসিক্তা হয় বলেই এর নাম অম্বুবাচি৷ বহু প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবী নারীরূপে কল্পিত হয়ে আসছে৷ বর্ষাস্নাত ধরিত্রীকে তাই রজ স্বলা মনে করা হয়৷ ওড়িশায় এই অম্বুবাচিকে তাই বলা হয় রজোৎসব৷ অসমের কামাখ্যা মন্দিরেও এই সময় দেবীর ঋতুকাল মনে করে বিশেষ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়৷
চাষীরা এই সময় জমিতে লাঙ্গল দেয় না৷ অম্বুবাচিতে সাপকে দুধ দেওয়ার রীতি আছে৷ বৃষ্টির ফলে খাল বিল পুকুর থেকে সাপেরা উঠে এসে আশ্রয় নেয় গৃহস্থের বাড়িতে৷ মানুষের বিশ্বাস, এই সময় নিরিবিলি রান্নাঘরের উনানে সাপেরা আশ্রয় নেয়৷ তাই সাপের জন্য সেখানে দুধ রাখা হয়৷ প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ভারতীয় ধর্ম-চিন্তায় সাপ প্রজনন শক্তির প্রতীক৷ দুধ কি সেই প্রজননশক্তির প্রতিই পূজার্ঘ্য?
- Log in to post comments