সম্পাদকীয়

নীতিহীন রাজনীতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

যুক্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের অধিকার খর্ব করার  যতগুলি অস্ত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে আছে তার মধ্যে সি.বি.আই একটি৷ রাজ্য রাজনীতিতেও বিরোধী পক্ষ রাজ্যে ঘটিত যেকোন অপরাধের ক্ষেত্রেই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে সিবিআই তদন্তের  দাবী করে৷ কিন্তু প্রশ্ণ হচ্ছে সিবিআইকি সবসময় নিরপেক্ষ তদন্ত করে৷ বা বিরোধীপক্ষ কি সবসময় নিরপেক্ষতার স্বার্থে সিবিআই তদন্তের দাবী তোলে৷ রাজ্যের সি আই ডি যেমন রাজ্য সরকারের অধীনে সিবিআই তেমনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে৷ তাই নিরপেক্ষতার প্রশ্ণে উভয়েই সন্দিহান, রাজনৈতিক দলগুলো এটা জানে না তা নয়৷ তাই বিরোধীদের সিবি আই তদন্ত দাবী করার উদ্দেশ্য সব সময় নিরপেক্ষ নয়, রাজনৈতিক স্বার্থে

মানব আধারে দানব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ঘটনাস্থল রামপুরহাটের একটি অখ্যাত গ্রাম বগটুই৷ একটি মানুষ খুন হন, তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান৷ ওই খুনের পাল্টা হিসাবে সংঘবদ্ধ নির্মমতার, নিষ্ঠুরতার প্রতিচ্ছবি দেখলো দেশবাসী৷ নারী শিশু সহ আটজন মানুষকে নির্মমভাবে ঘরে বন্ধ করে পুড়িয়ে মারা হল৷

‘দধীচির আত্মত্যাগ ব্যর্থ হয়নে’

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও মহান আদর্শ বিনা বাধায় প্রতিষ্ঠিত হয় নি৷ এই সত্য কথাটি আনন্দমার্গের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷ পাণ্ডব বর্জিত অখ্যাত গ্রাম পুরুলিয়া জেলার বাগলতা–যেখানে দিনে শেয়ালের ডাক শোনা যেত সেই অতি দরিদ্র গ্রামের স্থানীয় কিছু মানুষ উদরের ক্ষুণ্ণিবৃত্তির জন্যে এখানে ওখানে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত পশু শিকারের জন্যে বা ঘাসের বীজ সংগ্রহ করত সেই শ্মশান ডাঙ্গায়৷ মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী শত শত গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী–সন্ন্যাসিনীদ্ নিয়ে ও মার্গের গৃহী অনুগামীদের সহায়তায় বিশ্বের কল্যাণে এখানে এক সর্বানুসূ্যত আদর্শ আশ্রম গড়ে তোলেন অতি অল্প কয়েক বছরের মধ্যে আর স্থানটির নামকরণ করলেন ‘আনন্দনগর’৷ যাকে বলা

ইউক্রেন ---সবপক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক

বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হলো শক্তিধর দেশগুলি ছোট ছোট রাষ্ট্রগুলিকে কব্জায় এনে নিজেদের  প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় রাখা ৷ এতে ছোট রাষ্ট্রগুলির  অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে৷  রাশিয়ার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত বিখ্যাত শষ্যভাণ্ডার ইউক্রেন যার রাজধানী কিয়েভ তার উপর দুই শক্তি শালী রাষ্ট্র আমেরিকা ও রাশিয়া নিজেদের  সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে ছোট রাষ্ট্রটিকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে৷ স্মরণে থাকে যে জার্র্মনীর  হিটলার বিংশ শতাব্দীর ৪ দশকের শেষের দিকে বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ করে৷ সেই সময় রাশিয়া পোড়া মাটির নীতি নেয়৷ তার ফলে এই  ইউক্রেনের শষ্যভাণ্ডার ধবংস হয়৷ হিটলারের সঙ্গে এঁটে উঠতে  না পেরেই  রাশিয়া মিত্রপক্ষে যোগ দেয়৷

২১শে ফেব্রুয়ারী ও সমাজ আন্দোলন

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২১শে ফেব্রুয়ারী বাঙলা ও বাঙালীর গর্ব, বাঙলা ও বাঙালীর গৌরব৷ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ওপার বাঙলার বিশেষ করে ছাত্র, যুবসমাজ সমস্ত প্রকারের সংকীর্ণতার ঊধের্ব উঠে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি ভালবাসার টানে যেভাবে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমুদ্রের মত উত্তাল হয়ে উঠেছিল ও সমস্ত গোঁড়া ধর্মমত ও সাম্প্রদায়িকতার সমস্ত প্রাচীরকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, ইতিহাসে তার তুলনা নেই৷ যুবজাগরণ সম্পর্কে কাজী নজরুল বলেছিলেন---

‘এই যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবে কি দিয়া বালির বাঁধ

কে রোধিবে এই জোয়ারের জল গগনে যখন উঠেছে চাঁদ৷’

যথার্থই সমস্ত ডগমার বাঁধ সেদিন বালির বাঁধের মতই প্রবল তরঙ্গাঘাতে নিশ্চিহ্ণ হয়ে গিয়েছিল৷

চিরন্তন প্রেরণার উৎস

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১২ই ফেব্রুয়ারী ‘নীলকণ্ঠ’ দিবস৷ আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন৷ আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ঘটনা৷ পটনার বাঁকিপুর সেন্ড্রাল জেলে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূত্তিজীক্ হত্যার উদ্দেশ্যে ওষুধের নামে প্রাণঘাতী মারাত্মক বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু মার্গগুরুদেব সেই বিষকে আত্মস্থ করে তাঁর প্রতিক্রিয়া নষ্ট করে দেন৷

মার্গগুরুদেব এই বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করেন৷ সরকার তাঁর দাবীতে কর্ণপাত করেনি৷ এরপর ১লা এপ্রিল (১৯৭৩) তিনি এই দাবীতে অমরণ অনশন শুরু করেন৷ এই ঐতিহাসিক অনশন চলেছিল পাঁচ বছর চার মাস দুই দিন৷

এপারে বাংলা আজও অনাদৃত

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী বাঙলার ইতিহাসে–এখন আর শুধু বাঙলার ইতিহাসে নয় পৃথিবীর ইতিহাসেই এক স্মরণীয় দিন৷

সাধারণতন্ত্র দিবসের সার্থকতা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়৷ এই সংবিধানে ভারতকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্ররূপে গড়ে তোলার

২৩শে জানুয়ারীর শপথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মহাকালের কালচক্রে দিন, মাস, বছর নিয়মিত আসে যায়৷ কিন্তু এরই মধ্যে বছরের এক একটা দিন এমনই স্মরণীয় হয়ে থাকে যে, আমরা এটিকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হই৷ এমনি একটা পবিত্র দিন ২৩শে জানুয়ারী–নেতাজী জয়ন্তী৷ এই দিন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পুন্য জন্মদিন, যিনি আজীবন দেশের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার জন্যে কঠোর তপস্যা করে গেছেন৷

বিশ্বের যাবতীয় জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করতে হবে, ও যুক্তিসঙ্গত বণ্টন করতে হবে৷

স্থূল জগতে, সূক্ষ্ম জগতে ও কারণ জগতে যা কিছু সম্পদ নিহিত আছে তার উৎকর্ষ সাধন করতে হবে জীব কল্যাণে৷ ক্ষিতি–অপ–তেজ–মরুৎ্–ব্যোম পঞ্চতত্ত্বের যেখানে যা কিছু লুকানো সম্পদ রয়েছে তা ষোল আনা সদ্ব্যবহারের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এর উৎকর্ষ সাধিত হবে৷ জল–স্থল–ন্তরীক্ষ তোলপাড় করে’ মানুষকে প্রয়োজনের উপাদান খুঁজে বের করে’ নিতে হবে–তৈরী করে’ নিতে হবে৷

মানুষের আহূত সম্পদ বিচার–সম্মতভাবে মানুষের মধ্যে বণ্টন করে’ দিতে হবে, অর্থাৎ সর্বনিম্ন প্রয়োজন সবাইকার তো মেটাতে হবেই, অধিকন্তু  গুণীর ও বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ মানুষেরও প্রয়োজনের কথা মনে রাখতে হবে৷১১