পূর্ব প্রকাশিতের পর
আধুনিক বিজ্ঞানের মতে দধিতে ৯০ ধরণের উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বা অনুজীবৎ আছে ঃ – বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে অনুবীক্ষণ যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখেছেন যে দধির মধ্যে ৯০ প্রকারের উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বা অনুজীবৎ রয়েছে, যারা মানব দেহের পক্ষে অত্যন্ত কল্যাণকর৷ এদের মধ্যে ল্যাক্টো ব্যাসিলাম ও ষ্টেপটোকক্কাসের গ্রুপের ৬ ধরণের ব্যাক্টেরিয়া বা অনুজীবতকেও তাঁরা চিহ্ণিত করেছেন৷ এইসব বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া বা অনুজীবতদের পরস্পরের মধ্যে cross-breeding করিয়ে দধির গুণাগুণ, স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধের মান কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় তারও গবেষণা বিজ্ঞানীরা আমাদের বাঙলাদেশ সহ অন্যান্য দেশেও করে চলেছেন৷ দধির প্রতি বিজ্ঞানীদেরও বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে৷ তার নানা কারণও রয়েছে৷
পৃথিবীর ডাক্তাররা ও বিজ্ঞানীরা তো বটেই ধর্মগুরুরাও দধিকে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে রোগ নিরাময়ে শরীরের অভ্যন্তরে রক্ত–রস–কোষ–আন্ত শূন্য স্থানগুলিতে ও কোষ–প্রাচীরে জমে থাকা বিষ বা toxin পদার্থগুলি গিলে খেতে দধির ৯০ ধরণের ব্যাক্টেরিয়াগুলির বিশেষ ক্ষমতা দেখে বিস্মিত হয়েছেন৷ পাকস্থলী–বৃহদান্ত্র ও রক্তের মধ্যে দেহগত বিষক্রিয়া জনিত যা যা কিছু পচা–গলা–বর্জ্য ক্ষতিকর জৈব–রাসায়নিক পদার্থগুলি প্রতিদিন প্রতিনিয়ত উচ্ছিষ্টরূপে কোটি কোটি কোষের প্রাচীরে ও দেহের উপযন্ত্রগুলিতে সঞ্চিত হচেছ সেগুলিকে দধির ব্যাক্টেরিয়াগুলি খেয়ে ফেলতে, ধ্বংস করতে ও এভাবে আক্রমণ করে দূষিত পদার্থগুলিকে দেহ থেকে নির্গত করতে বিশেষ ঝাড়ুদারের ভূমিকা দেহাভ্যন্তরে পালন করতে সদা সর্বদা সবম৷ খাদ্য বিজ্ঞানীরা সেই দধিকে মানব দেহের প্রকৃতি দত্ত ঝাড়ুদার (Natural Sweeper of Human Body) রূপে চিহ্ণিত করেছেন৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীরা প্রাণীকুলের মধ্যে শকুন (Valture) নামক পাখীটিকে যেমন weeper of nature বা প্রকৃতির ঝাড়ুদার রূপে প্রশংসিত করেছেন ঠিক তেমনি ডাক্তাররা ও খাদ্য বিজ্ঞানীরা মানব দেহের অভ্যন্তরীণ দেহ প্রকৃতির পরিবেশ (ecology of internal body) রক্ষার কাজেও দধির কোটি কোটি ব্যাক্টেরিয়াকে মানব দেহের প্রকৃতিদত্ত ঝাড়ুদাররূপে চিহ্ণিত করেছেন৷ আননন্দমার্গ দর্শনের ভাষায় দধির মধ্যে খুঁজে পাওয়া ৯০ ধরণের ব্যাক্টেরিয়াগুলি হ’ল এক এক ধরণের অনুজীবৎ বা Microvitum. Microvitum শব্দটির বহুবচন হ’ল Microvita৷ এ প্রসঙ্গে নীচে আরও আলোচনা করছি৷ (ক্রমশঃ)
- Log in to post comments