তালীবর্গের অন্যতম গাছ হচ্ছে খেজুর৷ সংস্কৃত ‘খর্জুর’ শব্দ থেকে ৰাংলায় তদ্ভব ‘খাজুর’ বা ‘খেজুর’ এসেছে৷ খেজুর গাছের সঙ্গে ভারত ও মধ্য এশিয়ার লোকেরা দীর্ঘকাল ধরেই পরিচিত৷ ভারতীয় বা ইন্ডিকা বর্গীয় খেজুরের মোটামুটি চারটি শাখা আছে–১) গাঙ্গেয় (গ্যাঞ্জেলাইটিস), ২) রাজস্থানী, ৩) গুজরাতী, ৪) দক্ষিণী (ডেকানাইটিস)৷ এদের মধ্যে স্বাদে–গুণে গুজরাতী খেজুর সর্বোৎকৃষ্ট৷ রাজস্থানী খেজুরও উন্নত মানের৷ দক্ষিণী খেজুর সাধারণ মানের৷ আর গাঙ্গেয় খেজুরের শাঁস বলতে কিছুই নেই৷ কিন্তু এই গ্যাঞ্জেলাইটিস্ প্রজাতির খেজুরের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাছগুলো একেবারে রসে টইটম্বুর৷ এই গাছগুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে রস ও তাড়ি (শুদ্ধ বৈয়াকরণিক বিচারে এই খেজুরের গেঁজানো রসকে ‘তাড়ি’ না ৰলে ‘খর্জুরী’ বলা সঙ্গত কারণ তাড়ি তো হবে তাল থেকে) উৎপন্ন হয়ে থাকে৷ খেজুর গাছের (রসের ক্ষেত্রে) একটা মহা সুবিধা হচ্ছে এর গা চেঁছে রস বের করতে হয়৷ তাই ৰন্ধ্যা (খেজুর) গাছ থেকেও রস পাওয়া যায়৷ কিন্তু (এর) কুফল এই যে মানুষ অতি লোভে গাছের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে যত পারে রস নিতে থাকে৷ তার ফলে গাছের অকাল মৃত্যু হয়৷ খেজুর গাছগুলোকে এই সর্বনাশা লোভের হাত থেকে বাঁচাবার জন্যে এ সম্পর্কে আইনগত ও সমাজগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার৷ খেজুর গুড়ের মিষ্টতা ইক্ষু গুড়ের চেয়ে কমই৷ কিন্তু স্বাদে–গন্ধে মনোরম৷ গুণের দিক দিয়ে তালগুড়ের চেয়ে কম হলেও এর আকর্ষণ অপ্রতিরোধ্য৷
রোগের ঔষধ হিসেবে খেজুর ঃ খেজুরের তাজা রস কৃমি ব্যাধির, লিবারের ব্যাধির, শোথ রোগের ও মূত্রস্তম্ভের ঔষধ৷
‘‘পুরোনো খেজুর গুড়ের শরবৎ ভোরে ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করলেও অর্শের প্রকোপ প্রশমিত হয়৷’’