গত ৭ই আগষ্ট শ্রীরামপুর ঃ- ‘‘একতাবদ্ধ মানবগোষ্ঠী সভ্যতাকে গড়ে তোলে, সম্মিলিত বাঁচবার প্রয়াসই তাকে বাঁচিয়ে রাখে৷’’ প্রাউট প্রবক্তার এই কথাগুলি তুলে ধরে প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন---আজ মানুষের সমাজ ও সভ্যতা চরম সঙ্কটে পড়েছে৷ জাতপাত ও সম্প্রদায়গত ভেদ-বিদ্বেষ, দলীয় সংঘর্ষ,চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য এই সঙ্কটের কারণ৷
শ্রী খাঁ বলেন জড় বিজ্ঞানের সৌজন্যে সমাজজীবনে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে৷ এই পরিবর্তন প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যেও প্রভাব ফেলছে৷ ফলে জলবায়ু ঋতু-বৈচিত্রের মধ্যেও পরিবর্তন ঘটছে৷ কিন্তু বর্তমান সমাজ ও রাষ্ট্রের নিয়ামকরা তথা শাসক ও শোষকশ্রেণী এ বিষয়ে কোন ভাবনা চিন্তা করছেন না৷ তাদের লক্ষ্য ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা ও মুনাফা লোটা৷ এই পরিস্থিতিতে সমাজ ও সভ্যতার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে এগিয়ে চলেছে৷ এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে প্রচলিত কোন অর্থনৈতিক রাজনৈতিক তত্ত্ব ও কোন বিশেষ ধর্মীয় মতবাদের পক্ষে মানব সমাজের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব নয়৷
শ্রী খাঁর মতে আজ প্রয়োজন আধ্যাত্মিক নীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত দৃড়চেতা একদল মানুষের যাঁরা এক বিশেষ আদর্শ নিয়ে সবাইকার সুখ-দুঃখের সমভাগী হয়ে একসাথে চলার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলবে৷ শ্রী খাঁ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন মানুষের সামনে সেই একমাত্র আদর্শ আনন্দমার্গ দর্শন ও তার প্রাউট তথা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব৷ মানুষের জীবনের পরমলক্ষ্য কোন পার্থিব বস্তু হতে পারে না৷ কারণ পার্থিব জগতে যা আজ আছে তা কাল থাকবে না৷ কারণ এই জগত সতত পরিবর্তনশীল৷ মানুষের জীবনের পরমলক্ষ্য হওয়া উচিত সেই পারমার্থিক সত্তা যা দেশাতীত, কালাতীত ও পাত্রাতীত৷ আবার সেই পারমার্থিক পথে চলতে গিয়ে এই জগতকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া চলবে না৷ সেই পারমার্থিক পথে চলতে হলে সমাজ থেকে সবার আগে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও সামাজিক ভেদ-বিদ্বেষ উঁচু-নীচু মনোভাব দূর করতে হবে৷ এসব করতে হবে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে৷ এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশনা আছে একমাত্র আনন্দমার্গ দর্শনে ও প্রাউটতত্ত্বে৷ যার মূল কথা বৈষয়িক সামঞ্জস্য রক্ষা করে পারমার্থিক পথে এগিয়ে চলা৷ তাই মানুষের সমাজ, সভ্যতা ও অস্তিত্ব রক্ষা করতে আনন্দমার্গ দর্শন ও প্রাউট ছাড়া অন্য কোন পথ নেই৷