দুর্নীতি-বৈষম্য-মন্দা দেশ চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে  প্রাউটের পথেই পরিত্রাণ

লেখক
প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সাল

দুর্নীতির জালে রাষ্ট্র জড়িত৷ অর্থনৈতিক মন্দা চরম আকার ধারণ করেছে৷ সরকার স্বীকার না করলেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নীতি আয়োগের আর্থিক সংস্থার শীর্ষকর্তারা আর গোপন করছে না৷ তাঁরা খোলাখুলিই স্বীকার করছেন অর্থনৈতিক অবস্থার বেসামাল দশা৷ স্তাকব অর্থনীতিবিদরা সরকারের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলালেও বেহাল দশা বুঝে অনেকেই পদ ছেলে চলে যাচ্ছেন৷ শিল্প সংস্থাগুলির নাভিঃশ্বাস উঠেছে৷ কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে বহু পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে৷

ভারতীয় অর্থনীতিতে এত বড় পতন স্বাধীনতার ৭২ বছরে আগে কখনও দেখা যায়নি৷ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং এই আর্থিক মন্দাকে বলেছেন---ম্যান মেড্ ব্লাণ্ডার্স৷ তিনি প্রধান দু’টি কারণও উল্লেখ করতে গিয়ে নোটবন্দী ও জিএসটি প্রসঙ্গ তুলেছেন৷ দুটোই যে সরকারের অপণিামদর্শিতার ফল তা এখন সরকার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে৷ একদিকে যখন অর্থনীতির এই দূরবস্থা, তখন আর্থিক দুর্নীতিও লাগামছাড়া৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কই স্বীকার করেছে ২০১৮-২০১৯ সালের আর্থিক দুর্নীতির পরিমাণ ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ যদিও দুর্নীতির সংখ্যা মাত্র ১৫ শতাংশ তবুও এর থেকেই অনুমান করা যায় দুর্নীতির জালে রাঘব বোয়ালরা জড়িত৷ সরকার চুনোপুটির পেছনে সিবিআই লাগালেও রাঘব বোয়ালরা ধরা-ছঁোয়ার বাইরে৷

অবস্থা সামল দিতে সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ৷ এই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার থেকে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে৷ কিন্তু এতে কি আর্থিক মন্দা সামাল দেওয়া সম্ভব৷ সম্ভব যে নয়, সেটাও সরকার বুঝেছে৷ একদিকে নোট বাতিল, জি.এস.টি-র ধাক্কায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সঙ্কটে পড়েছে৷ সরকার এখন তার ঘোষিত নীতি থেকে সরেআসছে৷ জি.এস.টি. নীতির সংশোধন, শিল্প সংস্থাগুলি থেকে কর আদায়ের কঠোরতা শিথিল ও মামলা প্রত্যাহার করে অবস্থার সামাল দিতে চেষ্টা করছে৷ কিন্তু এভাবে অবস্থার সামাল দেওয়া সম্ভব নয়৷

দেশের বর্তমান এই দূরবস্থার কারণই কেন্দ্রীত অর্থনীতির কুফল৷ আবার সেই কেন্দ্রীত অর্থনীতিকেই চাঙ্গা করতে চাইছে সরকার৷ এ তো যে শস্যের মধ্যে ভুত ঢুকে বসে আছে, সেই সর্ষে দিয়েই ভুত তাড়াবার চেষ্টা৷ এভাবে সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ বরং দেশ আরও অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাবে৷

দেশের বর্তমান সঙ্কট কাটাবার একমাত্র পথ প্রাউটের বিকেন্দ্রীত অর্থনীতির বাস্তবায়ন৷ যা পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কখনোই সম্ভব নয় বলে জানান প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের সেক্রেটারী জেনারেল আচার্য রবীশানন্দ অবধূত৷ পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বর্তমান আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা কিছুতেই সম্ভব নয়৷ কেউ যদি সেরকম প্রতিশ্রুতি দেয় তা নিছক ভাঁওতাবাজী ছাড়া কিছু নয়৷ তিনি আরও বলেন প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হলে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সঙ্গে স্থানীয় মানুষকে যুক্ত করতে হবে৷ এতে গোটা দেশকে কতকগুলি অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করে প্রতিটি অঞ্চলের সম্পদের নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় মানুষের হাতে তুলে দিতে হবে৷ তবে এই কাজ বাস্তবে রূপ দিতে হলে চাই আদর্শ আচরণ সম্পন্ন নৈতিকতায় দৃঢ় কর্তব্যপরায়ণ একদল মানুষ চাই যাঁরা নিঃস্বার্থ সেবায় আত্মনিয়োগ করবে৷