সংবাদ দর্পণ

অর্থনৈতিক মন্দার কবলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ আমেরিকা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

তাদের মুদ্রাই বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি৷ বিশ্বের নানা প্রান্তে কোথাও কোনও দেশ বিপদে পড়লে আমেরিকা অর্থসাহায্য করে থাকে৷ বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি রয়েছে আমেরিকায়৷ তাদের মুদ্রাই বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি৷ বিশ্বের নানা প্রান্তে কোথাও কোনও দেশ বিপদে পড়লে আমেরিকা অর্থসাহায্য করে থাকে৷ কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতির এই ‘বটগাছ’ ও নাকি বিপন্ন৷ আমেরিকার আকাশে দেখা দিয়েছে মন্দার কালো মেঘ৷ দেশের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সমস্যা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের চিন্তায় ফেলেছে৷ বিশেষজ্ঞদের দাবি, একের পর এক অর্থনীতি সংক্রান্ত জট মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে আমেরিকায়৷ সরকার অর্থনীতি সামলাতে কিছুটা হলেও হোঁচট খাচ্ছে৷ এতে খুব শীঘ্র বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও ভবিষ্যতের জন্য সিঁদুরে মেঘ ঘনাচ্ছে৷ ১৯২৯ সালে মন্দা আঘাত হেনেছিল আমেরিকার অর্থনীতিতে৷ টানা ১০ বছর পর্যন্ত সেই মন্দা চলেছিল৷ শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের অনেক দেশকেই প্রভাবিত করেছিল সেই মন্দা৷ অত বড় মাপের না হলেও শীঘ্রই মন্দা আমেরিকার বাজার গ্রাস করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা৷ ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, শেয়ার বাজারের মন্দা, ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ইউরোপ ও চিনের অর্থনীতির মন্থর বৃদ্ধি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পিটার৷ অর্থনৈতিক মন্দা কী? অর্থবর্ষের পর পর দু’টি ত্রৈমাসিকে জিডিপি পতন হলে বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদেরা মন্দার আশঙ্কা করেন৷ ‘ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ’ মন্দাকে কোনও দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উল্লেখযোগ্য পতন হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন৷ আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজার্ভের নীতিনির্ধারণী সংস্থা ‘ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি’ জুন মাসে অনুমান করেছে, ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে সে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হতে পারে মাত্র এক শতাংশ৷ ফেড রিজার্ভ ২০২৩ সালে চার বার সুদের হার বাড়িয়েছে ৷ যা আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারকে টেনে নামিয়েছে৷ পাশাপাশি অনুমান, আমেরিকার অনেক সংস্থার অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও এ বছর কম হতে পারে৷ ফোর্বসের মতে, ২০২২ সাল থেকে অন্তত একটি ইঙ্গিত আমেরিকার আসন্ন আর্থিক মন্দাকে নির্দেশ করছে৷ দাবির সমর্থনে ট্রেজারি নোটের বৃদ্ধির বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেছে তারা৷ বিভিন্ন সমীক্ষার মতে, আমেরিকার কর্মসংস্থানের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়৷ আমেরিকার বেকারত্বের হার ঐতিহাসিক ভাবে কম, মাত্র ৩.৮ শতাংশ৷ আমেরিকায় সরকারের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্মঘটও৷ গত বছরেই দেশের গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলির কর্মীরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন৷ ক্রমে ধর্মঘটের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ ফলে আমেরিকার অর্থনীতির একটা বড় ভরসার জায়গা নড়বড়ে হয়ে উঠেছে বলে খবর৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু গাড়ি নয়, সামগ্রিক ভাবে আমেরিকার নির্মাণশিল্পের গতিই সম্প্রতি শ্লথ হয়েছে৷ নতুন করে ডালপালা মেলতে পারছে না৷ উৎপাদন কমে এসেছে৷কোভিড অতিমারির ধাক্কাও আমেরিকা ঠিক মতো এখনও সামলে উঠতে পারেনি বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷

গত বছরের শেষে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, আমেরিকার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সুদের হার ক্রমশ বাড়ছে৷ অর্থনীতিবিদেরা সেই বিষয়টিকেও খুব ভাল চোখে দেখছেন না৷ এতে ভবিষ্যতে সে দেশের অর্থনীতির উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা৷ অর্থনীতিবিদেরা এই কারণগুলিকে তুচ্ছ করে দেখার পক্ষপাতী নন৷ আগামী দিনে এই ছোট সমস্যাগুলিই মন্দা ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা৷ আমেরিকা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ায় সেখানে মন্দা দেখা দিলে তার প্রভাব পড়তে পারে ভারত-সহ অন্য দেশের উপরেও৷ সর্বত্র মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির মতো সমস্যা প্রকট হবে৷ সার্বিক ভাবে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে এগিয়ে যাবে৷ তাই আমেরিকার অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির দিকে বিশেষ নজর রাখছেন বিশেষজ্ঞেরা৷

আনন্দমার্গের একনিষ্ঠ সাধক ও কর্মী সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক পরলোকে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৩রা জুলাই ২০২৪,বেলা ১২:৫০ নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন হাওড়া জেলার আমতা উদং নিবাসী বিশিষ্ট আনন্দমার্গী তথা সমাজসেবী ও ‘নোতুন পৃথিবী’ পত্রিকার ধারাবাহিক লেখক শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক৷ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রদত্ত মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের উপর শ্রী ভৌমিক নোতুন পৃথিবী পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন৷ এছাড়াও গণিত তত্ত্ব ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ের উপর সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের লেখা প্রবন্ধ নোতুন পৃথিবী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর৷ দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যান্সার মারন রোগের সঙ্গে লড়াই করছিলেন৷ উল্লেখ্য ক্যান্সার রোগের সম্মুখীন হয়েও তিনি নোতুন পৃথিবী পত্রিকার জন্য শেষদিন পর্যন্ত লেখালিখি বন্ধ করেননি৷ বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, মৃত্যুর দিন কয়েক পূর্বেও তিনি মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের উপর নতুন লেখা বইটি প্রকাশের ইচ্ছে অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে গেছেন৷ কিন্তু তীব্র শারীরিক অসুস্থতার দরুন তা করতে তিনি সক্ষম হননি৷ ‘নোতুন পৃথিবী’তে ধারাবাহিকভাবে লেখালিখি ছাড়াও আনন্দমার্গের শিক্ষা বিভাগ ‘গুরুকুলে’র জন্যে বিভিন্ন শ্রেণীর অংকের বই রচনা, শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রদত্ত মাইক্রোবাইটাম তত্ত্ব আধারিত এক জটিল বৈজ্ঞানিক বিষয়কে সহজ সরলাকারে পুস্তক রচনা করেন৷ এমন এক গুণী ব্যষ্টিকে হারিয়ে আমরা সবাই শোকস্তব্ধ৷ ‘নোতুন পৃথিবী’ পত্রিকার পক্ষ থেকে পরম পুরুষের নিকট তার বিদেহী আত্মার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করি৷

গত ১১ই জুলাই, বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলার, আমতার উদং গ্রামে পরলোকগত শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের নিজস্ব বাসভবনে তাঁর শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়৷ আনন্দমার্গের চর্যাচর্য নির্দেশিত এই শ্রদ্ধানুষ্ঠানে আনন্দমার্গের সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীবৃন্দ ও গৃহী আনন্দমার্গীদের উপস্থিতিতে প্রভাত সঙ্গীত ‘বাবা নাম কেবলম’ কীর্ত্তন , সাধনা ও স্বাধ্যায় পাঠ করা হয়৷ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দায়িত্বের ছিলেন আনন্দমার্গের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য অভিব্রতানন্দ অবধূত, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আনন্দমার্গের হাওড়ার ভক্তি প্রধান সুব্রত সাহা, বিশিষ্ট আনন্দমার্গী তথা প্রাক্তন ভুক্তিপ্রধান বকুল চন্দ্র রায়, অমর চট্টোপাধ্যায়,ভারতী কুন্ডু প্রমুখ৷ পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- অনুপমা ভৌমিক, সৈকত ভৌমিক, শৈবাল ভৌমিক, তপন কুমার ভৌমিক, রবীন ভৌমিক, সুপ্রিয়া ভৌমিক, শুভ্রা ভৌমিক, রুনুভা ভৌমিক, রিঙ্কু ভৌমিক, উজ্জ্বল ভৌমিক সহ পরিবারবর্গ৷ স্মৃতিচারণা থেকে আমরা জানতে পারি, ৭০এর দশকে তিনি ‘আনন্দমার্গে’র আদর্শের ভাবধারায় প্রভাবিত হয়ে দীক্ষা গ্রহণ করে একনিষ্ঠ ভক্ত ও সংগঠনের কাজে নিজেকে সঁপে দেন৷ প্রথম জীবনে তিনি আমতা আনন্দমার্গ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন৷ পরবর্তীকালে আমতা মহিষামুড়ি রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের গণিতের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন৷ তাঁর শিক্ষক জীবনে বহু ছাত্র-ছাত্রা তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদর্শের প্রতি অনুরক্ত হয়ে আনন্দমার্গের সংস্পর্শে আসে, তাদের মধ্যে অনেকে বর্তমানে আনন্দমার্গের সর্বক্ষণের কর্মী অর্থাৎ সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনী হয়ে দেশে-বিদেশে আদর্শের প্রচারে নিয়োজিত৷ জীবনের শেষক্ষণ পর্যন্ত তিনি পরমপিতা বাবা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আদর্শ প্রচার করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন৷ সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের অকাল প্রয়াণে আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘের অপূরণীয় ক্ষতি হল৷

ত্রিপুরায় আক্রান্ত বাঙালীরা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

ত্রিপুরার ধলাই জেলার গণ্ডাছড়ার অগ্ণিগর্ভ সন্ত্রাস, বাঙালীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও অগ্ণিসংযোগের প্রতিবাদে সরব ‘আমরা বাঙালী’৷ গত ৭ই জুলাই এক আনন্দমেলা কে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত৷ সেখানে দুই গোষ্ঠীর দুই যুবকের মধ্যে মারামারি বেধে যায়৷ ঘটনায় আহত যুবককে সঙ্গে সঙ্গেই আগরতলার জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ কিন্তু শুক্রবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর৷ এই খবর এলাকায় পৌঁছাতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে৷ সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট,বাজার৷ উশৃঙ্খল কিছু মানুষ বাঙালীদের ঘরবাড়ী ও ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়৷ বহু বাঙালী পরিবার ঘরবাড়ী ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়৷

‘আমরা বাঙালী’ দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস জানান, নিজেদের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকুও চোখের সামনে পুড়তে দেখতে হয়ে গণ্ডাছড়ার বাঙালীদের৷ জনজাতিরদের একটি অংশ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সৃষ্টি করে ক্রমশ বাঙালীদের জীবন সম্পত্তির ওপর আক্রমণ করে বাঙালীদের উৎখাত করতে চাইছে৷ ত্রিপুরার বিজেপি সরকার বাঙালী অত্যাচারের ব্যাপারে নির্বিকার, তাদের এই নীরব দর্শকের ভূমিকা বাঙালীদের ওপর চলা সন্ত্রাসবাদকেই সমর্থন জানায় বলেই আমরা মনে করছি৷ বহিরাগত রিয়াং শরণার্থীরা বাঙালীদের বাড়িঘরে, গবাদিপশু সহ দোকানপাটে, হামলা চালায়৷ আর তাদেরকেই জামাই আদর করে সব রকমের সুযোগ সুবিধা দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হয়! অথচ ৮০ সালের দাঙ্গায় খুন হওয়া হাজার হাজার বাঙালীদের পরিবার পরিজন সহ ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালীদের ভাগ্যে কিছুই জোটে না৷কার‌্যত এই দৃশ্যই সন্ত্রাসবাদীদের মনে এই ভাবনা বদ্ধমূল করে যে বাঙালীদের খুন, ধর্ষণ, অত্যাচার করলে তাদের হয়ে বলবার কেউ নেই, এমনকি সরকারও নয়৷ আমরা লক্ষ্য করেছি গত ৭ই জুলাই গণ্ডাছড়ায় আনন্দ মেলায় জুয়ার আসরে অংশ নেওয়া মদমত্ত কিছু যুবকের তর্কাতর্কি ও ধাক্কাধাক্কিতে পরমেশ্বর রিয়াং নামে এক উপজাতি যুবক অসাবধানবশত অরক্ষিত একটি বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে গুরুতর ভাবে জখম হয়৷ পরে ১৩ই জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আগরতলা জিবি হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে৷ এই অছিলায় শুরু হয় বাঙালী নিধন যজ্ঞ৷ বাঙালী ঘরবাড়ি, জিনিস পত্র, গাড়ী ভাঙচুর সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিস পত্র লুটপাট করে, ভাঙচুর চালায় ও বাঙালী ঘরবাড়িতে অগ্ণিসংযোগ করে৷ প্রাণের ভয়ে অনেকে বাড়ি ঘর ফেলে বাস্তুহারা হতে বাধ্য হয়৷ এই অসহায় পরিবার গুলোর যে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদেরকে সরকারী তরফে পূর্ণ সহযোগিতা করার দাবী রাখেন ‘আমরা বাঙালী’ র নেতা তপোময় বিশ্বাস৷ এছাড়াও তিনি বলেন, গণ্ডাছড়ার সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনায় যুক্ত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷ অবিলম্বে গণ্ডাছড়া মহাকুমা সহ এডিসির প্রত্যন্ত অঞ্চলে টিএসআর ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে৷ সমস্ত ধরনের জনজাতি অংশের লোকেদের তোষণ নীতি ও বাঙালী বিদ্বেষী অপপ্রচার বন্ধ করে সকলের জন্য সমান অধিকার প্রদান করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে৷‘আমরা বাঙালী’ কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব উজ্জ্বল ঘোষ এক প্রেস বিবৃতে এই খবর পাঠান৷

আগরতলায় আনন্দমার্গের সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১২,১৩,১৪ই জুলাই আগরতলা শহরে কলেজটিলা আনন্দমার্গ স্কুলে তিনদিনের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ তিনদিনের এই সভায় আলোচ্য বিষয় ছিল আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের উপর৷ বিষয়গুলি ছিল--- প্রমা, আন্তরিক শক্তির উৎস, বৃহতের আকর্ষণ ও সাধনা, অর্থনৈতিক গণতন্ত্র৷ ত্রিপুরা রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে পাঁচ শতাধিকের বেশী আনন্দমার্গী আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন৷

আলোচনা সভায় প্রশিক্ষক ছিলেন আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সচিব আচার্য সুধাক্ষরানন্দ অবধূত ও শিক্ষা সচিব আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত৷ আচার্য তথাগতানন্দ আলোচনা করেন প্রমা ও আন্তরিক শক্তির উৎস৷

আচার্য সুধাক্ষরানন্দ আলোচনা করেন অর্থনৈতিক গণতন্ত্র ও বৃহতের আকর্ষণ ও সাধনা৷ উপস্থিত মার্গী ভাই বোনেরা গভীর মনোযোগ দিয়ে প্রশিক্ষকদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শোণেন৷

তিনদিনের এই সভার প্রথম দিন সকালে তিন ঘন্টা অখণ্ড ৰাৰা নাম কেবলম্‌ কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর সেমিনারের সূচনায় সেমিনারের গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তার কারণ ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরার ভুক্তিপ্রধান রতন সাহা, আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত, আচার্য সুধাক্ষরা অবধূত৷ তাত্ত্বিক আলোচনা ছাড়াও প্রত্যহ সমবেত কীর্ত্তন, সাধনা, প্রভাত ফেরী অনুষ্ঠিত হয়৷ দ্বিতীয় দিন অপরাহ্ণে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে কামান চৌমাহানিতে সমবেত হয়৷ সেখানে বক্তব্য রাখেন আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত৷ তিনি বর্তমান সামাজিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ বিশ্লেষণ করেন ও আনন্দমার্গ দর্শনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে কিভাবে সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব তার উল্লেখ করেন৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ডায়োসিস আচার্য কৃতাত্মানন্দ অবধূত, আচার্য বীতমোহানন্দ অবধূত আচার্য গুরুধ্যানানন্দ অবধূত ভুক্তিপ্রধান রতন সাহা ও স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাইবোনেরা৷

আশ্বাস কমিটির প্রশ্ণে নীরব সরকার - দেশে ‘দরিদ্র’ কারা?

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

দেশে গরিব মানুষ কারা তা জানতে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী টাস্ক ফোর্স তৈরী করেছিলেন৷ সেই টাস্ক ফোর্স যথা সময়ে কয়েকটি সুপারিশসহ তাদের প্রতিবেদন জমা দেন৷ সেই প্রতিবেদনে এখন ধুলোর পাহাড়৷ সংসদে একাধিকবার বিরোধীরা প্রশ্ণ তুলেছেন দেশে গরিব কারা? গরিবি ঠিক করার সংজ্ঞা কি হবে? কিন্তু কোনবারই সরকারের কাছ থেকে কোন জবাব আসেনি৷ প্রতিবারই সরকার জবাব এড়িয়ে গেছে৷ সংসদের আশ্বাস বিষয়ক স্থায়ী কমিটিও ১৫-১৬ বার এই প্রশ্ণ তুলেছে৷ কিন্তু প্রতিবারই সরকার উত্তর এড়িয়ে গেছে৷ সরকারের পক্ষ থেকে জানান হয় সাধারণ মানুষের মাসিক খরচ হিসেব করে দারিদ্র চিহ্ণিত করার কাজ চলছে৷

এদিকে দরিদ্রসীমা তৈরী না হওয়ায় বহু গরিব মানুষ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷ গত লোকসভা নির্বাচনের সময় নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় গত দশ বছরে দেশে বহু মানুষকে গরিবি থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ কিসের ভিত্তিতে নীতি আয়োগ এই কথা বলছে এই প্রশ্ণ ওঠায় নীতি আয়োগের দাবী গত দশ বছরে দেশে মাথা পিছু আয় বেড়েছে ৩৪.৪ শতাংশ৷ এটাই গরিবি কমার প্রমাণ৷ যদিও মাথাপিছু আয় একটি গড় হিসাব এর মধ্যেও ধোঁকা আছে৷ তাছাড়া গত দশ বছরে মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেনি নীতি আয়োগ, গত করোনার সময় লক্‌ডাউনে গরিব মানুষের আয় কমেছে ধনকুবেরদের আয় বেড়েছে৷ তাছাড়া গরিবির সীমা নির্ধারণ করতে হলে প্রথমে আদমশুমারির কাজ শেষ করতে হবে৷ ২০১১ সালের আদমশুমারি মেনে কেন্দ্র প্রকল্প চালাচ্ছে৷ কিন্তু লোকগণনা না হওয়ায় বহু গরিব মানুষ সরকারী প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছে না৷

টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী প্রথমে দরিদ্রসীমা ও দরিদ্রের সংখ্যা স্থির করতে হবে৷ তবেই গরিব নির্দ্ধারণের নীতি তৈরী সম্ভব৷ টাস্কফোর্সের সুপারিশে এও বলা হয়েছে সরকার ইউ.পি.এ আমলের নীতি মেনে কাজ করতে না চাইলে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরী করে দরিদ্রসীমা নির্ণয় করুক৷

 মালপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হল গল্প বলা প্রতিযোগিতা ও উৎসব

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সবং পূর্ব চক্রের অন্তর্গত মালপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৭ শে জুন, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ৫ম বর্ষ গল্প বলা প্রতিযোগিতা ও উৎসব৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে সম্পন্ন করা হয়৷ প্রথমেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি জাম গাছের চারা ও একটি কাঁঠাল গাছের চারা রোপণ করা হয় সকলের উপস্থিতিতে৷ সংক্ষেপে গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী তপন গাঙ্গুলী মহাশয়৷ আজকে রোপন করা দুটি চারা দত্তক নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রী দুলাল চন্দ্র পাল ও অভিভাবক শ্রী গোবিন্দ প্রসাদ পাল৷ তাঁরা অঙ্গীকার করেন গাছগুলি কে সন্তান স্নেহে বড়ো করে তুলবেন৷

এরপরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ২৮ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে গল্প বলা প্রতিযোগিতা শুরু হয়৷ এবছরের গল্প শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার এর ’ অনুনাসিকতা’৷ প্রতিযোগিতা শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদ্যাসাগরের মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করেন উপস্থিত সকলেই৷ ছোট্ট একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয় সেরা পাঁচ সহ সকল প্রতিযোগীর হাতে৷ বিদ্যালয়ের ছাত্রা কুহেলী মান্না, সঙ্গীতা পাল, ঋতিকা সাউ ও সুকৃতি জানা রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করে৷ প্রতিযোগিতার অন্যতম বিচারক দীপান্বিতা ব্যানার্জী ছাত্র ছাত্রাদের উদ্দেশ্যে কবিতা আবৃত্তি করেন৷ রাওয়া সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা শ্রী রঞ্জিত কুমার ঘোষ খুব সুন্দর ভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও গল্প বলা প্রতিযোগিতা বিষয়ে বুঝিয়ে বলেন৷ এছাড়াও তিনি একটি নীতি শিক্ষামূলক গল্প বলে শোনান৷ বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি শ্রী গৌতম রায় রাওয়া সংস্থার এই প্রচেষ্টার ভূয়ষী প্রশংসা করেন৷ তিনি মনে করেন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এই কর্মসূচি৷ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রী সুব্রত মাইতির উদ্যোগে ও অন্য সকল শিক্ষক শিক্ষিকার আন্তরিক প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠানটি সর্বাঙ্গ সুন্দর হয়ে ওঠে৷ অনুষ্ঠান টি সঞ্চালনা করেন শিক্ষক ও কবি শ্রী সুব্রত মাইতি মহাশয়৷

ছত্তিসগড়ের মিড ডে মিল নিয়ে উঠছে প্রশ্ণ? দেওয়া হচ্ছে সাদা ভাত ও হলুদগুঁড়ো

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

পাতে নেই কোনও ডাল বা সব্জি৷ এমনকি পুষ্টিকর কোনও খাবারও৷ তার পরিবর্তে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে পাতে পড়ছে সাদা ভাত আর তার উপর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হলুদের গুঁড়ো৷ ছত্তীসগঢ়ের একটি স্কুলে পড়ুয়াদের এই ধরনের মিড ডে মিল ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে৷

বলরামপুরের বিজাকুরা গ্রামের বিজাকুরা প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা৷ স্কুলের ৪৪ জন পড়ুয়ার জন্য যে মিড ডে মিল বরাদ্দ হয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তাদের৷ শুধু তা-ই নয়, স্কুল কর্তৃপক্ষও আবার দাবি করেছে, এক সপ্তাহ ধরে স্কুলে কোনও সব্জিই খেতে দিতে পারছেন না মিড ডে মিলে৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক এই ঘটনার জন্য মিড ডে মিল সরবরাহকারীদেরই দায়ী করেছেন৷ অন্য দিকে, আবার মিড ডে মিল সরবরাহকারীরা পাল্টা দাবি করেছেন, তাঁদের পাওনা মেটানো হচ্ছে না৷ পরস্পরের দিকে দায় ঠেলাঠেলির মাঝে পড়ে শিশুরা কেন তাদের প্রাপ্য মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ণ উঠতে শুরু করেছে৷ এমনকী এই ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যেও পারস্পরিক দোষারোপের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ স্কুলের মিড ডে মিলের রাঁধুনি সুখিয়া দেবী দাবি করেছেন, ঠিক মতো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না৷ কখনও শুধু ডাল আসছে, কখনও শুধু চাল৷ সব্জি তো আসছেই না৷ জেলা শিক্ষা আধিকারিক দেবেন্দ্র নাথ মিশ্র এই ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন৷ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

এই ঘটনাই উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলের মিড ডে মিলের প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছে৷ ২০১৯ সালের ঘটনা৷ উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের এক সরকারি স্কুলে বেশ কিছু দিন ধরেই পড়ুয়াদের পাতে শুকনো রুটি আর সব্জির বদলে শুধু নুন দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে৷ গোপন সূত্রে খবরটা পেয়েছিলেন স্থানীয় এক সাংবাদিক৷ তিনি ঘটনাটির ভিডিয়ো ও ছবি তোলেন৷ তার পরই সেটা ভাইরাল হয়ে যায়৷ মিড ডে মিল নিয়ে যখন কেন্দ্র নানা রকম পদক্ষেপ করছিল, ঠিক সেই সময়েই রাজ্যের একটি স্কুলের এমন ছবি সামনে আসায় বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যোগী আদিত্যনাথের সরকার৷ স্কুলে মিড ডে মিলের ছবি তোলার অভিযোগে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে উত্তরপ্রদেশ সরকার৷ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে এফআইআর করা হয় তাতে বলা হয়েছিল, যে দিন ভিডিয়োটি তোলা হয় সে দিন স্কুলেই রুটি বানানো হয়েছিল৷ সব্জির ব্যবস্থা করার কথা ছিল গ্রামপ্রধানের৷ কিন্তু তিনি তা না করে স্থানীয় এক সাংবাদিককে ডেকে এনে ভিডিয়ো শুট করান৷ পঞ্চায়েত প্রধান এবং ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে স্থানীয় প্রশাসন৷

ওড়িশার ব্যাঘ্রকুলের কৃষ্ণবর্ণ প্রাপ্তিতে কপালে মেঘ জমেছে বাঘ বিশেজ্ঞদের

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

দুধে-আলতায় সে যে ধবল ছিল, এমন নয়৷ তবে তার কৃষ্ণ-পিঙ্গল আঁকাবাঁকা ডোরা, সেই আদিম রঙের উপরে কে যেন ঘন কালির প্রলেপ এঁকে দিয়েছে৷ ওড়িশার সিমলিপালে ব্যাঘ্রকুলের ক্রমশ এই কৃষ্ণবর্ণ প্রাপ্তিতে কপালে মেঘ জমেছে বাঘ বিশেজ্ঞদের৷

১০ থেকে তারা এখন ১৩৷ বন কর্তাদের হিসাব বলছে, দু’বছরে সংখ্যা বৃদ্ধি তিন৷ বাড়বৃদ্ধিতে সচরাচর স্বস্তি মেলে৷ এ ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো, সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের শাল-পিয়ালের গহীন জঙ্গলে, গোটা ৩৬ বাঘের প্রায় ৩৭ শতাংশই কৃষ্ণবর্ণ হয়ে ওঠায় বাঘের আদি রূপের অস্তিত্ব থাকবে তো, প্রশ্ণটা তাড়া করছে দেশের বন কর্তাদের৷ বাঘ সংরক্ষণে দেশের সর্র্বেচ্চ সংস্থা এনটিসিএ’র (ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি) সদস্য সচিব গোবিন্দ ভরদ্বাজ কবুলও করে ফেললেন সে কথা ‘‘মেলানিজম (কৃষ্ণবর্ণত্ব)-এর ফলে বাঘের আদি চেহারাটাই মুছে না যায়!’’ সে অনিশ্চয়তার হদিশ করতে তাবড় বিশেষজ্ঞরা এখন তড়িঘড়ি সরেজমিন তদন্তে ছুটেছেন সিমলিপালে৷

পশ্চিম ভারতের রুখু জঙ্গল কিংবা উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি অরণ্যে অহরহ ব্ল্যাক প্যান্থার বা কালো চিতাবাঘের দেখা মেলে৷ তার কারণও মেলানিজম৷ তা বলে, হলুদ-কালো ডোরা কাটা জাতীয় পশুর কৃষ্ণবর্ণ প্রাপ্তি! বাঘ বিশেষজ্ঞ তথা ডব্লুপিএসআই-এর (ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন সোসাইটি) ডিরেক্টর বেলিন্ডা রাইটস বলেছেন, ‘‘আপাত ভাবে ব্যাপারটা সুন্দর হলেও প্রাণিজগতের ভারসাম্যের প্রশ্ণে কিন্তু এই রূপান্তর খুব কাম্য নয়৷’’ তা হলে মেলানিজম রোখার উপায়?

প্রাণিবিজ্ঞানী টিএস মাথুর বলছেন, ‘‘এ এক জিনগত সমস্যা৷ এর ফলে প্রাণীদের চামড়া কিংবা রোমে কালো রঙের প্রাচুর‌্য বেড়ে গায়ের আদি রঙটাকেই আড়াল করে দেয়৷ বাঘের হলুদ ডোরা এ ভাবেই কালোর আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে৷ ব্ল্যাক প্যান্থারের ক্ষেত্রেও কারণটা একই৷ তাদের হলুদ বর্ণের উপরে চাকা চাকা দাগ কালোর আস্তরণে ঢেকে যায়৷’’ সেই সঙ্গে তিনি ধরিয়ে দেন, এর বিপরীত ক্ষেত্রে চামড়ার রং অত্যধিক সাদা হয়ে যাওয়া অ্যালবিনো বা সাদা বাঘের উৎপত্তির কারণ৷

কয়েক বছর ধরে কালো বাঘের সুলুক সন্ধান করছেন প্রাণিবিশেষজ্ঞ উমা রামকৃষ্ণান৷ তাঁর অনুমান, ইনব্রিডিং বা নিকট আত্মীয়তার মধ্যে প্রজননের ফলেই সিমলিপালে কালো বাঘের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে৷ কিন্তু সেই ব্যক্তিগত মেলামেশায় বাধ সাধে কার সাধ্য! সিমলিপালের বনকর্তারা জানান, সমগ্র জঙ্গল জুড়ে নয়, ওই ব্যাঘ্র প্রকল্পের নওরঙ্গা রেঞ্জের বড়মকাবাড়ি এলাকাটাই কালো বাঘের ডেরা৷ ওই নির্দিষ্ট এলাকায় যে ক’টি বাঘ থাকে, মিলন হচ্ছে তদের মধ্যেই৷ বাঘ বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘বাঘের ইনব্রিডিং বন্ধ করা সহজ নয়৷ এমনকি ঠিক কোন বাঘের জিনে মেলানিন রয়েছে তা আগাম অনুমান করাও সম্ভব নয়৷ আবার এ কথাও ঠিক, বাঘিনীর জিনে মেলানিন রয়েছে মানেই পরবর্তী প্রজন্মের সব শাবকের গায়ের রং কালো হবে, এমন নিশ্চয়তা নেই৷’’ ধাঁধাটা এখানেই৷ ওড়িশা সরকারের পর্যটন দফতরের অবশ্য এ সব জটিল ধাঁধা নিয়ে মাথাব্যথা নেই৷ বরং পর্যটক টানতে গত কয়েক বছর ধরে সিমলিপালের কালো বাঘের ঢালাও প্রচারে নেমেছে তারা৷ শুরু হয়েছে ‘কালো বাঘ সাফারি’৷ যা শুনে বাঘ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডুর প্রশ্ণ, ‘‘কালো বাঘ কতটা বাস্তব আর কতটা প্রচার সেটাও খতিয়ে দেখার বিষয়! আর মেলানিন ঘটিত কারণে যদি বাঘের গাত্রবর্ণ কালো হয়ে থাকে তবে সে ঘটনা দেশের অন্যত্রও ঘটতে পারে৷ সজাগ থাকা উচিত সে ব্যাপারেও৷’’ বিভিন্ন ট্র্যাপ ক্যামেরা অবশ্য নিছক প্রচারের কথা বলছে না৷ বরং অন্ধকার রাতে সেই আঁধার কালো রঙ নিয়ে সে বার বার ধরা দিয়েছে ক্যামেরায়৷ সিমলিপালের এক বনকর্মী বলছেন, ‘‘শুধু রাতে নয়, বনের গভীরে ক্যামেরা বসাতে গিয়ে দুপুরেও দেখেছি তাকে, সে বড় ভয়ঙ্কর রূপ৷’’ বন-মুগ্দ কিপলিং সাহেব বলেছিলেন ‘তার রূপের ছটায় জঙ্গল বুঝি আরও রূপবতী হয়ে ওঠে!’ সেই পিঙ্গল রূপ কালো-ছায়ায় চিরতরে হারিয়ে যাবে না তো!

রবীন্দ্র ভারতীতে মার্গ দর্শনের উপর আলোচনা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

২ জুলাই ২০২৪ তারিখে কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ বৈদিক স্টাডিজ দ্বারা ব্রহ্ম ও সৃষ্টির ধারণা শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর অবদানের উপর একটি ি বশেষ বত্তৃণতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ প্রধান বক্তা ছিলেন আচার্য দিব্যচেতনানন্দ অবধূত, কেন্দ্রীয় জনসংযোগ সম্পাদক, আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বৈদিক স্টাডিজের পরিচালক প্রফেসর ড. ভাস্কর নাথ ভট্টাচার্য৷ আচার্য দিব্যচেতনানন্দ অবধূত ব্রহ্মর ধারণা ব্যাখ্যা করেছেন৷ তিনি বলেছিলেন যে ব্রহ্ম হল মহাজাগতিক চেতনা (শিব) এবং সক্রিয় নীতি (শক্তি) এর সম্মিলিত দেহ৷ তিনি আরও বলেন, শিব ও শক্তির সম্পর্ক কাগজের টুকরার মতো৷ এক টুকরো কাগজের দুটি দিক থাকে৷ যদিও তর্কের খাতিরে তারা দুটি, তবে একটি কাগজের ইউনিট থেকে তাদের আলাদা করা যায় না৷ কাগজের একটি দিক মুছে ফেলা অন্যটির অস্তিত্ব বিপন্ন করে৷ কীভাবে, মহাজাগতিক এককের মধ্যে পুরুষ (চেতনা) এবং প্রকৃতির (নির্বাহী নীতি) মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে৷ এগুলোর কোনোটিই অপরটিকে ছাড়া বাঁচতে পারে না৷ এই কারণেই বলা হয় যে তারা নীতিগতভাবে দ্বৈত, কিন্তু আত্মায় এক৷ আচার্য আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে ইউনিট কাঠামোর মধ্যে তিনটি বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া কাজ করে - শারীরিক সংঘাত থেকে উদ্ভূত শারীরিক শক্তি, মানসিক সংঘাত থেকে উদ্ভূত মানসিক শক্তি এবং মহানের আকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ভূত আধ্যাত্মিক শক্তি৷ প্রো. বি.এন. ভট্টাচার্য তার সমাপনী বত্তৃণতায় অন্যান্য ভারতীয় দর্শনের সাথে ব্রহ্মার ধারণা তুলে ধরেন৷

শীর্ষ আদালতের রায়ে উপাচার্য নিয়োগের জট খুলতে চলেছে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৮ই জুলাই শীর্ষ আদালতের রায়ে রাজ্যের ৩৬ টা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার‌্য নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ ১১ মাস ধরে চলতে থাকা মামলার নিষ্পত্তি হল৷ উপাচার্য নিয়োগে মুখ্যমন্ত্রীর মতামতকেই গুরুত্ব দিতে হবে এমনটাই শীর্ষ আদালতের রায় বলা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীকে এই কাজে সাহায্য করতে ৬৭ জনের একটি সার্চ-কাম সিলেকশন কমিটি শীর্ষ আদালত গড়ে দিয়েছে৷ এই কমিটির শীর্ষে আছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত৷ আগামী তিন মাসের মধ্যে সার্চ সিলেকশন কমিটিকে কাজ শেষ করতে হবে৷

শীর্ষ আদালতের রায় বলা হয়েছে সার্চ কমিটি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে কোন তালিকা পাঠাবে না৷ এমনকি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ও সেই তালিকা যাবে না৷ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই তালিকা যাবে৷ সেখান থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের বেছে নেবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই তালিকা পাঠিয়ে দেয়া হবে রাজভবনে৷ মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ মেনে সেই তালিকায় দু সপ্তাহের মধ্যে সিলমোহর দিতে হবে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে৷

আচার্য সীলমোহর দেয়ার পরেই রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে৷ তবে সার্চ কমিটির তালিকার কোন নামে যদি আচার্য বা মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি থাকে তা কারণ সহ জানাতে হবে৷ কোন নাম নিয়ে আচার্য মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে মতবিরোধ হলে শীর্ষ আদালতে চূড়ান্ত নাম ঠিক করবে৷ শীর্ষ আদালতের রায়ে খুশি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী৷