আজ আমরা অর্থাৎ এই পৃথিবীর অসহায় মানুষেরা কোথায় বাস করছি? সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের কথা ও সন্ত্রাস নির্মূল করার কথা প্রতিটি দেশই বলছে৷ কিন্তু এই গ্রহ থেকে তো সন্ত্রাস কমছে না বরং বেড়েই চলেছে৷ আমাদের ভারতের দক্ষিণে অবস্থিত অতিক্ষুদ্র দ্বীপপুঞ্জ শ্রীলঙ্কায় দেখা গেল গত রবিবার রাজধানী কলম্বোয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে প্রায় ২৫০ জন নিরীহ মানুষ মারা যান৷ তাদের তো কোন অপরাধ ছিল না৷ এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ যারা ঘটিয়েছে তারা কেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটালো! তার তো কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না৷ এ কাজ যারা করে চলেছে তারা কিন্তু সেই একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের একাংশ৷ শ্রীলঙ্কার পুলিশ বলছে যে জামাত নামধারি ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এন.টি.জে) নামে একটি সংঘটন এই কাজ করে চলেছে৷ এদের মধ্যে একজনের নাম মহম্মদ আজম, যে খাবারের লাইনে দঁাঁড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়, তাতে যে খাবার দিচ্ছিল সেই কর্মী মারা যায়৷ এইভাবে শহরের সংখ্যায় দু’তিনটি হোটেল ও গির্র্জয় বিস্ফোরণ ঘটায় এই জঙ্গী সংঘটন৷ যারা এর আগে শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধমূর্তি ধবংস করে৷ রাজধানীর প্রধান বিমানবন্দরের কাছে উদ্ধার হয় পাইপ বোমা৷ এটি নাকি এদেশেই তৈরী করা হয়৷ এইভাবে নারকীয় কাণ্ড কেন ঘটানো হল এটাই বড় প্রশ্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে৷ বিদেশের অনেক মানুষ এতে নিহত হয়েছেন৷ সারা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশ এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে৷ গির্র্জগুলিতে কেন হামলা করা হচ্ছে? এটাতো একটি বড় প্রশ্ণ৷ এইধরণের সন্ত্রাসবাদীরা চায় না যে, দেশে খ্রীষ্টান ধর্র্ম্বলম্বীরা বাস করুক৷ শুধু কি জামাত অর্থাৎ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাই বাস করবে, এ কেমন কথা?
আজ সারা পৃথিবীতে নানা সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করছে শত শত বৎসর ধরে৷ পৃথিবী হয়েছে সারা পৃথিবীর মানুষের বাস৷ সভ্যতার বিকাশে ও বিজ্ঞানের উন্নতিতে আজ পৃথিবীতো একটি মানুষের সমাজে বৃহত্তম পরিবার৷ অত্যন্ত দুঃখের কথা, সব দেশই বলছে যে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে এদের উৎপাতটা বেড়েই চলেছে৷ জঘন্য সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে সৃষ্ট কুসংস্কার ও অজ্ঞানতা থেকে সৃষ্ট হিংসা ও বিদ্বেষ জন্ম দিচ্ছে এই ধরণের হিংস্র জঙ্গী সন্ত্রাসের৷ ভারতে এধরনের হিংস্র জঙ্গীদের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কোন হিসাবই নেই৷ তাই ভারতের জনগণ শ্রীলঙ্কার মত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ক্ষতিতে অত্যন্ত বেদনাহত৷ ভারতের সরকার শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সর্বদাই আছে ও অত্যন্ত সজাগ এই ব্যাপারে৷
অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতেই হয় এই সব কাজ যারা করেছে ও যাদের ইন্ধনে এইসব কাজ হচ্ছে, পৃথিবীর প্রতিটি দেশে সৎ, নীতিবাদী, জনগণ সচেতন হয়ে তাদের সৎ পথে আনার চেষ্টা করতেই হবে৷ নোতুবা এতে মানব সভ্যতা ধবংস হয়ে যাবে৷ অত্যন্ত লজ্জার কথা, এদের যে কোন দেশ মদত দিচ্ছে সেটা মনে হয় সব রাষ্ট্রের জনগণ জানতে পারছে ৷ সেই দেশগুলিকে সব দিক থেকে বুঝিয়ে দিতে হবে৷ এই হিংস্র পথ মানবতা বিরোধী পথ৷ তাদের সঙ্গে অবশ্যই কিছুটা আন্তর্জাতিক স্তরে কঠোর হতে হবেই৷ শ্রীলঙ্কার মতো ছোট রাষ্ট্রে এইধরণের নারকীয় কাজ তারা করেই চলেছে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে যাতে শ্রীলঙ্কার সরকার বাধ্য হয় তাদের দিকে যেতে৷ এটা একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বলেই মনে হয়, হিংস্র জমাত-দের দাপাদাপিটা এশিয়ায় বেড়েই চলেছে৷ তাই এশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হয়েই এদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে৷
- Log in to post comments