সম্পাদকীয়

জিডিপি নয় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিই উন্নয়ণের মাপকাঠি৷

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

সম্প্রতি একটি  বহুল প্রচলিত দৈনিকে প্রকাশিত একটি সংবাদে দেখা গেল, ২০১৮ সালের বিশ্বের উন্নয়ণ সূচকে ভারতের অবস্থান ১৩০ তম স্থানে৷ ১৮৯ টি দেশের উন্নয়ন সূচক তুলনামূলকভাবে আলোচনা করতে গিয়ে এই চিত্র বেরিয়ে এসেছে৷

অবাক হওয়ার কথা বটে! ভারতের  মন্ত্রী মহোদায়রা তো ভারতের উন্নয়নের ঢক্কানিনাদ তুলে দেশ মাতিয়ে তুলছেন৷ দাবী করছেন, ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে৷ সেখানে ভারতের এই চিত্র--- কী করে সম্ভব! আর একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের ‘হ্যাপিনেস ইনডেক্স’-এর চিত্রে গোটা বিশ্বে সুখের  মাপকাঠিতে ভারতেরস্থান ১৪০ নম্বরে৷

আশার আলো

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

আজকের সম্পাদকীয় লিখতে গিয়ে প্রথমেই আগের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করছি৷ ১৯৮২ সালে ২৫শে মার্চ হাওড়া জেলার রামরাজাতলায় আনন্দমার্গের এক ধর্ম মহাসম্মেলন হচ্ছে ৷ তাতে মার্গগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী  প্রবচন দেবেন৷ হাজার  হাজার আনন্দমার্গীর সমাবেশ হয়েছে৷ প্যান্ডেলের বাইরেও আনন্দমার্গের পাবলিকেশনের বইয়ের দোকান৷ লোকে ভীড় করে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর আধ্যাত্মিক দর্শন, সমাজদর্শন, ‘প্রাউট’, ভাষাতত্ত্ব, ব্যাকারণ, প্রভাতসঙ্গীত, গল্প, নাটক, শিশুসাহিত্য, যৌগিক চিকিৎসা, দ্রব্যগুণ  প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের বই দেখছেন --- কিনছেন৷ আচার্য ত্র্যম্বকেশরানন্দজী ও অন্যান্য কয়েকজন আনন্দমার্গী আগ্রহী মানুষজনের সঙ্গে  ক

শারদোৎসব ও শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর নববিধান

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

বর্র্ষর বিদায় ৷ শীত এখনও আসেনি৷ আকাশে  শাদা মেঘের খেলা৷ নদীতীরে কাশের মেলা৷ বঙ্গ প্রকৃতির এমনি মনোরম পরিবেশ স্বাভাবিকভাবে উৎসবেরই পরিবেশ৷ তাই শারদোৎসব বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব৷ আর বাঙলায় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করেই শারদোৎসবের জোয়ার৷ পৌরাণিক কাহিনী আধারিত দুর্গাপূজা ধর্মীয় অনুষ্ঠান৷ তবে বর্তমানে ধর্মের মূল সুরের সঙ্গে এর সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি৷ দুর্গাপূজায় বর্তমানে মঞ্চ ও মূর্ত্তি গড়ার ব্যাপারে চরম প্রতিযোগিতা চলে৷ কেউ চকোলেট দিয়ে, কেউ বিসুকট দিয়ে, কেউ ভাঁড় দিয়ে, কেউ আখের ছিবড়া দিয়ে, এমনি নানান্ উদ্ভট উদ্ভট উপাদান দিয়ে মঞ্চ ও মূর্ত্তি গড়ার  প্রতিযোগিতা চলে৷ কে কত বড় ঠাকুর গড়েছে, কে কোন্ মন

দুর্গোৎসব ঃ ইতিহাস ও তাৎপর্য

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

বাঙ্লায় শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রবর্ত্তনের ইতিহাস খুঁজলে আমরা পাই, পাঠান আমলের গোড়ার দিকে উত্তর বাঙ্লার তাহেরপুরের রাজা কংসনারায়ণ রায় একবার তাঁর মন্ত্রী, পুরোহিত তথা সভাসদ্দের ডেকে বললেন, ‘‘আমি রাজসূয় বা অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে চাই৷ লোকে জানুক আমার ধন–ঐশ্বর্য কত৷ আমি সেই সঙ্গে দান–ধ্যানও করতে চাই৷’’ তখন পণ্ডিতরা অনেক ভাবনা–চিন্তা করে বললেন, ‘‘মহারাজ, এই কলিযুগে তো রাজসূয় বা অশ্বমেধ যজ্ঞ করা যায় না৷ আপনি বরং জাঁকজমক–সহকারে মার্কণ্ডেয় পুরাণ বর্ণিত দুর্গাপূজা করুন৷ তাতে আপনার নাম–যশ খুব হবে৷’’

আলোর পাশে অন্ধকার

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

মহালয়া থেকে শারদোৎসবের সূচনা হয়ে গেল৷ শারদোৎসব বাঙালী সমাজের সবচেয়ে বড় উৎসব৷ উৎসব কথাটির অর্থ হ’ল যার মাধ্যমে সবাই প্রাত্যহিক একঘেয়েমি কাটিয়ে আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে যেন নবজন্ম লাভ করে৷ শারদোৎসব সেদিক থেকে বাঙালীর সবচেয়ে বড় উৎসব অবশ্যই৷ সারা পৃথিবীর যেখানে বাঙালী থাকে সেখানেই শারদোৎসবের ব্যবস্থা৷ বাঙালীর শারদোৎসবের প্রধান মাধ্যম বর্তমানে দুর্গাপূজো৷ মহালয়ার ভোরে চণ্ডীপাঠ থেকেই উৎসবের সূচনা হয়ে যায়৷ দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বিশাল বিশাল কোটি কোটি টাকার বাজেটের প্যাণ্ডেল সবার চোখ ধঁধিয়ে দেয়৷ পূজোটাই অপ্রধান হয়ে যায়, প্রধান হয়ে যায় প্যাণ্ডেল আর অন্যান্য আড়ম্বর৷ হুজুগে বাঙালী মাতোয়ারা হয়ে ওঠে দুর্গাপূজ

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধুন্ধুমার  কাণ্ড  প্রসঙ্গে

যাদবপুর  বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৯শে সেপ্ঢেম্বর  কেন্দ্রীয় মন্ত্রী  বাবুল সুপ্রিয়ের কর্মসূচীকে ঘিরে  যে ধুন্ধুমার কাণ্ড  ঘটে গেল তা মোটেই কাম্য নয়৷ একটি শিক্ষাক্ষেত্রে  এধরণের  ঘটনা প্রমাণ  করে আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা কোথায়  দাঁড়িয়েছে ৷  পারস্পরিক সহিষ্ণুতা, নিয়মনীতি, শৃঙ্খলার লেশমাত্র দেখা গেল না৷ কোন্ গোষ্ঠী কোন  দল বা কে  কতখানি  এজন্যে দায়ী বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বিশ্লেষণে পণ্ডশ্রম  না করে, সোজাসুজি বলা চলে দায়ী সংকীর্ণ দলীয়  রাজনীতি৷  যার পুরোধারা  শিক্ষাক্ষেত্রকে নিজেদের  ক্যাডার তৈরীর আখড়া বানিয়ে ফেলেছে৷ আর মাঝখান থেকে শিক্ষাব্যবস্থার সর্বনাশ ডেকে এনেছে৷

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য - এটাই বিশ্বপ্রকৃতির নিয়ম

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘বৈচিত্র্যং প্রাকৃত ধর্মঃ সমানং ন ভবিষ্যতি৷’’ বৈচিত্রই প্রকৃতির ধর্ম৷ সৃষ্ট জগতের কোনও দুটি বস্তু হুবহু এক নয়৷ দু’টি মন এক নয়, দুটি অণু বা পরমাণুও এক নয়৷ এই বৈচিত্র্যই প্রকৃতির স্বভাব৷ যদি কেউ সবকিছুকে সমান করতে চায় সেক্ষেত্রে প্রাকৃত ধর্মের বিরোধিতা করায় অবশ্যই ব্যর্থ হবে৷ সব কিছু সমান কেবল প্রকৃতির অব্যক্ত অবস্থায়৷ তাই যারা সব কিছুকে সমান করার কথা ভাবে, তারা সব কিছুকেই ধবংস করার কথা ভাবে৷ .....সবাইকে যেমন এক ছাঁচে ঢালা যাবে না, তেমনি বৈচিত্র্যের ধূয়ো তুলে কেউ যাতে শোষণ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷ বৈচিত্র্য স

প্রভাত সঙ্গীত---সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অগ্রদূত

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

আজকে সারা দেশজুড়ে, শুধু দেশ নয়, সমগ্র মানবসমাজ জুড়েই দেখা দিয়েছে এক ভয়ঙ্কর সাংস্কৃতিক অবক্ষয়৷ সংস্কৃতি কী?

রাষ্ট্রহীন নাগরিক---অমানবিক রাষ্ট্র

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

গিলোটিন, গ্যাস চেম্বার নরহত্যার নানা নৃশংস পদ্ধতি ইতিহাসে উল্লেখ আছে৷ কিন্তু মানুষকে এমন তিলে তিলে দগ্ধে দগ্ধে মারা এও তো কম নৃশংস নয়৷ কার দোষ আর কে বলি হচ্ছে! সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতার চেয়ে এ কম কীসে? অসহায় মানুষগুলোর কি দোষ! দোষ যদি কারো হয় সে তো রাষ্ট্রের কর্ণধারদের৷ ক্ষমতার লিপ্সা, সাম্প্রদায়িক জিঘাংসা, অপরিণামদর্শী দিশাহীন নেতৃত্ব, বিভেদ, সংঘাত আর দায়ী দেশভাগ৷ তবু সেই নেতৃত্বকে কোন জবাব দিতে হয়নি৷ কোনও প্রমাণ দাখিল করতে হয়নি৷ নিস্ব হয়ে আদালতের দুয়ারে গিয়ে দাঁড়াতে হয়নি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায়৷

পটোলের উপকারিতা

পটোল একটি সুস্বাদু, নির্দোষ সব্জী ও সর্বরোগে সমপথ্য৷ বিশেষ করে অর্শ, আমাশয়, ক্ষহুমূত্র ও অম্লরোগে প্রাত্যহিক ভোজন তালিকায় পটোলের তরকারী সুপথ্য৷ (২) পটোলের লতার ডগার অংশকে পলতা ক্ষলে৷ পলতা একটি তিক্ত ভোজ্য ও ঔষধীয় গুণে পরিপূর্ণ৷ পলতা লিবার তথা যকৃতের পক্ষে উপকারী, এ রক্ত–পরিষ্কারক, রক্ত–ক্ষর্দ্ধক, ক্ষুধা–ক্ষর্দ্ধক ও নিদ্রাহীনতার ঔষধ৷ প্রমেহ (গণোরিয়া), উপদংশ (সিফিলিসগ্গ, চর্মরোগে, কুষ্ঠে ও ক্ষহুমূত্র রোগে পলতার তরকারী আবশ্যিক ভোজন৷