অশোক

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

অশোক একটি ভারতীয় প্রজাতির (Indica) গাছ৷ অত্যুষ্ণ বা অতি শীতল অঞ্চল বাদে ভারতের সর্বত্রই অশোক গাছ জন্মায়৷ কেউ কেউ দেবদারু (ঢ়েউ খেলানো পাতা) গাছকে ভুল করে অশোক বলে থাকেন৷ না, দেবদারু ও অশোক এক গাছ নয়৷ দেবদারু (Indian Pine) পাইন বর্গীয় গাছ, অশোক তা নয়৷ অশোক ফুল অধিকাংশ ক্ষেত্রে লালচে রঙের৷ কিন্তু শাদা, সোণালী ও হলদে রঙের অশোক ফুলও হয় যদিও তারা দুষ্প্রাপ্য৷

অশোক ফুল, ছাল ও মূল নানান ধরনের ঔষধ প্রস্তুতিতে লাগে৷ বিশেষ করে বিভিন্ন স্ত্রী–ব্যাধিতে অশোকের ঔষধীয় গুণ সর্বজনস্বীকৃত৷ অশোকাসব, অশোকারিষ্ট, অশোকক্ষীর প্রভৃতি ঔষধগুলি এই অশোক থেকেই প্রস্তুত হয়৷

সূতিকা রোগে অশোকাসব ঃ গর্ভবতী নারী এক বল্কা ঙ্মএকবার ওথলানোৰ গো–দুগ্ধের সঙ্গে অশোকাসব ব্যবহার করলে প্রসবকালীন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কমে যায়৷

সূতিকা রোগে দ্রাক্ষাসব ঃ মেয়েদের সূতিকা রোগে এক বল্কা ছাগ–দুগ্ধের সঙ্গে দশ ফোঁটা দ্রাক্ষাসব ব্যবহার করলে তাঁরা অল্প সময়ে শক্তি ফিরে পাবেন৷

প্রসূতির মৃত্যুকালীন অবস্থায় দ্রাক্ষারিষ্ট ঃ প্রসূতির মৃত্যুকালীন অবস্থা এসে গেলে দ্রাক্ষারিষ্টের সঙ্গে গুড়ুচির চীনী পান করালে মৃত্যুর সম্ভাবনা কাটলেও কেটে যেতে পারে৷ দ্রাক্ষারিষ্ট হাতের কাছে না পেলে মৃতসঞ্জীবনী সুরাতেও কিছুটা কাজ দেয়৷

ৰাধক রোগে অশোক ক্ষীর ঃ ১০/১২টি বোঁটা ছাড়ানো অশোক ফুল, আধ সের দুধ ও চার সের জলের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে, দেড় পোয়া থাকতে নাৰিয়ে, তিন দিন সেব্য৷ এরই নাম অশোক ক্ষীর৷

ঋতুরোগে অশোক ক্ষীর ঃ অশোক ক্ষীর সমস্ত ঋতুরোগে ভাল ফল দেয়৷

নারীর অশোক ষষ্ঠী ও অশোকাষ্টমী কৃত্য ঃ অশোকষষ্ঠীতে ঋতুপ্রাপ্তা প্রত্যেক নারীই একটা পাকা কলার মধ্যে অথবা জল বা দুধের সঙ্গে, ছয়টি মুগ বা মাষকলায় ও ছয়টি অশোক ফুল বা স্ফুটনোন্মুখ কুঁড়ি সব এক গ্রাসে গিলে খাবে৷ অনুরূপ অশোকাষ্টমী তিথিতেও আটটি মুগ বা মাষকলায় ও আটটি অশোক ফুল বা কুঁড়ি ব্যবহার করবে৷

সধবা ও বিধবা নারীরাও অশোকষষ্ঠী ও অশোকাষ্টমী পালন করবে৷ অন্যান্য ষষ্ঠী তিথিতেও ভাত রুটির পরিবর্ত্তে দিনের বেলায় ফলমূল খেয়ে থাকবে ও রাত্রে ভাত জাতীয় জিনিস খাবে না৷