চুল চামড়ার নীচ থেকে ঠেলে ওঠে ও সেই ভাবে বাড়ে৷ চুলের শেষাংশ বাড়ে না৷ কাঁচা হলুদ–বাটা মাথায় মেখে স্নান করে, মাথা মুছে নিয়ে, তারপর শুকনো গামছা মাথায় ১৫/২০ মিনিট চেপে বেঁধে রাখলে চুল মজবুত হয়, চুলপড়া বন্ধ হয় চুল একটু ঢেউ খেলানো বা কোঁকড়ানো হয়৷
উকুনের উপদ্রব ঃ
বড় উকুনকে ড্যাঙর বলে, উকুনের ডিমকে বলে নিকি৷ ড্যাঙর উকুনেরা চুলের ভেতরে চলে বেড়ায়৷ চুলের গোড়ার দিককার স্নেহজাতীয় বস্তু (চুলের গোড়ার চর্বি) এদের খাদ্য৷ এরা চুলের গোড়ার স্নেহজাতীয় বস্তু যখন খায় তখন মানুষ মাথায় চুলকানি অনুভব করে৷ ড্যাঙরের বেশী উৎপাত হলে মাথায় ঘা–ও হয়ে যায়৷ চুলের মধ্যে যে চলে বেড়াচ্ছে (কেশেষু অটতি) ইত্যর্থে কেশট৷
ড্যাঙ্গর উকুন দারুণ ছোঁয়াচে রোগ, মাথায় ড্যাঙ্গর উকুন থাকলে সরু দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করবে৷ আর যতদূর সম্ভব দিনে ঘুমোবে না৷ যারা চুলের যত্ন নেয় না সেই সকল নোংরা লোকেরা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এই উকুনের আক্রমণের শিকার হয়ে এসেছে৷
এই জন্যে তিনের চার ভাগ কেরোসিন তেল ও একের চার ভাগ খাঁটি নারকেল তেল মিশিয়ে রগড়ে রগড়ে ঘষে ঘষে (মাথার চুলে) লাগালে, তারপর মিনিট পনের রৌদ্রের দিকে পিঠ করে বসে থাকলে, তারপর স্নান করলে–পরপর কয়েকটা দিন এভাবে লাগালে ড্যাঙ্গর উকুন সবংশে শেষ হয়ে যাবে ও মাথার চামড়ার ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসবে৷ মধ্যে মধ্যে অথবা মাসে একবার মাথায় সাবান মেখে নিলে বা চুলে শ্যাম্পু করে নিলে ঙ্মবাজারে প্রচলিত অজস্র প্রকারের শ্যাম্পু মাথা হয়তো পরিষ্কার করে কিন্তু তার সঙ্গে মাথার চুলকেও লোপাট করতে থাকে৷ তাই বিজ্ঞানসম্মতভাবে বা আয়ুর্বেদ মতে প্রস্তুত শ্যাম্পুই খুঁজে নিয়ে ব্যবহার করা উচিত৷ক্ষ উকুনের উপদ্রব বড় একটা হবে না৷
(শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের ‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’ থেকে গৃহীত৷)