(৮) ‘ধূ’ ধাতুর অর্থ কাঁপিয়ে দেওয়া/নড়িয়ে চড়িয়ে দেওয়া/আলোড়িত করা৷ আমরা যখন কাপড় কাচি তখন কাপড়কে আলোড়িত করে নিই৷ তাই কাচা অর্থে ‘ধৃ’ ধাতু অবশ্যই চলৰে৷ ‘ধূ’+ ক্ত= ধূত ধূ+ ণিচ্ ‘ক্ত’= ধৌত৷ অবস্থা বিশেষে দুটোই চলৰে৷ ‘ধূ+ক্তিন্= ধূতি, অব---ধ+ক্ত= অবধূত৷ ‘অবধূত’-এর কয়েকটি অর্থের মধ্যে প্রধান অর্থ হল---যে মানুষ আদর্শনিষ্ঠায় সমাজজীবনে একটা আলোড়ন আনে৷ ‘ধূ+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাই তার মানে যে কেচেছে, যাকে কাচা হয়েছে৷ ‘ধূ’ ধাতুর আলোড়ন আনা অর্থ নিয়ে ‘ধূ+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাই তার মানে ‘যে আলোড়ন এনেছে’৷
(৯) ‘ধণ্’ ধাতু+ ‘ক্ত’ প্রত্যয় করে আমরা ‘ধত’ শব্দ পাই৷ ণ-যুক্ত ‘ধণ্’ ধাতু + ‘ক্ত’ প্রত্যয়ে ‘ত’-এর স্থানে ‘ট’-এর আগম হয়৷ তাই শব্দটি হয়ে দাঁড়ায় ‘ধট’৷ ‘ধট’ মানে বস্ত্র -বিশেষ করে দামী বস্ত্র৷ এই ‘ধট’ থেকে প্রাকৃতে, ধড> অর্থপ্রাকৃতে, ধড়> ৰাংলায়, ধড়া৷ মানব দেহের মস্তকের অলঙ্কারকে ৰলা হয় চূড়া আর শরীরের আৰরণীকে ৰলা হয় ধড়া৷ ‘ধট’ ৰলতে মাথা ৰাদে দেহাংশকেও ৰোঝায় যার থেকে ৰাংলায় শব্দ এসেছে ‘ধড়’৷ ‘ধটকা’ মানে কিন্তু ছেঁড়া বস্ত্র / ন্যাকড়া / ন্যাকড়াকানি/কানি৷ ধটা/ধটাকা মানে কোমরে ৰাঁধবার বস্ত্র/কটিবন্ধ (কোমর-ৰন্ধ অর্থে নয়)৷ ‘ধটিকা’-র ইংরেজী হবেapron
‘‘তোমার কটিতটের ধটী কে দিল রাঙিয়ে’’
--- রবীন্দ্রনাথ
এই ‘ধন+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘মূল্যবান বস্ত্র’৷
(১০) ‘ধন্’ ধাতুর কয়েকটি অর্থের মধ্যে প্রধান অর্থ হ’ল ধবনি তৈরী করা৷ এই ‘ধন্’+ ‘ক্ত’ করে যে ‘ধত’ শব্দ পাই তার মানে যে ধবনি তৈরী করা হয়েছে৷ ‘ধন্+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাই তার মানে উক্তি বা ‘ব্যক্তীকরণ’৷
(১১) ‘ধৃ’ ধাতুর একটি অর্থ হ’ল ধারণ করা৷ ‘ধৃ+‘মন্’ প্রত্যয় করে ‘ধর্ম’ শব্দ পাচ্ছি৷ এই ‘ধৃ’ ধাতু থেকেই ‘ধৃতি’ শব্দ এসেছে যার একটি অর্থ ধারণ করা৷ অন্য অর্থ, মনে রাখার যোগ্যতা ‘ধৃ’ ধাতু থেকেই ‘ধর্মন শব্দ পাচ্ছি যার অর্থ’ নির্বিষ বৃহদাকার সাপ-বাংলায় যাকে ‘ধামিন’ ৰলা হয়৷ তারই প্রজাতিবিশেষ গ্রাম-ৰাঙলায় ‘ঢ্যামনা’ নামে পরিচিত৷
‘ধর্মন শব্দের অর্থ হ’ল, যে স্থান ত্যাগ করতে চায় না৷ ধামিন সাপ নিজের বাসস্থান থেকে বেশী দূরে যেতে চায় না৷ তাই তার নাম ‘ধর্মন’ গাছ নড়াসরা করে না-এক জায়গাতেই থাকে৷ তাই গাছেরও একটি নাম ‘ধর্মন’৷
যে সুমহান বস্তুটি মানুষের মানবত্বকে ধারণ করে রেখেছে সেই ধর্মভিত্তিক নৈতিকতার জন্যেও ‘ধৃ+‘ড’ প্রত্যয় করে ‘ধ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়৷
ধব ঃ শ্বেতবর্ণ, বস্ত্র, স্বামী৷ ধব নেই যার এই অর্থে বিধবা বস্ত্র নেই যার এই অর্থে পুংলিঙ্গে ‘বিধব’, স্ত্রীলিঙ্গ রূপ ‘বিধবা’৷
ধবজ ঃ ‘ধবজ’ নামে চিহ্ণ, পতাকা, ইন্দ্রিয়৷
(শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)