সম্পাদকীয়

শাসকের নয়, মানুষের পরিবর্তন চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গণতন্ত্র সম্পর্কে বলা হয় জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরও দেশে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷ কারণ রাজনৈতিক দলগুলি তোয়াজ করে, লোভ দেখিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় করে৷ রাষ্ট্রের পরিচালক নির্বাচন করতে যে সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক চেতনার দরকার তা ভারতে নগণ্য সংখ্যক ভোটারদের থাকে৷

গণতন্ত্র মানে তো জনগণ, কারও চাপে নয়, স্বাধীন ভাবে বিচার–বিবেচনা করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে৷ আর সেই জনপ্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে৷ তবে তাকে বলা হবে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনগণের জন্যে–জনগণের সরকার৷ একেই বলে গণতন্ত্র৷

আন্তর্জাতিক শুভ নববর্ষ ২০২৪

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কালের নিয়মে বয়স বেড়ে গেল একটা বছর৷ বিপরীতে আয়ুক্ষয় হল একটা বছর৷ বিগত বছরে কি পেলাম কি হারালাম, সে হিসাব করলে হিসাবের ঝুলিতে শূন্যই থাকবে৷ মূল্যবান একটা বছরের অনেকটাই বাজে কাজে, বাজে কথায় কেটে গেছে৷ সে হিসাব থাক!

অর্থনৈতিক গণতন্ত্র সার্বিক উন্নয়নের একমাত্র পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আই.এম.এফ.) সতর্ক বার্র্ত জিডিপির ঘাড়ে চেপে বসবে কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণের বোঝা৷ এদিকে করোনা আবার দরজায় কড়া নাড়ছে৷ দেশের আর্থিক পরিস্থিতির বাস্তব চিত্রের সঙ্গে সরকারের দেওয়া তথ্য ও বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার প্রতিবেদনে বিস্তর ফারাক৷ সরকার যদিও ঐসব প্রতিবেদন স্বীকার করে না৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মাস দুয়েক আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন--- সরকার ঋণের বোঝা কমানোর চেষ্টা করছে৷ তার মধ্যে আই.এম.এফের সতর্কবার্র্ত কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য --- আভ্যন্তরীণ দেশীয় মুদ্রায় দেওয়া নেওয়া হয়৷ তাই বিদেশী মুদ্রার বিনিময় মূল্যের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই৷ তবে পাঁচলক্ষ কোটির অর্থনীতির রেকর্ড ছোঁয়ার আগেই

ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমানে ধর্মকে বিকৃতরূপ দিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই ধর্মের পথে চলতে হবে৷ কিন্তু নেতারা ধর্ম ও ধর্মমতের পার্থক্য বোঝেন না৷ হয়তো বুঝতে চাননা৷ ব্যষ্টি স্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে ধর্মমতকেই হাতিয়ার করে৷ যার পরিণতিতে সমাজে বিদ্বেষ বৈষম্য বাড়ছে৷ তাই ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ জানা প্রয়োজন৷ প্রকৃত ধর্মের অনুসারী কখনই মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করবে না৷

শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

শিক্ষাই মানব সমাজের মেরুদণ্ড৷ পশু জন্ম থেকেই পশু কিন্তু একটা মানুষ জন্ম থেকে মানুষের গুণাবলী অর্জন করে না, মনুষত্বের বিকাশের জন্যে, সমাজ-চেতনার বিকাশের জন্যে তাকে শিক্ষার ওপর নির্ভর করতে হয়৷ তাই প্রকৃত শিক্ষার ব্যবস্থা যদি না থাকে, শিক্ষা-ব্যবস্থা যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে যথার্থ মানুষ তৈরী হবে না, সমাজ অমানুষে ভরে যাবে, ও সমাজ-ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা, ব্যাভিচার প্রভৃতি প্রবল রূপ নেবে৷ বর্তমানে সমাজে যে ব্যাপক উচ্ছৃঙ্খলতা, সমাজ-চেতনাহীনতা, ব্যাভিচারিতা তার মূল কারণ এটাই৷ তাই বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া দেশনেতাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ আর শিক্ষার জন্যে একটা শান্ত পরিব

নোতুন নীতি নোতুন তত্ত্ব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ভারত ব্রিটিশের  কবল থেকে মুক্ত হয়৷ এরপর ভারতের রাষ্ট্রনীতি কী হবে, কীভাবে আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থা চলবে তা নির্ধারণের জন্যে ডঃ বি.আর. আম্বেদকরের নেতৃত্বে এক কমিটি তৈরী করা হয়, তার ওপর ভারতের সংবিধান  লেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ সংবিধান হল সেই নির্দেশক পুস্তক যাতে রাষ্টের আচরণ বিধি, আইন ও আদর্শ লিপিবদ্ধ থাকবে৷ যথারীতি ওই কমিটি তাদের লিখিত সংবিধান তৈরী করে ও ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়৷

রাজনৈতিক সংঘাত ও বিভাজনের রাজনীতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২০২৪ সালে দেশের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন৷ শাসক ও বিরোধী শিবিরে শুরু হয়েছে যোগ-বিয়োগের, শিবির বদলের  বিভাজনের রাজনীতি৷ কোথা কোন সম্প্রদায়ের প্রার্থী দিতে হবে, কোথায় কোন জাতের প্রার্থী দিলে জেতার সম্ভাবনা বেশী হবে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ৷ প্রার্থীর নৈতিকমান, দলীয় নীতি, আদর্শ বিচার বিশ্লেষণ করে সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচন করার শিক্ষা চেতনা দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও অর্জন করেনি৷

স্বাধীনতার ৭৬ বছরেও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল না

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ব্রিটিশরা  স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা  হস্তান্তরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের নিজস্ব সংবিধান কার্যকর করা হয় ও ভারতকে  গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা  হয়৷ এই সংবিধানে প্রতিটি  মানুষের জীবনধারণের অধিকার, সমানাধিকার, স্বাধীনতার অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকার  স্বীকৃত  হয়৷

শিক্ষার গুরুত্ব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

জাতিগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হ’ল শিক্ষা৷ আজও মানুষ ধর্মের নামে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের জালে আবদ্ধ হয়ে আছে নানা সাম্প্রদায়িক ও গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে, দেশ জুড়ে অসংখ্য আর্থিক দুর্নীতি, নারী–লাঞ্ছনা, পারিবারিক হিংসা ও হত্যা সহ অজস্র অপরাধের ঘটনা ঘটছে এ সবের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি৷ প্রতি বছর তো লক্ষ লক্ষ যুবক–যুবতী স্কুল কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ছে৷ এই স্কুল কলেজগুলিই প্রধানতঃ মানুষ তৈরীর কারখানা৷ মানুষের মধ্যে সদ্বৃত্তির মূল্যবোধের জাগরণের প্রাথমিক দায়িত্ব এই স্কুল–কলেজের৷ এই স্কুল কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমানে যে এই প্রাথমিক দায়ি

দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যার সমাধান

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পর ও সংবিধান কার্যকর করার ৭৩ বছর পর আমরা দেখছি জনগণের মৌলিক অধিকার তত্ত্বগতভাবে স্বীকৃত হলেও  কার্যতঃ ভারতের  সর্বসাধারণ এই অধিকার লাভ করতে পারেনি৷  এখনও  হাজার  হাজার কর্ষক ও কর্মহীন  মানুষ চরম হতাশায় দলে দলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে৷ এখনও পৃথিবীতে  ক্ষুধার ইনডেক্সে ভারতের স্থান  গর্ব করার জায়গায় গভীর দুঃখের ও পরিতাপের বিষয় বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, ভিয়েৎনাম, ইরাক, কম্বোডিয়া এদের অবস্থান ভারতের চেয়ে ভাল৷

অন্যদিকে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অতি ধনীদের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ট্যাক্স মুকুব করে দিয়েছে৷