প্রবন্ধ

বেদ রচনার কাল

ঋগ্বেদ অনেক প্রাচীনকালের৷ তবে জৈনযুগের বেশকিছু পূর্বের কৃষ্ণদ্বৈপায়ণ ব্যাস বেদের প্রাচীনতম অংশ, মধ্যযুগীয় অংশ ও শেষ যুগের  অংশকে তিনটি পৃথক ভাগে বিভক্ত করে দেন৷ আমি এখানে ‘জৈনযুগের বেশকিছু পূর্বেই’ ব্যবহার করলুম কারণ প্রাকৃত ভাষায় রচিত জৈনশাস্ত্রে বেদগুলির উল্লেখ রয়েছে৷ বেদগুলি রচিত সংসৃক্ত ভাষার প্রাচীন রূপে, জৈন শাস্ত্রগুলি রচিত সংসৃক্তজ প্রাকৃত ভাষায়৷ জৈনধর্মের প্রবক্তা বর্দ্ধমান মহাবীরের জন্ম হয়েছিল আজ থেকে আড়াই হাজার বছরের কিছু পূর্বে আর প্রাকৃত ভাষার জন্ম হয়েছিল আজ থেকে আনুমানিক চার হাজার বছর থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে৷ তাই বেদের যে অংশ যত অর্বাচীন রূপেই গণ্য হোক না কেন, তা অবশ্যই পাঁ

নীলকণ্ঠ দিবস

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

১২ই ফেব্রুয়ারী ‘নীলকণ্ঠ’ দিবস৷ আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন৷ আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ঘটনা৷ পটনার বাঁকিপুর সেন্ড্রাল জেলে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূত্তিজীক্ হত্যার উদ্দেশ্যে ওষুধের নামে প্রাণঘাতী মারাত্মক বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু মার্গগুরুদেব সেই বিষকে আত্মস্থ করে তাঁর প্রতিক্রিয়া নষ্ট করে দেন৷

মার্গগুরুদেব এই বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করেন৷ সরকার তাঁর দাবীতে কর্ণপাত করেনি৷ এরপর ১লা এপ্রিল (১৯৭৩) তিনি এই দাবীতে অমরণ অনশন শুরু করেন৷ এই ঐতিহাসিক অনশন চলেছিল পাঁচ বছর চার মাস দুই দিন৷

কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বাজেট অত্যন্ত হতাশাজনক

প্রভাত খাঁ

কেন্দ্রীয় সরকার ১লা ফেব্রুয়ারী লোকসভায় ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের জন্যে আয়-ব্যয়মাতৃকা (বাজেট) পেশ করেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ অর্থমন্ত্রী ভারতের কৃষি, গ্রামীণ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্যে এই াজেট পেশ করেছেন৷ গ্রামীণ ভারতের আর্থিক অবস্থা যে শোচনীয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ এই আর্থিক প্রস্তাবে কৃষির উন্নয়নের তেমন কোনও দিক্দর্শন নেই৷ তাই কর্ষকরা এতে আশ্বস্ত হতে পারেন নি৷ তাছাড়া বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের কর নীতি নির্ধারণ ব্যাপারে শহরের মধ্যবিত্তেরাও হতাশ৷ সরকার দেশের ৮ শতাংশ আর্থিক উন্নয়নের দাবী করছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের মতে এবারের বাজটে কৃষিমুখী ঘ

হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও মাইক্রোবাইটাম

সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

স্বভাব অনুযায়ী মৌমাছিদের উপযুক্ত স্থান হ’ল ফুলের ওপর অর্থাৎ পবিত্র ও সুগন্ধ পরিবেশই  হ’ল থাকার প্রিয় স্থান৷ অপরপক্ষে  মশা-মাছি এরা পচাগলা দুর্গন্ধ পরিবেশেই থাকতে ভালবাসে৷ ঠিক তেমনি পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম এদের  স্বভাব অনুযায়ী সাত্ত্বিক পরিবেশই হ’ল থাকার  প্রিয় স্থান৷ অর্থাৎ পজেটিভ মাইক্রোবাইটামেরা সাত্ত্বিক পরিবেশেই প্রভাব বিস্তার করে৷ কিন্তু নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামেরা সাত্ত্বিক পরিবেশে থাকতে পারে না৷ এই কারণেই সাত্ত্বিক মানুষ যদি সাত্ত্বিক পরিবেশে হোমোপ্যাথ ঔষধের  উপাদান বা মাদার টিংচার  থেকে হোমেপ্যাথ ঔষধ  তৈরী  করেন  তা হ’লে  ঐ ঔষধের  মধ্যে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা আকৃষ্ট হয়৷  হোমোপ্যাথ ঔষধের মধ্য

ঊণসত্তরতম প্রজাতন্ত্র দিবসে কিছু মৌলিক ভাবনা

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

২০১৮ সনের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের ৬৯-তম প্রজাতন্ত্র দিবস সমগ্র ভারতবর্ষে মহা সমারোহে পালিত হ’ল৷ ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী থেকেই স্বাধীন ভারতের শাসনকার্য সুচারুভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভারতের সংবিধান কার্য্যকর হয় ও অদ্যাবধি বহুবার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে৷ প্রজাতান্ত্রিক তথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করাই দেশের শাসকবর্গের একমাত্র লক্ষ্য৷ তাই বিধানসভা, লোকসভার সদস্যগণ, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও সকল মন্ত্রীগণ ভারতীয় সংবিধানের নামে শপথ নিয়ে জনগণকে নিরপেক্ষ ও নিঃস্বার্থভাবে সেবার অঙ্গীকার করেন কারণ গণতন্ত্রে মূল প্

নৈতিকতা

দাদাঠাকুর

ছোট্ট ভাইবোনেরা, তোমরা জেনেছ যে মানব জীবনের লক্ষ্য হ’ল ঈশ্বরকে উপলব্ধির দ্বারা আনন্দ লাভ করা৷ কিন্তু আমাদের মনের কামনা–বাসনা, লোভ–লালসা আমাদের ঈশ্বরের দিকে না নিয়ে গিয়ে আপাত সুখের জন্যে জড় ভোগের দিকে নিয়ে যায়৷ মনের এই কামনা বাসনাকে বাধা দিয়ে ভোগমুখী মনকে ঈশ্বরমুখী করা দরকার৷ তার জন্যে চাই কিছু বিধি–নিষেধ৷ যেমন, একটা চারা গাছকে গোরু–ছাগল থেকে রক্ষা করে বড় করে তুলতে গেলে তার চারপাশে বেড়া দেবার প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনি সাধকের সাধনার পথে এগিয়ে চলার জন্যে যে প্রাথমিক বেড়া বা অনুশাসনের প্রয়োজন তার নাম নীতিবাদ বা নৈতিকতা৷

একুশে ফেব্রুয়ারীর শপথ

  ডঃ গোবিন্দ সরকার

ভারতের বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ২১শে ফেব্রুয়ারী ঢাকা ও অসমের ১৯ শে মে’র শিলচরের বাংলা ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির কাছে এক স্পর্শকাতর আবেগ মথিত বিষয়৷ ঘটনাগুলির উত্থাপন ও স্মৃতি রোমান্থনে আমরা যুগগৎ স্বজন হারানোর ব্যথায় বেদনার্ত হই ও স্বজাতির মহিমাময় আত্মত্যাগে গর্ব অনুভব করি৷ এক দুটো উদ্ধৃতিতে তার প্রমাণ মেলে –

‘‘মুক্তির মন্দিরে সোপানতলে কত প্রাণ হল বলিদান

                লেখা আছে অশ্রুজলে৷

কত  বিপ্লবী  বন্ধুর রক্তে রাঙা বন্দীশালার ঐ শিকলভাঙা

                তারা কি ফিরিবে আজ

                তারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতে

প্রজাতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি পালিত হচ্ছে না

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে৷ যদিও এই স্বাধীনতাকে সার্বিক স্বাধীনতা বলা যায় না৷ বলা চলে এদিন আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করেছি৷ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আমরা পাই নি৷ ব্রিটিশ শাসকের হাত থেকে শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা ভারতীয়দের হাতে এলেও বহুজাতিক পুঁজিপতি গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক নাগপাশ থেকে ভারতের জনগণ মুক্তি লাভ করে নি৷

বাংলা আমার মাতৃভূমি আমি বাংলাকে ভালবাসি

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

গত ১৮ই জানুয়ারী ২০১৮ তারিখে অসম ভবনের সামনে আমরা বাঙালী সংঘটনের পক্ষ থেকে  বিক্ষোভ প্রর্দশনের সময় আমার  এক প্রাক্তন সহকর্মীর সঙ্গে দেখা৷ তিনি জিজ্ঞেস করলেন-কী ব্যাপার৷ আমি বললুম –“বাংলা ও বাঙালী” দুইই আজ বিপন্ন৷ অসমের ১ কোটি ৩৯ লক্ষ বাঙালীর নাগরিকত্ব সংকটের মুখে---তাই এই বিক্ষোভ ধুস৷ ওতে  কিছু হবে না বলে তিনি তাঁর গন্তব্যে চলে গেলেন৷ আমার সেই আপাদমস্তক  বাঙালী বন্ধুবরটির মত হয়তো বেশীরভাগ বাঙালীই এই ভাবনার শরিক৷ বাংলা ও বাঙালী যে সত্যই  আজ বিপন্ন এই বোধ টুকু তাদের নেই৷ বাংলাযে সব দিক থেকে বঞ্চিত শোষিত--- বাঙালীরা অত্যাচারিত উৎপীড়িত স্বভূমে পরবাসী--- এই ভাবনাগুলো কি