সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক সংঘাত ও বিভাজনের রাজনীতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২০২৪ সালে দেশের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন৷ শাসক ও বিরোধী শিবিরে শুরু হয়েছে যোগ-বিয়োগের, শিবির বদলের  বিভাজনের রাজনীতি৷ কোথা কোন সম্প্রদায়ের প্রার্থী দিতে হবে, কোথায় কোন জাতের প্রার্থী দিলে জেতার সম্ভাবনা বেশী হবে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ৷ প্রার্থীর নৈতিকমান, দলীয় নীতি, আদর্শ বিচার বিশ্লেষণ করে সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচন করার শিক্ষা চেতনা দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও অর্জন করেনি৷

স্বাধীনতার ৭৬ বছরেও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল না

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ব্রিটিশরা  স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা  হস্তান্তরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের নিজস্ব সংবিধান কার্যকর করা হয় ও ভারতকে  গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা  হয়৷ এই সংবিধানে প্রতিটি  মানুষের জীবনধারণের অধিকার, সমানাধিকার, স্বাধীনতার অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকার  স্বীকৃত  হয়৷

শিক্ষার গুরুত্ব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

জাতিগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হ’ল শিক্ষা৷ আজও মানুষ ধর্মের নামে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের জালে আবদ্ধ হয়ে আছে নানা সাম্প্রদায়িক ও গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে, দেশ জুড়ে অসংখ্য আর্থিক দুর্নীতি, নারী–লাঞ্ছনা, পারিবারিক হিংসা ও হত্যা সহ অজস্র অপরাধের ঘটনা ঘটছে এ সবের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি৷ প্রতি বছর তো লক্ষ লক্ষ যুবক–যুবতী স্কুল কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ছে৷ এই স্কুল কলেজগুলিই প্রধানতঃ মানুষ তৈরীর কারখানা৷ মানুষের মধ্যে সদ্বৃত্তির মূল্যবোধের জাগরণের প্রাথমিক দায়িত্ব এই স্কুল–কলেজের৷ এই স্কুল কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমানে যে এই প্রাথমিক দায়ি

দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যার সমাধান

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পর ও সংবিধান কার্যকর করার ৭৩ বছর পর আমরা দেখছি জনগণের মৌলিক অধিকার তত্ত্বগতভাবে স্বীকৃত হলেও  কার্যতঃ ভারতের  সর্বসাধারণ এই অধিকার লাভ করতে পারেনি৷  এখনও  হাজার  হাজার কর্ষক ও কর্মহীন  মানুষ চরম হতাশায় দলে দলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে৷ এখনও পৃথিবীতে  ক্ষুধার ইনডেক্সে ভারতের স্থান  গর্ব করার জায়গায় গভীর দুঃখের ও পরিতাপের বিষয় বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, ভিয়েৎনাম, ইরাক, কম্বোডিয়া এদের অবস্থান ভারতের চেয়ে ভাল৷

অন্যদিকে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অতি ধনীদের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ট্যাক্স মুকুব করে দিয়েছে৷

সামাজিক-অর্থনৈতিক আন্দোলন

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

অদ্ভুত এক রাজনৈতিক বৈপরিত্যে আক্রান্ত ভারতীয় রাজনীতি৷ রাজনৈতিক দলগুলোর নীতি আদর্শ বলে কিছু নেই৷ স্বাধীনতার  শুরুতে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন-সুভাষচন্দ্রের বাঙলা কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল৷ ক্রমে সেই বিষাক্ত রাজনীতি গ্রাস করেছে বাঙলাকেও৷ ভ্রাতৃঘাতী রাজনীতি বাঙালীর  উন্নত সংস্কৃতি কৃষ্টি ও সভ্যতাকে অতি নিম্নস্তরে নিয়ে গেছে৷ সাঁইবাড়ী, বিজনসেতু বগটুই -রাজনীতির দানবিক বর্বরতার সাক্ষর বহন করছে৷ তবে এসবের পিছনে আছে এক সুগভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র৷ যারশুরু ৮৪ বছর আগে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতে৷

সর্বাত্মক  মুক্তির আদর্শ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৮২ সালে ২৫শে মার্চ হাওড়া জেলার রামরাজাতলায় আনন্দমার্গের এক ধর্ম মহাসম্মেলন হচ্ছে ৷ তাতে মার্গগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী  প্রবচন দেবেন৷ হাজার  হাজার আনন্দমার্গীর সমাবেশ হয়েছে৷ প্যান্ডেলের বাইরেও আনন্দমার্গের পাবলিকেশনের বইয়ের দোকান৷ লোকে ভীড় করে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর আধ্যাত্মিক দর্শন, সমাজদর্শন, ‘প্রাউট’, ভাষাতত্ত্ব, ব্যাকারণ, প্রভাতসঙ্গীত, গল্প, নাটক, শিশুসাহিত্য, যৌগিক চিকিৎসা, দ্রব্যগুণ  প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের বই দেখছেন --- কিনছেন৷ আচার্য ত্র্যম্বকেশরানন্দজী ও অন্যান্য কয়েকজন আনন্দমার্গী আগ্রহী মানুষজনের সঙ্গে  কথাবার্র্ত বলছেন, এমন সময় একদল কলেজের ছাত্র এল৷ তারাও বিভিন্ন বই দেখছ

সম্ভবামি যুগে যুগে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যখনই সভ্যতার সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে তখন সঙ্কট থেকে মানব সমাজকে পরিত্রাণের জন্য তারকব্রহ্ম যুগত্রাতা রূপে সমাজে বারংবার আবির্ভূত হয়েছেন৷ আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বছর আগে তারকব্রহ্ম সদাশিব প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে তার দিব্যজ্যোতিতে উদ্ভাসিত করেছিলেন৷ তিনি ছিলেন মানবেতিহাসের প্রথম তারকব্রহ্ম৷ তিনি মানবসভ্যতার আদি পিতা৷ প্রচণ্ড আধ্যাত্মিক স্পন্দনের দ্বারা---সমাজচক্রে দিয়েছিলেন এক বিরাট ধাক্কা ভগবান সদাশিবের বৈবহারিক তন্ত্র-যোগ ভিত্তিক সাধনা বিজ্ঞান, বিবাহ পদ্ধতি, নৃত্য,গীত বাদ্য সমন্ধিত সঙ্গীত বিজ্ঞান চিকিৎসা বিজ্ঞান, বৈদ্যক

অর্থনৈতিক গণতন্ত্রই একমাত্র বিকল্প

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই  বিভিন্ন ভাবে কি কেন্দ্রীয় সরকার কি রাজ্য সরকার দরিদ্র্য জনসাধারণের সমস্যা সমাধানের নামে নানা ধরণের চমক দিয়ে চলেছেন৷ কিন্তু স্বাধীনতার পর ৭৭ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল আজও গরীব জনসাধারণের দুর্দশার অন্ত নেই৷ আসলে পুঁজিবাদ বা মার্কসবাদ–এদের কোনটাই দরিদ্র মানুষের যথাযথ কল্যাণ করতে পারবে না৷ আর ভারতবর্ষে না পুঁজিবাদ, না মার্কসবাদ, মিশ্র অর্থনীতির নামে বক–কচ্ছপ অবস্থা ভারতীয় অর্থনীতির৷ তাই হাল ফেরাতে দেশের অর্থনীতির নিয়ামকদের প্রাউটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া উচিত৷

ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য কাম্য

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘বৈচিত্র্যং প্রাকৃত ধর্মঃ সমানং ন ভবিষ্যতি৷’’ বৈচিত্রই প্রকৃতির ধর্ম৷ সৃষ্ট জগতের কোনও দুটি বস্তু হুবহু এক নয়৷ দু’টি মন এক নয়, দুটি অণু বা পরমাণুও এক নয়৷ এই বৈচিত্র্যই প্রকৃতির স্বভাব৷ যদি কেউ সবকিছুকে সমান করতে চায় সেক্ষেত্রে প্রাকৃত ধর্মের বিরোধিতা করায় অবশ্যই ব্যর্থ হবে৷ সব কিছু সমান কেবল প্রকৃতির অব্যক্ত অবস্থায়৷ তাই যারা সব কিছুকে সমান করার কথা ভাবে, তারা সব কিছুকেই ধবংস করার কথা ভাবে৷ .....সবাইকে যেমন এক ছাঁচে ঢালা যাবে না, তেমনি বৈচিত্র্যের ধূয়ো তুলে কেউ যাতে শোষণ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷ বৈচিত্র্য স

ভ্রান্ত দর্শনের করালগ্রাসে সমাজ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

একজন মহান দার্শনিক বলেছিলেন–‘‘কিছু সংখ্যক গুণ্ডা–বদমাস অপেক্ষা একটি ভ্রান্ত দর্শনের অনুগামীরা সমাজের অনেক বেশী ক্ষতি করে৷’’

আজ ভ্রান্ত দর্শনের যাঁতাকলে পিষ্ট বাঙলা তথা ভারতবর্ষের মানুষ৷ অর্থনীতিকে গ্রাস করেছে আত্ম স্বার্থকেন্দ্রিক পুঁজিবাদ৷ সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে গেছে পুঁজিপতি শোষকের কালো হাত৷ শিল্প সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি ফ্যাসিষ্ট শোষকের বিষাক্ত ছোবল থেকে কেউ রেহাই পায়নি৷