সম্পাদকীয়

প্রভাত সঙ্গীত ঃ তমসাবৃত নিশীথে আলোর পরশ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজ সমাজের সর্বস্তরে দেখা দিয়েছে চরম অবক্ষয়ের অমানিশা৷ অর্থনৈতিক স্তরে চলছে চরম শোষণ ও দুর্নীতি৷ ঈশ্বর সৃষ্ট এই জগতের সম্পদ যা ঈশ্বরের সন্তান সমস্ত মানুষের মিলেমিশে খেয়ে পরে বাঁচার জন্যে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জীবনের চরিতার্থতার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে, কিন্তু আজ সেই সম্পদ লুঠে পুটে খাচ্ছে সমাজের এক শ্রেণীর শোষকগোষ্ঠী৷ রাজনীতি – যা নাকি দেশ–সেবার প্রকৃষ্ট নীতি, তা হয়ে উঠেছে যেন তেন প্রকারেণ ক্ষমতা করায়ত্ত করার ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার কৌশল মাত্র৷ এখানে ‘নীতি’টা নিতান্তই গৌণ৷ শিক্ষার নামে চলেছে কেবলমাত্র অর্থ রোজগারের উপায় আয়ত্ত করার প্রশিক্ষণ, সেখানে নীতিশিক্ষা–ধ্যাত্মশিক্ কোনো নাম–ঠিকানা নেই৷ সং

সমাজ–সভ্যতা বাঁচাতে চাই আদর্শ শিক্ষা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

জাতিগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হ’ল শিক্ষা৷ বর্তমানে সমাজ যে সব ব্যাধিতে ভুগছে তার প্রধান কারণ অশিক্ষা বা ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা৷ দেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুরে স্বপ্ণদীপ কুন্ডুর মত ছেলেরা দুরগ্রাম থেকে উচ্চশিক্ষার আশায় এসে অকালে হারিয়ে যায় আদর্শহীন ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষার বলি হয়ে৷ সারা দেশ জুড়ে অসংখ্য আর্থিক দুর্নীতি, নারী–লাঞ্ছনা, পারিবারিক হিংসা ও হত্যা সহ অজস্র অপরাধের ঘটনা ঘটছে এ সবের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে শিক্ষার ব্যবস্থার ত্রুটি৷ প্রতি বছর তো লক্ষ লক্ষ যুবক–যুবতী স্কুল কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ছে৷ এই স্কুল কলেজগুলিই প্রধানতঃ মানুষ তৈরীর কারখানা

আদর্শ নেতৃত্বের প্রয়োজন

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বহু দলীয় গণতন্ত্রে নেতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ যদিও গণতন্ত্র প্রসঙ্গে বলা হতে থাকে জনগণের জন্যে-জনগণের দ্বারা জনগণের সরকার৷ সার্থক গণতন্ত্র তখনই সম্ভব যখন রাষ্ট্রের কমপক্ষে ৫১ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত ও সামাজিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সচেতন হবে৷ ভারতবর্ষে তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের একটা বড় অংশ আজও সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক বিষয়ে শুধু অসচেতন নয়, অজ্ঞ বলা চলে৷ এই অবস্থায় ভারতীয় গণতন্ত্র দলতন্ত্রে পরিণত হয়েছে৷ অর্থাৎ দলের দ্বারা, দলের জন্যে, দলের সরকার৷ আবার দল নির্ভর করে ব্যষ্টি নেতৃত্বের ওপর৷ তাই ভারতীয় গণতন্ত্রে ব্যষ্টি নেতৃত্বকে অস্বীকার করা যায় না৷ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্

সামাজিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে অর্থনীতিকে কোন দিশা দেখাতে পারেনি৷ তাঁর ভাষণ ছিল আত্মপ্রচারের বাগাড়ম্বর৷ তার কথায় না ছিল সারবত্তা, না ছিল সত্যতা৷ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সুইসব্যাঙ্কের  কালোটাকা  বছরে দুকোটি  চাকরী না এসব নিয়ে  তাঁর ভাষণে একটি কথাও বার হয়নি৷ শুধু দেশ এগিয়ে চলেছে  জিডিপির হাত ধরে৷ ‘জিডিপি’‘জিডিপি’ করে নেতা মন্ত্রীরা দেশবাসীকে চমকে দিচ্ছে৷ সাধারণ দেশবাসী জিডিপি বৃদ্ধির ঠিক মানেও বোঝেন না, তাদের শুধু এইটুকু বোঝানো হয়, দেশের অত্যন্ত  দ্রুত উন্নয়ন হবে৷ জিডিপি বৃদ্ধি মানেই তো দেশের সামগ্রিক উৎপাদন বৃদ্ধি৷ দেশের কলকারখানা বাড়বে, কৃষিজ সম্পদ বাড়বে,খনিজ সম্পদ বাড়বে, পরিষেবা

দায় কার!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি মনিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরান ও উত্তরপ্রদেশে যুবকের মুখে প্রস্রাব করে দেওয়া, দুই বালককে বোতলে প্রস্রাব ভোরে জোর করে খাওয়ানো--- এ সমাজ কোথায় চলেছে! মনুষ্য নামধারী দ্বিপদ জীবের এ কেমন আচরণ! মানব আধারে এই পাশবিকতার দায় কার? সমাজ কোন পথে চলেছে৷ এ থেকে পরিত্রাণের পথ কি?

সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার কবে প্রতিষ্ঠিত হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী দেশ শাসনের জন্যে ভারতের নিজস্ব সংবিধান প্রবর্ত্তিত হয়৷ তারপর ৭৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে৷ আজ দেশের নাগরিককে নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্যে লাইনে দাঁড়াতে হবে৷ সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক বিভাজন ও রাজনৈতিক সংঘাতে প্রতিনিয়ত পদদলিত হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার৷ পরিতাপের বিষয় এই যে শাসক দলের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদতে এগুলি হয়ে চলেছে৷ অথচ শাসক দলেরই প্রধান দায়িত্ব সংবিধানের অঙ্গীকারগুলি পালন করা৷ মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা৷

ভয়ঙ্কর ফ্যাসিষ্ট শোষনের শিকার বাঙালী জনগোষ্ঠী

মনোজ দে

মার্কস শোষণ বলতে ভেবেছিলেন - --শ্রমিক শ্রেণীকে ন্যায্য পাওনা না দিয়ে পুঁজিপতিরা যে মুনাফা লোটে সেটাই শোষণ৷ এটাও শোষণ কিন্তু এই শোষণের আগেও আরও শোষণ আছে৷ শোষণের সঠিক সংজ্ঞা একমাত্র প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকেই পাওয়া যায়৷ প্রাউট প্রবক্তার ভাষায়---একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমার মধ্যে অবস্থিত তথাকার জনগোষ্ঠীর দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশকে স্তম্ভিত করে, ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শ্রম ও মানসিক সম্পদের অবাধ লুণ্ঠনই হ’ল শোষণ৷

বিকৃত মানসিকতা বীভৎস অত্যাচার–প্রতিকারের পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

নির্ভয়াকাণ্ড থেকে মনিপুর রাজনৈতিক দল থেকে কবি সাহিত্যিক শিল্পী প্রতিবাদে মুখর সমাজের সর্বস্তরের মানুষ৷ তবু এই ধরণের বর্বরতার অবসান হচ্ছে কই বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে৷ শুধু সংখ্যায় নয়, বর্বরতা নৃশংসতার মাত্রাও৷

আসলে সমাজ থেকে এই কদর্যতা নির্মূল করার আন্তরিক প্রচেষ্টা কি প্রশাসন, কি রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবী সমাজ কারো মধ্যেই নেই৷ নেই, কারণ যুবসমাজকে এই কু–পথে নামানোর দায় এইসব কবি,সাহিত্যিক, শিল্পী ও রাজনৈতিক দাদা–দিদিরা অস্বীকার করতে পারে না৷

দার্জিলিং  জিটিএ পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা৷

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর পাহাড়ে সুভাষ ঘিসিং এর উদয়৷ তাকে শান্ত করতে তৈরী হয় গোর্খা হিল কাউন্সিল৷ কয়েক বছর চলার পর নূতন করে উদয় হলো বিমলগুরুং৷ তাকে ঠাণ্ডা করতে জিটিএ অতপরঃ! গোর্র্খদের আন্দোলন দেশদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন৷ ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের  অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ দার্জিলিং৷ আর গোর্র্খরা বিদেশী--- নেপালের লোক৷ রুজি রোজগারের ধান্দায় দার্জিলিং এসেছে৷ এতো বিদেশীদের আগ্রাসী আন্দোলন যা কোন মতেই সহ্য করা যায় না ৷ ওরা নেপালের লোক৷ নেপালে গিয়ে গোর্খাল্যান্ড করুক৷

একের আধিপত্য মানুষ মেনে নেবে না

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘বৈচিত্র্যং প্রাকৃত ধর্মঃ সমানং ন ভবিষ্যতি৷’’ বৈচিত্রই প্রকৃতির ধর্ম৷ সৃষ্ট জগতের কোনও দুটি বস্তু হুবহু এক নয়৷ দু’টি মন এক নয়, দুটি অণু বা পরমাণুও এক নয়৷ এই বৈচিত্র্যই প্রকৃতির স্বভাব৷ যদি কেউ সবকিছুকে সমান করতে চায় সেক্ষেত্রে প্রাকৃত ধর্মের বিরোধিতা করায় অবশ্যই ব্যর্থ হবে৷ সব কিছু সমান কেবল প্রকৃতির অব্যক্ত অবস্থায়৷ তাই যারা সব কিছুকে সমান করার কথা ভাবে, তারা সব কিছুকেই ধবংস করার কথা ভাবে৷ .....সবাইকে যেমন এক ছাঁচে ঢালা যাবে না, তেমনি বৈচিত্র্যের ধূয়ো তুলে কেউ যাতে শোষণ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷ বৈচিত্র্য স